বিষেরবাঁশী ডেস্ক: জন্মদিনের দাওয়াত দিয়ে বনানীর হোটেল রেইনট্রিতে দুই তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগে করা মামলায় আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদের ছেলে সাফাত আহমেদ ও তার দুই বন্ধুসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত। আর এই অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে আলোচিত এই মামলাটির বিচারের আনুষ্ঠানিকতা।
বৃহস্পতিবার ঢাকার দুই নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক শফিউল আজম আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে ২৪ জুলাই সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখ ধার্য করেন।
পাঁচ আসামির মধ্যে সাফাত আহমেদ ও নাঈম আশরাফের বিরুদ্ধে সরাসরি ধর্ষণের অভিযোগ আনা হয়। বাকি তিন আসামি সাদমান সাকিফ, সাফাতের গাড়িচালক বিল্লাল হোসেন ও দেহরক্ষী রহমত আলীর বিরুদ্ধে ধর্ষণে সহযোগিতা করার অভিযোগ আনা হয়। অভিযোগ গঠনের পর ২৪ জুলাই সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখ ধার্য করেন আদালত।
গত ২৮ মার্চ হোটেল রেইনট্রিতে দুই তরুণীকে সাফাতের জন্মদিনের দাওয়াত দিয়ে ধর্ষণের অভিযোগে বনানী থানায় মামলা হয় ৬ মে। এতে বলা হয়, সাফাত ও নাঈম আশরাফ তাদের ধর্ষণ করেছেন, আর বিল্লাল এর ভিডিও ধারণ করেছেন। এছাড়া রহমত আলী দুইজনের বাসায় গিয়ে তাদের হুমকি দিয়েছেন। সাদমানই দুই তরুণীকে সাফাতের হয়ে দাওয়াত করেন।
মামলার এক মাস পর ৮ জুন আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। এতে সাফাত ও নাঈমের বিরুদ্ধে ধর্ষণে অংশ নেয়া এবং বাকি তিনজনকে সহযোগী বলা হয়। এই মামলায় মোট ৪৭ জনকে সাক্ষী করেছেন তদন্ত কর্মকর্তা।
গ্রেপ্তারের পর পাঁচ আসামির মধ্যে চারজন আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। তবে এক মাসেরও বেশি সময় পর মেডিকেল পরীক্ষা হওয়ায় ধর্ষণের আলামত পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের চিকিৎসকরা।
দেশজুড়ে আলোড়ন তোলা এই মামলার তদন্ত গুরুত্বের সঙ্গে নেয় পুলিশ। ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ) মিজানুর রহমানকে এই কমিটির প্রধান করা হয়। সদস্য হিসাবে ছিলেন ডিএমপির গোয়েন্দা (নর্থ) বিভাগের উপ কমিশনার শেখ নাজমুল আলম, ডিএমপির গুলশান বিভাগের উপকমিশনার মোস্তাক আহমেদ এবং উইমেন সাপোর্ট অ্যান্ড ইনভেস্টিগেশন বিভাগের উপকমিশনার ফরিদা ইয়াসমিন।
গত ১১ মে সিলেট থেকে গ্রেপ্তার হন প্রধান আসামি সাফাত আহমেদ ও তার বন্ধু সাদমান সাকিফ। ১৫ মে সাফাতের গাড়িচালক বিল্লাল হোসেনকে রাজধানীর পুরান ঢাকার নবাবপুর রোডের ইব্রাহিম হোটেল থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-১০ এর একটি দল। একই দিন সাফাতের দেহরক্ষী রহমত আলী ওরফে আবুল কালাম আযাদকে পুরান ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ। তারও দুই দিন পর ১৭ মে মুন্সিগঞ্জের লৌহজং থেকে নাঈম আশরাফকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
বিষেরবাঁশী ডেস্ক/সংবাদদাতা/হৃদয়