মঙ্গলবার ৫ চৈত্র, ১৪৩০ ১৯ মার্চ, ২০২৪ মঙ্গলবার

এসিআর বদলে আসছে এপিএআর,অনুমোদন প্রধানমন্ত্রীর

অনলাইন ডেস্ক:- বদলে যাবে এসিআর (বার্ষিক গোপনীয় প্রতিবেদন)। চালু হবে অনলাইন সিস্টেমে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কর্মভিত্তিক মূল্যায়ন পদ্ধতি। যার সংক্ষিপ্ত নাম হবে ‘এপিএআর’। পুরো নাম Annual Performence Appraisal Report (APAR)। ইতিমধ্যে এ সংক্রান্ত প্রস্তাবে নীতিগত অনুমোদন দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।ইতোমধ্যে কারিগরি কমিটি কাজ শুরু করেছে।

এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কয়েকজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানিয়েছেন, একজন কর্মকর্তার দক্ষতা ও সেবার মানোন্নয়নই এর প্রধান লক্ষ্য। পাশাপাশি প্রত্যেক কর্মকর্তার মধ্যে ক্রিয়েটিভ বা সৃষ্টিশীল যত ভালো দিক বা মেধা আছে সেটিকে সামনে আনার সুযোগ দেয়া। এর ভিত্তিতে ওই কর্মকর্তার ব্যক্তিগত উৎকর্ষতা বৃদ্ধি ছাড়াও তার কাজের দ্বারা দেশ ও সমাজ অনেক বেশি উপকৃত হবে।

যিনি যে কর্মকর্তার অধীনে যতদিন কাজ করবেন, তিনি ততদিন নির্ধারিত একটি ছকে তার সার্বিক কাজসহ সব কিছুর মূল্যায়নপত্র পাবেন।প্রশাসনে সুশাসনের গুণগত দিক প্রসারিত করা ছাড়াও একজন কর্মকর্তা যাতে চাকরিতে যোগ দিয়ে একেবারে চাকরি থেকে অবসর নেয়ার দিন পর্যন্ত কাজের মূল্যায়নের ভিত্তিতে যথাযথ পুরস্কার-তিরস্কার লাভ করেন সেটি নিশ্চিত করাই এপিএআর-এর প্রধান চ্যালেঞ্জ।বিশেষ করে এটি যখন পুরোপুরি রূপ লাভ করবে এবং বিদ্যমান এসিআর পদ্ধতির পরিবর্তে এপিএআর শতভাগ বাস্তবায়িত হবে, তখন কর্মকর্তাদের নিয়োগ, বদলি ও পদোন্নতি আরও স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক ধাপে উন্নীত হবে। তখন ইচ্ছা করলেই কেউ তদবির করে কোনো পোস্টিং বাগিয়ে নিতে পারবেন না। যিনি যেই পদের জন্য নিজেকে দক্ষ করে তুলবেন তাকে স্বাভাবিকভাবে সেই পদেই পদায়ন করা হবে। এছাড়া পদোন্নতির সময়ও এপিএআর-এর মূল্যায়নপত্রকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া হবে।

সূত্র জানায়, এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ২৬ জানুয়ারি সারসংক্ষেপ পাঠানো হয়। যেখানে সরকারি কর্মচারী আইন-২০১৮-এর ১৯ ধারার ক্ষমতাবলে এটি প্রয়োগ করার কথা বলা হয়েছে। ওই ধারায় স্পষ্টভাবে বলা আছে, সরকারি কর্মচারীদের জন্য বস্তুনিষ্ঠ কর্মমূল্যায়ন ব্যবস্থা প্রবর্তন করতে হবে। এছাড়া এ বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় একাধিক কর্মশালার আয়োজন করে। গত বছর ১০ অক্টোবর মন্ত্রিপরিষদ সচিব, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব এবং বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ও সচিবদের উপস্থিতিতে প্রস্তাবিত কর্মভিত্তিক মূল্যায়ন পদ্ধতি প্রণয়ন নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়। ওই বৈঠকের পর ৬ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত প্রশাসনিক উন্নয়নসংক্রান্ত সচিব কমিটির সভায় প্রস্তাবটি উপস্থাপন করা হলে বেশকিছু নির্দেশা দিয়ে অনুমোদন দেয়া হয়। সচিব কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২০২২ সালের পহেলা জানুয়ারি থেকে এ মূল্যায়ন ব্যবস্থা পুরোপুরি বাস্তবায়ন করতে হবে।

জানা গেছে, প্রস্তাবিত এপিএআর পদ্ধতি অনলাইন সিস্টেমের মাধ্যমে পরিচালিত হবে। প্রাথমিকভাবে নবম হতে দ্বিতীয় গ্রেডের কর্মচারীদের জন্য এপিএআর প্রবর্তন করা হবে। তবে ভবিষ্যতে অন্যান্য গ্রেডের কর্মচারীদের এর আওতায় আনার সুযোগ থাকবে। বার্ষিক কর্মসম্পাদন (এপিএ) চুক্তির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এপিএআর-এর বছর গণনার ক্ষেত্রে অর্থবছরকে বিবেচনা করা হয়েছে। এছাড়া কর্মসম্পাদনে দলগত কর্মপরিবেশকে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে কর্মস্থলের এপিএর নম্বরের সঙ্গে ব্যক্তির এপিএআর-এর নম্বর সমন্বয় করে চূড়ান্ত এপিএআর নম্বর নির্ধারণ করা হবে। এক্ষেত্রে ঊর্ধ্বতন গ্রেডের কর্মচারীদের এপিএআর-এর নম্বর এপিএর নম্বর দ্বারা অধিক প্রভাবিত হবে। এপিএআর-এর পারফরম্যান্স বা কাজের মূল্যায়ন ছাড়াও ৫টি ব্যক্তিগত ও ৫টি পেশাগত বৈশিষ্ট্যের মূল্যায়ন করা হবে। যার মধ্যে সেবাগ্রহীতা ও সহকর্মীদের সঙ্গে ব্যবহার, শুদ্ধাচার, উদ্ভাবনমনস্কতা, যোগাযোগের দক্ষতা, নেতৃত্ব ও তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারে দক্ষতার বিষয়টিও অন্তর্ভুক্ত হবে। ইতোমধ্যে এপিএআর-এর অনলাইন সিস্টেম তৈরির জন্য কারিগরি চাহিদা নিরূপণে গঠিত কমিটি কাজ শুরু করেছে।

বিষেরবাঁশী.কম/ডেস্ক/ রূপা

Categories: জাতীয়

Tags:

Leave A Reply

Your email address will not be published.