মঙ্গলবার ৫ চৈত্র, ১৪৩০ ১৯ মার্চ, ২০২৪ মঙ্গলবার

কাউন্সিলর ‘টিম খোরশেদ’ এর করোনা যুদ্ধের ১ বছর

অনলাইন ডেস্ক:- পাশের ঘরে মৃত স্বামীর লাশও দেখতে যাননি স্ত্রী,এমনকি কারও পিতার লাশটি শ্মশানে দাহ করার লোকও ছিল না- ঠিক এমন সময়ে করোনার মধ্যেই মাঠে নেমেছিলেন নারায়ণগঞ্জের কাউন্সিলর মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ।

করোনা আক্রান্ত ব্যক্তিদের দাফন করাই নয়, অনেক হিন্দু ধর্মাবলম্বীর মুখাগ্নিও করেছেন এই ‘করোনা বীর’। সস্ত্রীক করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যূর দুয়ার থেকেও ফিরে এসেছেন। ঠিক ১ বছর আগে করোনা যুদ্ধের সম্মুখসারির যোদ্ধা হিসেবে মাঠে নেমেছিলেন এই কাউন্সিলর। 

করোনায় আক্রান্তদের দাফন, সৎকার, করোনাকালীন লকডাউনে ঘরে ঘরে খাদ্য বিতরণ, করোনার শুরুতে জনসচেতনতামূলক প্রচারপত্র বিতরণ, অনলাইন অফলাইনে মানুষকে ঘরে থাকতে ও সচেতন করতে নানা কার্যক্রম, হ্যান্ড স্যানিটাইজার তৈরি ও বিতরণ, বিনামূল্যে সবজি বিতরণ, ভর্তুকি মূল্যে খাদ্যসামগ্রী বিক্রি, টেলি মেডিসিন সেবা, অক্সিজেন সাপোর্ট, প্লাজমা ডোনেশনসহ নানা কার্যক্রমে তিনি সর্বত্র আলোচিত। 

এসব কাজে তিনি নেননি কোনো আর্থিক মূল্য কিংবা বিনিময়। তার এ যুদ্ধে সাহস পেয়েছে পুরো দেশ এবং একে একে এগিয়ে এসেছে অনেকেই এসব কার্যক্রমে।

এক বছর পরেও তিনি সেই কথাই বললেন। জানালেন অব্যাহত থাকবে প্রতিটি মূল্যবান জীবন রক্ষার এই লড়াই। তার এ কার্যক্রমে এখন পর্যন্ত ২০ হাজার সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ, অগণিত মাস্ক বিতরণ, শহরের বিভিন্ন স্থানে হাত ধোয়ার বেসিন স্থাপন, নিজের তৈরি ৫০ এমএলের ৬০ হাজার বোতল হ্যান্ড স্যানিটাইজার বিতরণ, ২৫০ এমএলের ১০ হাজার বোতল লিক্যুইড সাবান প্রস্তুত ও বিতরণ, ১৫৩ জন ব্যক্তির (ঢাকা, নারায়াণগঞ্জ, গাজীপুর, মুন্সীগঞ্জ, কুমিল্লা, কিশোরগঞ্জ, কক্সবাজার) দাফন-সৎকার, ৬ হাজার পরিবারের মাঝে সরকারি ত্রাণ বিতরণ, ঈদুল ফিতরে ৬ হাজার ৭শ’ পরিবারকে টিম খোরশেদের পক্ষে ঈদ উপহার বিতরণ, ১০ হাজার পরিবারকে সবজি বিতরণ (প্রতিদিন পরিবারপ্রতি ৩ কেজি), ১০ জন চিকিৎসকের সমন্বয়ে গঠিত টিমের মাধ্যমে ১১ হাজার মানুষকে টেলিমেডিসিন সেবা প্রদান (এখনো অব্যাহত আছে), ৩০ শতাংশ ভর্তুকিতে ১৫শ’ মধ্যবিত্ত পরিবারকে খাদ্যসামগ্রী প্রদান, দরিদ্র জনগোষ্ঠীর পুষ্টি চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে ৩ টাকা ও ২ টাকা হারে পরিবারপ্রতি ৬টি করে ৪০ হাজার ডিম বিতরণ, দুর্গাপূজায় ২ হাজার হিন্দু পরিবারকে টিম খোরশেদের খাদ্যসামগ্রী প্রদান, ১০৪ জন করোনা আক্রান্ত ব্যক্তিকে বিনামূল্যে প্লাজমা ডোনেশন, বিনামূল্যে ১৮৯ জনকে অক্সিজেন সাপোর্ট প্রদান, ৮৯ জনকে মডেল গ্রুপের সহায়তায় ফ্রি অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস প্রদান, করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৩৭ জনকে শিক্ষা সহায়তা প্রদান, করোনায় কর্মহীন হয়ে পড়া ২০ পরিবারকে সেলাইমেশিন প্রদান ও ১০ জন যুবককে ফুড রাইডিংয়ের জন্য বাইসাইকেল প্রদান করা হয়। 

এসব কাজ করতে গিয়ে তিনি, তার স্ত্রী এবং তার কয়েকজন টিম মেম্বার করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। তবুও যুদ্ধটা থেমে যায়নি বরং সুস্থ হয়ে নিজেরাই প্লাজমা দিয়েছেন এবং পুরোদমে আবারো কাজ করেছেন। খোরশেদ নিজেই দুইবার প্লাজমা দিয়েছেন।

এ লড়াই নিয়ে খোরশেদ জানান, লড়াইটা মানবিকতাকে টিকিয়ে রাখতে।যতদিন প্রয়োজন আমরা ততদিন মাঠে থাকব ইনশাআল্লাহ।

বিষেরবাঁশী.কম / ডেস্ক / রুপা

Categories: করোনা ভাইরাস,নারায়ণগঞ্জের খবর

Leave A Reply

Your email address will not be published.