অনলাইন ডেস্ক :-মাঝে মাঝেই গাড়ির গ্যারেজে ঘটছে অগ্নিকাণ্ড। লকডাউনের কারণে বসে থাকা গাড়িগুলোতে লাগা আগুনে ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়িয়ে তুলছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভবনেই যেখানে অগ্নিনিরাপত্তা নেওয়ার অভ্যাস গড়ে ওঠেনি সেখানে গ্যারেজের নিরাপত্তাকে গৌণ মনে করেন গ্যারেজ মালিকরা।
মাস দুয়েক আগের কথা। দেশে তখনও চলছিল লকডাউন। ঢাকার নবাবগঞ্জের একটি বাস ডিপোতে থাকা বাসে হঠাৎ আগুন লাগে। এতে পুড়ে যায় ৯টি বাস।
রোববার (২৫ জুলাই) নবাবগঞ্জের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটে মতিঝিলের একটি গ্যারেজে। পুড়ে ছাই হয় সিল্ক লাইন ট্রাভেলস এর দুটি বাস ও একটি প্রাইভেটকার। যদিও আগুন লাগার পরই সেখান থেকে দ্রুত সিল্ক লাইন ট্রাভেলস এর অপর একটি বাস সরিয়ে নিয়ে সক্ষম হয় কতৃপক্ষ।
মধুমিতা হলের পেছনে অগ্নিকাণ্ডের খবর পাওয়ার পরই ফায়ার সার্ভিসের ছয়টি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রায় ৫০ মিনিট চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
এর আগে শনিবার (২৪ জুলাই) সন্ধ্যায় রাজধানীর কমলাপুরে বিআরটিসি ডিপোর ভেতরে একটি বাসে আগুনের ঘটনা ঘটে। শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে লাগা ওই আগুনে দুটি বিআরটিসি বাস পুড়ে যায়।
শুধু মতিঝিল, কমলাপুর আর নবাবগঞ্জ নয়, চলতি বছরের শুরুতে চট্টগ্রামে এবং কয়েক বছর আগে গাবতলীতেও ঘটে একইরকম ঘটনা।
দমকল বাহিনী বলছে, একেতো লকডাউন যে কারণে গাড়িগুলো গাদাগাদি করে পড়ে থাকে গ্যারেজে। তার উপর অগ্নিনিরাপত্তার ছিটেফোঁটাও মানা হয় না এইসব গ্যারেজে। তাই ক্ষতি হয়ে যায় কোটি কোটি টাকার সম্পদ। মতিঝিলে গ্যারেজে লাগা আগুন সিগারেটের টুকরো থেকে হতে পারে বলে মনে করেন এই কর্মকর্তা।
ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘ছোটখাটো যেসব গ্যারেজ বা প্রতিষ্ঠান আছে তারা আমাদের কাছ থেকে কোনো পরামর্শ বা ক্লিয়ারেন্স নেয় না। যদি তারা নেয় তাহলে ফায়ার সেফটির বিষয়টি সম্পর্কে তাদের ধারণা দেয়া যাবে এবং সেফটি গিয়ার থাকবে। ফলে আগুন লাগলেও দ্রুত ছড়াতে পারবে না।’
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুধু বাসের গ্যারেজে নয়, নিয়ম মানা হয় না রিক্সা বা সিএনজি অটোরিকশার গ্যারেজেও। যে কারণে মাঝেমাঝেই লাগা আগুন ভয়াবহ রূপ নেয়।
ফায়ার সার্ভিসের সাবেক মহাপরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল আলী আহমেদ খানের মতে, প্রায় সব গ্যারেজেই তেল, মবিলসহ আগুন লাগতে পারে এমন উপাদান প্রচুর পরিমাণে থাকে। কিন্তু মাঝে মাঝে দেখা যায় এসব উপাদানের ড্রাম লিকেজ থাকে বা তাদের কাজের মাঝেই পুরো গ্যারেজ জুড়েই তেল-মবিল পড়ে থাকে। ফলে কোন স্পার্ক পেলেই ওইসব উপাদান জ্বলে উঠে এবং মুহুর্তেই ভয়াবহ আকার ধারণ করে।
তাদের মতে আবাসিক আর বাণিজ্যিক ভবনে যেমন বিল্ডিং কোড অনুসরণ করতে হবে তেমনি গ্যারেজ তৈরির ক্ষেত্রেও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা উচিত।
বিষেরবাঁশী.কম/ডেস্ক/আয়েশা