অনলাইন ডেস্ক:-বাংলাদেশ কৃষিপ্রধান দেশ। এদেশের বেশির ভাগ মানুষের প্রধান জীবিকা হচ্ছে কৃষি। বাংলাদেশ কৃষিপ্রধান দেশ হলেও এক-দুই দশক আগেও আমাদের কৃষি এত উন্নত ছিল না। কিন্তু কৃষিতে আধুনিক প্রযুক্তি এবং বৈজ্ঞানিক উপায়ে চাষাবাদ করায় কৃষি অনেক এগিয়ে গেছে। কৃষিক্ষেত্রে শিক্ষিত তরুণ-যুবকরা এগিয়ে আসছেন। যার ফলে কৃষিক্ষেত্রে এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছে। আগের তুলনায় বর্তমানে দেশে কৃষিজাত পণ্যের উত্পাদন বহু গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। অতীতে শুধু শীতকালে শাকসবজি পর্যাপ্ত পাওয়া যেত আর গ্রীষ্ম এবং বর্ষাকালে তেমন শাকসবজি পাওয়া যেত না।
বর্তমানে সারা বছর ধরে পর্যাপ্ত পরিমাণে শাকসবজি পাওয়া যায়। আধুনিক এবং উন্নত পদ্ধতিতে চাষাবাদ করায় শাকসবজির উত্পাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। শীতকালে এত শাকসবজি উৎপন্ন হয় যে কৃষকরা তাদের উত্পাদিত শাকসবজি ন্যায্য মূল্যে বিক্রি করতে পারেন না। মত্স্যক্ষেত্রেও একই অবস্থা। মাছের উৎপাদন বহু গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। ডেইরি শিল্পও অনেক এগিয়ে গেছে। আমাদের দেশে কৃষিজাত পণ্যের মধ্যে মৌসুমি ফল অন্যতম। ফলের মৌসুমে আমাদের দেশে প্রচুর পরিমাণে ফল উৎপন্ন হয়।
চাষাবাদে আধুনিক প্রযুক্তি প্রয়োগের ফলে ফলের উৎপাদন বহু গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। ইদানীং আমাদের দেশে দেখা যায়, ফলের মৌসুমে আম, কাঁঠাল, আনারস, মাল্টা, লিচুসহ আরো অনেক রকমের ফল চাহিদার তুলনায় অধিক পরিমাণে উৎপন্ন হচ্ছে। ফলের মৌসুমে ফলচাষিরা তাদের উত্পাদিত পণ্য ন্যায্য মূল্যে বিক্রি করতে পারছে না। আবার বিভিন্ন জাতের ফল বিক্রি করতে না পেরে ফলগুলো পচে নষ্ট হয়ে যায়। আমাদের দেশে ফলের প্রক্রিয়াজাতকরণ কেন্দ্র এবং সংরক্ষণের ব্যবস্থা না থাকায় হাজার হাজার টন ফল পচে নষ্ট হয়ে যায়। আমাদের দেশে উৎপাদিত কৃষিজাত পণ্য এখনো পর্যন্ত ব্যাপক ভিত্তিতে বিদেশে রফতানির ব্যবস্থা হয়নি। কিছু কিছু রফতানিকারক সীমিত পর্যায়ে কৃষিজাত পণ্য বিদেশে রফতানি করে থাকেন।
আমাদের দেশে উত্পাদিত কৃষিজাত পণ্যের বিদেশে ব্যাপক চাহিদা থাকা সত্ত্বেও আমরা পর্যাপ্ত পরিমাণে রফতানি করতে পারছি না। কৃষিজাত পণ্য রফতানি করতে গিয়ে রফতানিকারকদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। তাছাড়া কৃষিজাত পণ্য বিমানে পরিবহনের ক্ষেত্রেও রয়েছে নানা জটিলতা। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ কৃষিজাত পণ্য রফতানি করে অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ হয়েছে। ভারত, থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা, চীনসহ আরো অনেক দেশ কৃষিজাত পণ্য নিয়মিত রফতানি করে থাকে।
আমাদের দেশে উত্পাদিত শাকসবজি ব্যাপক ভিত্তিতে রফতানি করা গেলে কৃষকরা আর্থিকভাবে লাভবান হতেন এবং আমাদের কৃষিও অনেক এগিয়ে যেত। শাকসবজির মতো মাছ, মুরগি, গরুর দুধ (প্রক্রিয়াজাতকৃত), গরুর মাংস রফতানি করা গেলে রফতানি আয় অনেক বেড়ে যেত। ফলের মৌসুমে বিভিন্ন জাতের ফল রফতানির উদ্যোগ নিলে ফলচাষিরা লোকসানের মুখ আর দেখতেন না। আমাদের দেশের কৃষিক্ষেত্র এখন অনেক আশার আলো দেখাচ্ছে। রফতানির ব্যাপারে যত জটিলতা আছে সেগুলো দূর করতে হবে।
বিষেরবাঁশী.কম/ডেস্ক/ব্রিজ