শনিবার ৭ বৈশাখ, ১৪৩১ ২০ এপ্রিল, ২০২৪ শনিবার

নতুন সিনেমা ও বই নিয়ে হাজির আবুল হায়াত

অনলাইন ডেস্ক:- নন্দিত অভিনেতা, নাট্যকার ও নির্মাতা আবুল হায়াত। তার সমসাময়িক অনেকে শোবিজ অঙ্গন থেকে বিদায় নিলেও তিনি ব্যতিক্রম। করোনা পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক। তাই কাজ শুরু করেছেন। বলা যায় এটা তার অভিনয়ের প্রতি ভালোবাসা আর পেশাদারিত্ব মনোভাব। গুণী এই অভিনেতার কাজ দেখতে সব সময় পছন্দ করেন দর্শক। মার্চে নতুন সিনেমা ও নতুন বই নিয়ে হাজির হচ্ছেন তিনি।

করোনাকালেই তিনি শ্যুটিং করেছিলেন তৌকীর আহমেদের ‘স্ফুলিঙ্গ’ সিনেমার। সেই ছবির পোস্টার, টিজার ও গানের পর এসেছে ট্রেলারও। এতে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ, মুক্তিযুদ্ধের অগ্নিঝরা দিনগুলো ও বর্তমান তারুণ্যের মেলবন্ধন ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। ২ মিনিট ২০ সেকেন্ডের ট্রেলারটি ছিল উত্তেজনায় ভরপুর। এর আগে ‘স্ফুলিঙ্গ’র ‘তোমার নামে’ শিরোনামের গানটি প্রকাশ পায় ভালোবাসা দিবসে। মুক্তির পাকা দিনক্ষণও ঠিক হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে ছবিটি নির্মাণ করেছেন তৌকীর। তাই তার ইচ্ছা ছিল ১৭ মার্চ ছবিটি মুক্তি দেওয়ার। কিন্তু এখন ওই তারিখে ছবিটি মুক্তি পাচ্ছে না। তার দু’দিন পরই ১৯ মার্চ শুক্রবার ছবিটি প্রেক্ষাগৃহে আসবে। আবুল হায়াত বলেন, ‘ছবিটি বঙ্গবন্ধু এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও দেশত্মবোধ নিয়ে তৈরি হলেও এর প্রেক্ষাপট বর্তমান সময়। একটি ব্যান্ডদলের গায়ক সেই চেতনায় কীভাবে উদ্বুদ্ধ তা তুলে ধরা হবে। সেই চরিত্রটিতে অভিনয় করছেন শ্যামল মাওলা। তবে প্রতিটি চরিত্রই সমান গুরুত্বপূর্ণ। শিল্পীর নাম বা স্টারডম দেখে চরিত্রের গভীরতা বিচার করলে হবে না এখানে। তাছাড়া আমার ব্যক্তিগত মত হলো, স্টার ইজ এ স্টার। একজন স্টার যে ভালো অভিনেতা হবেনই তেমন কোনো কথা নেই। কিন্তু একজন ভালো অভিনেতা সবসময় তারকা। পরিচালক নিশ্চয়ই বুঝেশুনেই কাস্ট করেছেন।’

গত বছরের ডিসেম্বরে সিনেমাটির ঘোষণা দেন তৌকীর আহমেদ। এক মাসেরও কম সময়ে এর শ্যুটিং সম্পন্ন হয় এবং তিন মাসের মধ্যে মুক্তি পেতে যাচ্ছে প্রেক্ষাগৃহে। আবুল হায়াত ছাড়া আরও অভিনয় করেছেন জাকিয়া বারী মম, পরীমনি, রওনক হাসান, শ্যামল মাওলা, মামুনুর রশীদ, শহীদুল আলম সাচ্চু, হাসনাত রিপন প্রমুখ। স্বপ্নের বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের প্রযোজনায় সিনেমাটির সংগীত পরিচালনা করেছেন পিন্টু ঘোষ।

অভিনয়ের পাশাপাশি দীর্ঘদিন লেখালেখিতে নিয়মিত সময় দেন আবুল হায়াত। প্রতি বছর গ্রন্থমেলায় তার লেখা বই প্রকাশ হয়ে আসছে। সেই ধারাবাহিকতায় এবারের গ্রন্থমেলায়ও দুটি বই প্রকাশ হচ্ছে। এর মধ্যে একটি গল্পের, আরেকটি নাটকের। গল্পের বইটির নাম ‘স্বপ্নের বৃষ্টি’ এবং নাটকের বইয়ের নাম ‘দুটি মঞ্চ নাটক’। প্রকাশক প্রিয় বাংলা প্রকাশনী । এ প্রসঙ্গে আবুল হায়াত বলেন, ‘অভিনয়ের মতো লেখালেখিতেও দারুণ আনন্দ পাই। করোনাকাল শুরু হওয়ার পর থেকে আমি অনেকটা গৃহবন্দি। এ অলস অবসর সময়টা লেখালেখি করেই কাটিয়েছি । তাতে সময়টাও ভালো কেটেছে। আমার এবারের বই দুটি আশা করছি পাঠকের ভালো লাগবে।’

চার দশক ধরে অভিনয় করছেন। এই দীর্ঘ পথপরিক্রমাকে কীভাবে দেখেন? উত্তরে তিনি জানালেন, ‘দেখতে দেখতে অভিনয়ে চার দশক পার করছি; এটা ভাবতেই অবাক লাগে। মনে হয় এই তো সেদিন অভিনয় ভুবনে এসেছি। বাবার মঞ্চ নাটক দেখার শখ ছিল। তার সঙ্গে যেতাম মঞ্চ নাটক দেখতে। সেই থেকেই শুরু হয় নাটক আর অভিনয়ের প্রতি ভালোবাসা। মাত্র ১০ বছর বয়সেই সুযোগ পেয়ে যাই মঞ্চে অভিনয়ের। পড়াশোনা শেষ করে যোগ দিই ঢাকা ওয়াসার প্রকৌশলী পদে। এ পেশায় কাজ শুরু করলেও তার মূল আকর্ষণ ছিল অভিনয়ের প্রতি। শেষমেশ অভিনয়ে থিতু হই। দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে জীবনে বেশ অভিজ্ঞতাময় সফর হয়েছে বলে আমি মনে করি।’

ব্যক্তিজীবন কেমন কাটছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কাজের মধ্যেই জীবনের বেশিরভাগ সময় কেটেছে। অবসরে সন্তান, সংসার নিয়ে থাকতেই ভালো লাগে। এখন তো নাতি-নাতনিরা বড় হচ্ছে। তাদের সঙ্গে কাটানো সময় অন্যরকম আনন্দের। বড় মেয়ে (বিপাশা হায়াত) তার সন্তানদের নিয়ে এখন বিদেশে। সেখানে ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার সুবিধার জন্য থাকছে বিপাশা। অনেক দিন তাকে কাছ থেকে দেখতে না পেয়ে মনটা তো একটু খারাপ হয়ই। কিন্তু আমি তাদের সিদ্ধান্তকে সব সময় সাপোর্ট করি। ভিডিও কলে দিনে দু’বেলা কথা হয়, তাই সেভাবে শূন্যতা কাজ করে না। ছোট মেয়ের (নাতাশা হায়াত) সন্তানরাও এখন খুব কম আসে আমাদের কাছে। তাদের অনলাইনে ক্লাস হয়, তা ছাড়া স্বাস্থ্যবিধির ব্যাপারে তারা খুব সচেতন।’

বিষেরবাঁশী.কম/ ডেস্ক /রূপা

Categories: বিনোদন

Leave A Reply

Your email address will not be published.