অনলাইন ডেস্ক :– বিশ্ব গণমাধ্যম দিবসে এখানকার সংবাদকর্মীদের বর্তমান হালচাল নিয়ে একটি টকশো’র এখনি চরম সময়। কথায় আছে,সাংবাদিকতা ‘নো থ্যাংকস জব’। কাজের সময় কাজী,কাজ ফুরালে পাঁজী! দুঃসময়ে সুবিধাভোগীরা আড়ালে থাকেন।ছোটবেলায় মা’র মুখে অনেকবার শুনেছি,সম্পত্তির ভাগ হয়,বিদ্যার ভাগ হয়না।খাম লোভী সাংবাদিকদের মধ্যে ভাগ হয়!পেশাদার সাংবাদিকদের মধ্যে ভাগ ভাগা হয়না।
এ বাস্তবতা এখন হারেহারে টের পাই!হালে ‘খাম সাংবাদিকের’ সংখ্যা গুণে শেষ করা না গেলেও সৎ সাংবাদিক গুণে বের করা কঠিন নয়। অতি সম্প্রতি নবীনগরে স্থানীয় সাংবাদিক কালের কণ্ঠের প্রতিনিধি গৌরাঙ্গ দেবনাথ অপুকে নিয়ে বিতর্কের ঝড় বইছে। তাঁকে কোনঠাসায় এলাকার কতিপয় মানুষ একাট্টা হয়েছেন বলে প্রতিয়মান হচ্ছে। বিভিন্ন সূত্রমতে, তাঁর সাংবাদিকতা পেশায় অসততার অকাট্য প্রমান এখন পর্যন্ত পাওয়া যায় নি। নানা প্রতিকুলতার মধ্যে সমমনাদের নিয়ে একটি মোর্চার চেষ্টায় বহুদিন ধরে তিনি গলদঘর্ম। সৎ সাংবাদিকদের আকালের দিনে নবীনগরে আক্ষরিক অর্থে গৌরাঙ্গ দেবনাথ অপু’র স্বপ্ন পুরনের কোন লক্ষ্মণ দৃশ্যমান হয়নি।এই লড়াকু সাংবাদিকের দোষ, লোভ বা ভয় দেখিয়ে তাঁকে বশ করা যায় না।আরেকটা ‘দোষ’ তিনি লেগে থাকেন।নিউজের ফলোআপ করেন।এটাই অনেকের কাছে তাঁর বাড়াবাড়ি! যদিও সাংবাদিকতার মানদণ্ডের বিচারে এটাই প্রকৃত সাংবাদিকতা।
সাম্প্রতিককালে অনেকগুলো জনগুরুত্বপূর্ণ ইস্যু নিয়ে সোচ্চার হওয়াই তাঁর জন্য কাল হয়েছে বলে নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে! এক) দানবীর মহেশ চন্দ্র ভট্টাচার্যের সম্পত্তি রক্ষা আন্দোলন।২) বাইশ মৌজায় ধারাবাহিক রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে হতাহতের মামলার বিচারহীনতার সংস্কৃতি নিয়ে সোচ্চার। ৩) মৌলবাদ ও হেফাজতের উত্থানের সামনে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের নিস্ক্রিয়তা ও নেতাকর্মীদের অনৈক্য নিয়ে টকশো। ৪) করোনায় দুস্তদের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর নগদ অর্থ উপহার প্রদানের তালিকা নিয়ে অনিয়ম।৫) লাউর ফতেহপুরে আরএনটি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান কর্তৃক শারিরীক নির্যাতনের ঘটনা।৬) মুজিববর্ষে ভূমিহীনদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর গৃহনির্মাণ প্রকল্পের আওতায় জনৈক ঠিকাদার সাংবাদিকের বিরুদ্ধে গৃহনির্মাণ কাজে দুর্নীতির সংবাদ পরিবেশন।৭)মাদকসহ দুই সংবাদকর্মী গ্রেফতার ঘটনার সংবাদ পরিবেশন ইত্যাদি পেশাগত দায়িত্ব পালন উল্লেখযোগ্য ঘটনা।এসব চাঞ্চল্যকর ঘটনা নিয়ে ‘নিউজ২৪ বিডি’ ও স্থানীয় ‘নবিনগরের কথার’ উদ্যোগে একাধিক লাইভ টকশোতে গৌরাঙ্গ দেবনাথ অপুর সক্রিয় ভূমিকার জেরে কালের কণ্ঠের উপজেলা প্রতিনিধি গৌরাঙ্গ দেবনাথ অপু অনেকের বিরাগভাজন হয়েছেন বলে তিনি জানান।
গত ২৫ এপ্রিল রাত ১০ টার দিকেগৌরাঙ্গ দেবনাথ অপুর বাড়ীতে গিয়ে একদল চিহ্নিত সন্ত্রাসী হাতপা কেঁটে দেয়ার হুমকি ও গালিগালাজ করার ঘটনায় নবীনগর থানায় জিডি করেন ভুক্তভোগী সাংবাদিক গৌরাঙ্গ দেবনাথ অপু। অভিযোগ আছে,হামলাকারী হুমকিদাতারা সংসদসদস্য এবাদুল করিম বুলবুলের অনুসারী।
নিন্দনীয় এ ঘটনার পর নবীনগর বা ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সাংবাদিকদের কোন সংগঠনের পক্ষ থেকে প্রতিবাদ দূরের কথা,মূলধারার মিডিয়ায় সংবাদও পরিবেশন করা হয়নি।এজন্য সচেতন মহল বিস্মিত। তবে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিবাদের ঝড়ের মুখে স্থানীয় সংসদ সদস্য,পুলিশ সুপার,জেলা প্রশাসক দুঃখপ্রকাশ করে জড়িতদের গ্রেফতারের আশ্বাস দেন।কিন্তু শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হননি। অভিযোগে প্রকাশ,সাংবাদিক গৌরাঙ্গ দেবনাথ অপুর সঞ্চালনায় গত ২৩ এপ্রিল রাতে ফেসবুকে লাইভে টকশোতে স্থানীয় আওয়ামী লীগের অন্তঃকলহ ও অনৈক্য প্রসঙ্গে আলোচনায় অংশগ্রহণ করে আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের দুই নেতা জ্বালাময়ী বক্তব্য রাখেন।প্রতিপক্ষের অনুসারীরা এতে ক্ষিপ্ত হয়ে গৌরাঙ্গ দেবনাথ অপুর বাড়িতে গিয়ে হুমকি দেন বলে জিডিতে অভিযোগ করেন গৌরাঙ্গ দেবনাথ অপু।
বিস্ময়েয় ব্যাপার হলো, সেই টকশোতে অংশগ্রহণকারী নেতা বা ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মূলধারার সাংবাদিকেদরও কেউ হামলাকারীদের বিরুদ্ধে নিন্দা বা দৃশ্যমান প্রতিবাদ জানাননি বা সোচ্চার না হওয়ায় অনেকে ক্ষোভ জানিয়েছেন। এখানেই শেষ নয়,হুমকিদাতারাই গতকাল ২ মে প্রভাবশালী জৈনৈক আওয়ামী লীগ নেতার নেতৃত্বে সাংবাদিক গৌরাঙ্গ দেবনাথ অপুর বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ এনে উল্টো সংবাদ সম্মেলন করেন।
সর্বশেষ,বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস উপলক্ষে গতকাল রাতে সংবাদকর্মী অভিজিৎ বনিকের সঞ্চালনায় এক টকশোতে অংশ নিয়ে অদ্ভুত সব প্রশ্নের জালে নাস্তানাবুদের হতে দেখা যায় গৌরাঙ্গ দেবনাথ অপুকে। লাইভ চলাকালে অনেকের প্রশ্ন ছিল এরকম;*গৌরাঙ্গ দেবনাথ অপুর পরলোকগত বাবা গামছা লুঙ্গি বেঁচতেন।* দুই তলা বাড়ি নির্মাণে তাঁর টাকার উৎস কী?* তাঁর বিরুদ্ধে ঝাড়ু মিছিল কেন?* এতো সাংবাদিক থাকতে তাঁর বিরুদ্ধে মানুষ এতো ক্ষিপ্ত কেন? * অবিভক্ত ভারতবর্ষে অন্যতম দানবীর মহেশ চন্দ্র ভট্টাচার্যের সম্পত্তি রক্ষা। * স্কুলের প্রধান শিক্ষকের গায়ে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যানের হাত তোলার বিষয়টি আওয়ামী লীগের নেতার মিমাংসা করে দিয়েছেন।তারপরও আপনি লেখালেখি? এসব ‘ছোটখাটো’ বিষয় নিয়ে আপনার এতো কী টকশো,লেখালেখি?
এদিকে টকশো’র দর্শকদের এসব প্রশ্নের মান নিয়ে অবশ্য অনেকে উষ্মা প্রকাশ করেন।পর্যবেক্ষকদের মতে,এসব প্রশ্ন সাংবাদিক গৌরাঙ্গ দেবনাথ অপুকে বিব্রত ও হেনস্তা করার নামান্তর।সাংবাদিক গৌরাঙ্গ দেবনাথ অপু অবশ্য খুব দৃঢ়ভাবে সব প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন।উল্লেখ্য,গৌরাঙ্গ দেবনাথ অপু কালের কণ্ঠের প্রতিনিধির বাইরে তিনি একটি ব্যবসাও করেন।তার সহধর্মিণী সরকার স্কুলের শিক্ষয়িত্রী। নবীনগর উপজেলা শহরেরয়েছে বাবা অগাধ সম্পত্তি।
বিষের বাঁশী/ডেস্ক / সুভাষ সাহা