অনলাইন ডেস্ক:- জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া মাদরাসা। চট্টগ্রামের বড় মাদরাসাগুলোর একটি। ১৯৫৪ সালে প্রতিষ্ঠিত এই মাদরাসায় শিক্ষার্থী আছে ছয় হাজারেরও অধিক। দাখিল আলিম শ্রেণির পাঠদানের পাশাপাশি ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে এখানে রয়েছে অনার্স সমমর্যাদার ফাজিল ও মাস্টার্স সমমর্যাদার কামিল ডিগ্রির পড়াশোনা।
শিক্ষার্থীদের জন্য নির্মিত হয়েছে আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্পন্ন একাধিক ভবন। প্রতিবছর এখানে বিভিন্ন খাতে লাখ লাখ টাকা ব্যয় করা হয়। অথচ প্রতিষ্ঠার ৬৬ বছর পেরিয়ে গেলেও এই প্রতিষ্ঠানে ভাষা শহীদদের স্মরণে স্থায়ী কিংবা অস্থায়ী কোনো শহীদ মিনার গড়ে ওঠেনি।
শুধু জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া মাদরাসা নয়। সরেজমিনে চট্টগ্রামের দারুল উলুম আলিয়া ও বায়তুশ শরফ কামিল মাদরাসাসহ একাধিক বড়-ছোট মাদরাসা ঘুরে দেখা মেলেনি কোনো শহীদ মিনার। প্রতিষ্ঠানগুলোতে শহীদ মিনার না থাকায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন হয় না বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এমপিভুক্ত এসব মাদরাসাগুলোতে শিক্ষকদের বেতন সরকারই প্রদান করে থাকে। এছাড়া ভবন নির্মাণসহ নানা খাতে সরকার খরচ করছে কোটি কোটি টাকা। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণের সরকারিভাবে নির্দেশনা থাকলেও এখানে মানা হচ্ছে না নিয়ম। ফলে এসব প্রতিষ্ঠানে দায়সারা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে পালিত হয় মহান ভাষা দিবস।
জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া মাদরাসার অধ্যক্ষ মুফতি মাওলানা সৈয়দ মুহাম্মদ অছিয়ার রহমান বলেন, ‘শহীদ মিনার না থাকলেও দোয়া এবং মিলাদ মাহফিলে ভাষা শহীদদের আত্নার মাগফিরাত কামনা করে ভাষা দিবস পালন করি। এবার আমরা সরকার এবং প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সকলের সঙ্গে সমন্বয় করে অতিদ্রুত মাদরাসায় শহীদ মিনার তৈরি করব।’
স্নাতকোত্তর সমমানের শ্রেণিতে পড়া এসব শিক্ষার্থীরা জানে না ভাষার জন্য কীভাবে শিক্ষার্থীরা পুলিশের ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করেছিলেন। সালাম-বরকতের শহীদ হওয়ার গল্পও তারা শুনেননি। কাদের আত্মত্যাগের মাধ্যমে আমরা বাংলা ভাষা পেয়েছি কিংবা পৃথিবীর একমাত্র ভাষা যা জীবন দিয়ে অর্জন করতে হয়েছে এসব বিষয়ও তাদের অজানা।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাঙালির জাতীয় জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ ভাষা দিবস। ১৯৯৯ সাল থেকে একুশ ফেব্রুয়ারি ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে স্বীকৃত। এ দিবসের সঙ্গে বাঙালির আবেগ জড়িত। এই দিবস জাতীয় জীবনে অন্যায়ের বিরুদ্ধে মাথা তোলা এবং মুক্তির প্রেরণা যোগায়।
বিষেরবাঁশী.কম / ডেস্ক / রূপা