শনিবার ৭ বৈশাখ, ১৪৩১ ২০ এপ্রিল, ২০২৪ শনিবার

‘নববর্ষ ১৪২৭ ও প্রিয়জন সমীপেষু’ বলছি, এমনই একটি গান মন ভরাবে অনায়াসে

সুভাষ সাহা: ‘আমার কাছে রাখলে তুমি, সে এক অবুঝ বায়না….’ love at first sight প্রথম দেখায় মনে ধরার মতো গানের দুই লাইন। কী অসাধারণ উক্তি!

১৩ এপ্রিল সোমবার ২০২০ সকালে আমেরিকায় নিউইয়র্ক প্রবাসী আমার প্রিয় অনুজপ্রতিম সাংবাদিক লেখক দর্পণ কবীরের ফোনে ঘুম ভাঙে। প্রথমেই কুশল বিনিময়ের পর বলল,”দাদা আমার লেখা একটি গানে কণ্ঠ দিয়েছেন ভারতীয় জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী রাঘব চট্টোপাধ্যায়।
কেমন লাগে প্রতিক্রিয়া জানাবেন।”

ম্যাসেঞ্জারে পাঠানো গানের অডিও রেকর্ডের সাথে ৫ লাইনের অনুরোধ পত্রটি নিচে ;
“গানটি শুনুন, বিষন্নতা দূর হবে..! মৃত্যুভয়, করোনা আতংক আর শ্বাসরুদ্ধকর সময়। বেঁচে থাকার মুহুর্তগুলো স্থবির হয়ে থাকবে কেন?
একটা গান শুনুন। উপভোগ করুন। গানটি ভাল লাগলে মন্তব্য করুন। শেয়ার করলে খুশি হবো। আমার লেখা গান।”-দর্পণ কবীর।।

অসুস্থ্য মনকে সুস্থ্য করতে প্রিয়জন দর্পণ কবীর ও প্রবীর কুমার সাহার বার্তা দুটি দাওয়ায়ের মতো কাজ করেছে। তবে, ভাবছি কী লিখবো? ..। সাংবাদিকতা করতে হয় করি, কর্তব্যের খাতিরে টুকটাক ছাইপাঁশ এখনো নিজের মতো করে লিখি।

তাই বলে ছোটকাল থেকেই লেখালেখিতে হাত পাকানো সব্যসাচী লেখক দর্পণ কবীরের লেখা ও গান নিয়ে দু’কলম লেখার জ্ঞান আমার খুবই সীমিত। তবু লেখার ইচ্ছেটা উসখুস করছে! একটা পুরনো বদঅভ্যেস হচ্ছে, বই হোক, আর গান হোক? শুরুতে মন না ভরলে আর এগোই না।

আজ কিন্তু পুরো গান শুনেছি। এবার জোর গলায় বলছি,অসাধারণ, অভূতপূর্ব।।
যেমন গানের কলি,তেমনি ভারতীয় জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী রাঘব চট্টোপাধ্যায়ের মাদকতা মেশানো ভরাট কণ্ঠে ক্লাসিকাল ঢংয়ের সুরে আচ্ছন্ন করার মতো একটি মিষ্টি গান।
শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বৈচিত্র্যময় সুরের খেলায় আমি মুগ্ধ।

বলা বাহুল্য, হাজার গানের মধ্যে প্রথমে দু’একটি গানই একজন শিল্পীকে কালজয়ী করতে পারে এমন উদাহরণ সঙ্গীত ভুবনে অনেক।
তেমনি একজন কালজয়ী শিল্পী জগন্ময় মিত্র, এখনো এই শিল্পীকে ভক্তরা চেনেন
‘তুমি আজ কতো দূরে,তুমি আজ কতো দূরে…’ গানের শিল্পী হিসেবে।।
দর্পণ কবীরকে বলছি,তুমি হয়তো এমন একটি গানই আজ শোনালে রাঘব চট্টোপাধ্যায়ের কণ্ঠে।
গানের প্রতিটি শব্দকে হৃদয়ে ধারন করে শিল্পী রাঘব চট্টোপাধ্যায় আপন করে দরদ দিয়ে গেয়েছেন।

সুরের মধ্যে নিজেদের ভালবাসার পুরোটা উজার করে ঢেলে দিয়েছেন সঙ্গীত পরিচালক শ্রী কুন্দল সাহা ও কণ্ঠশিল্পী রাঘব চট্টোপাধ্যায়।
মিউজিক কম্পোজিশনও হয়েছে দারুণ অনেক মানসম্মত।
এখানেই একজন গীতিকারের স্বার্থকতা।
সঙ্গীত ভুবনে একসময় কিছুটা বিচরণ থাকায় সহজেই বলতে পারি বোদ্ধা শ্রুতারা এ গান শুনে মুগ্ধ হবেন।

*অন্যরকম এক সকাল উপহার দিয়েছো দর্পণ কবীর*
চৈত্র সংক্রান্তির সকালে কথা ও সুরপ্রধান গানটি মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে শুনেছি আমার সাড়ে তিন বছরের নাতি ক্ষুদে পণ্ডিত গানপাগল কুশল সাহাকে পাশে বসিয়ে।

উল্লেখ্য, ইতোপূর্বে দর্পণ কবীরের লেখা বহু গানে কণ্ঠ দিয়েছেন দুই বাংলার বেশকয়েকজন নামীদামী কণ্ঠশিল্পী। তবে, এই প্রথম দর্পণ কবীরের কোন গান আমাকে এভাবে স্পর্শ করেছে।
এককথায় মন ভরেছে। ষোলকলা পূর্ণ করছে।

যে যাই বলুক,আজ থেকে বলবো দর্পণ কবীর আমার চোখে এই বাংলার গীতিকার গৌরিপ্রসন্ন মজুমদার ও পুলক বন্দোপধ্যায়। দীর্ঘজীবী হও দর্পণ কবীর। লেগে থাকা ও কঠিন অধ্যবাসার গুণ তোমাকে পৌঁছে দেবে অনন্য উচ্চতায় এ প্রত্যাশা আমার। তুমি পারবে।।

পেছনে ফেরা;
অনুজপ্রতিম দর্পণ কবীরের সাথে আমার ঘনিষ্ঠতা আশির দশকে। নারায়ণগঞ্জের তিন তুর্কীতরূণ সাংবাদিক জুটি তথা ত্রিরত্ন খ্যাত দর্পণ কবীর,প্রথম আলোর আসিফ হোসেন (আমেরিকা প্রবাসী) ও জনকণ্ঠের রূমন রেজা (বর্তমানে নারায়ণগঞ্জ কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ও চ্যানেল আই টিভি’র প্রতিনিধি) ছিল সেসময়কার সেকেন্ড জেনারেশনের আইকন।

আশির দশকে মাঠ চষে বেড়ানো লড়াকু সাংবাদিক এঁরা। আজন্ম সংগ্রামী দর্পণ কবীর অধুনালুপ্ত বহুল প্রচারিত আজকের কাগজ,ভোরের কাগজ সর্বশেষ বাংলাবাজার পত্রিকায় স্টাফ রিপোর্টার হিসেবে কাজ করার সময় ভাগ্য পরিবর্তনের অন্বেষণে আমেরিকায় পাড়ি জমান।
আমেরিকায়ও পেশাগত জীবনে সমানতালে সমুন্নত দর্পণ কবীর।

*অন্যরকম নতুন বাংলা নববর্ষ ১৪২৭*
করোনা’র ভয়ে টানা প্রায় একমাস লকডাউনে ঘরবন্দী,চারপাশের দুঃসংবাদ শুনতে শুনতে মন ভাল নেই।

১৩ এপ্রিল চৈত্র সংক্রান্তির সকালে ম্যাসেঞ্জারের টুং-টুং শব্দে দুইজন প্রিয় মানুষের দুটি গানের অডিও রেকর্ড খসখসে মেজাজটাকে হঠাৎই এভাবে রাঙিয়ে দেবে ভাবিনি।
অন্যজন ড্রিম হলিডে পার্কের মালিক সিআইপি প্রবীর কুমার সাহার পাঠানো আরো একটি শুভ সকাল টিপস গানের অডিও, “তুমি নির্মল করো,মঙ্গল করে মলিন মর্ম মুছায়ে…”

নিমিষেই মনের বিষন্নতা দূর হলো দু’টি গানের অডিও রেকর্ড শুনে। রাত পোহালেই নতুন বাংলা নববর্ষ ১৪২৭। নববর্ষকে বরণ করার কোন প্রস্তুতি নেই সঙ্গত কারণে।

তবে, রজনী কান্তের ঈশ্বর বন্দনার গানটি একাকী গেয়েছি গভীর রাতে নীরবে।
“তুমি নির্মল করো মঙ্গল করে, মলিন মর্ম মুছায়ে”
নতুন বাংলা নববর্ষে দেশে প্রবাসে সবাই করোনামুক্ত থাকুন এ মোর প্রার্থনা।

(দর্পণ কবীরের সেই গানের লিঙ্ক ভাল লাগলে শেয়ার করুন🌹)

https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=10222251641624213&id=1360605754

বিষেরবাঁশি.কম/ডেস্ক/মৌ দাস

Categories: খোলা বাতায়ন,সাহিত্য

Leave A Reply

Your email address will not be published.