শুক্রবার ১৫ চৈত্র, ১৪৩০ ২৯ মার্চ, ২০২৪ শুক্রবার

শামীম ওসমান দূর্গে হঠাৎ টর্নেডো !

বিষেরবাঁশী ডেস্ক: নারায়ণগঞ্জে শামীম ওসমান দূর্গে ভাঙনের পদধ্বনি। লিণ্ডা-সন্ধ্যা-মালা ঝরে নারায়ণগঞ্জ উত্তাল। শোনা যাচ্ছে, ‘শামীম ওসমানবিরোধী’ পালে হাওয়া দিচ্ছেন কাউসার আহমেদ পলাশসহ আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে মনোনয়ন প্রত্যাশী আপনজনরাও! এদিক থেকে অবশ্য পলাশের এখন বসন্তকাল। আগামী নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের অন্যতম মনোনয়ন প্রত্যাশী। বিশ্লেষকদের মতে, এই নেতা চাইছেন শামীম বিরোধীরা আরও বেশি বলিয়ান হয়ে উঠুক।

সূত্র বলছে, শামীম বিরোধী বলয় যত বেশি শক্তিশালী হবে এবং তার বিরোধীর সংখ্যা নিজ দলের মধ্যে যত বেশি বৃদ্ধি পাবে, তত বেশি লাভবান হবেন কাউসার আহম্মেদ পলাশ। কেননা, শামীম ওসমানকে ব্যাকফুটে ফেলতে না পারলে তিনি নির্বাচন করার যে স্বপ্ন বুঁনে যাচ্ছেন, তা অধরাই রয়ে যাবে। যার কারণে পলাশও চাইছেন শামীম বিরোধীরা ব্যাপক বলে বলিয়ান হয়ে উঠুক।

এদিকে গেল সিটি করপোরেশন নির্বাচন থেকে শামীম বিরোধী শিবির হিসেবে পরিচিত আইভী অনুগামীরা অনেকটাই নিশ্চুপ ছিলেন। কোথাও তারা শামীম বিরোধী কোনো বক্তব্য রাখেননি। বর্তমানেও তারা শামীম বিরোধী কোনো বক্তব্য রাখছেনও না। তবে সম্প্রতি যুব মহিলা লীগের জেলা ও মহানগর কমিটিকে কেন্দ্র করে শামীম বিরোধী শক্তি নড়েচড়ে বসছেন।

এর মধ্যে শামীম ওসমান শিবিরের ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. খোকন সাহাকে নিয়ে গেল কদিন ধরে বেশ গুঞ্জন ছড়াচ্ছে। বলা হচ্ছে তারা দুজনই শামীম ওসমান শিবির ত্যাগ করছেন। এমনকি তারা দুজন শামীম ওসমানের বিরোধীতাও করে যাচ্ছেন বলে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়।

এছাড়াও একসময় শামীম ওসমানের একনিষ্ঠ কর্মী হিসেবে পরিচিত মাহমুদা মালাও এখন শামীম ওসমানের বিরুদ্ধে নানা বক্তব্য প্রদান করছে। আর এর মধ্য দিয়েই বোঝা যাচ্ছে শামীম ওসমান শিবিরে ভাঙন ধরেছে। আর এই ভাঙন ঠিক কতটা দূর গড়াবে, শেষ পরিণতিই বা কী, তা অনেকেই অনুমান করতে পারছেন।

তবে শামীম ওসমানের এই বিরোধীতা বেশ ভালোভাবেই উপভোগ করছেন শ্রমিকলীগ নেতা কাউসার আহম্মেদ পলাশ। কেননা, নারায়ণগঞ্জ (ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ)-৪ আসন থেকে পলাশের মনোনয়ন প্রাপ্তির মধ্যে একমাত্র বাঁধা শামীম ওসমান।

কারো কারো মতে, যুব মহিলা লীগের কমিটি নিয়ে শামীম ওসমানের সাথে আওয়ামী লীগের যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়ে, তা আরও বেশি করে বাড়ুক, এমনটাই চাইছেন পলাশ। আর তিনি সেই দ্বন্দ্বের পালে হাওয়াও দিয়ে যাচ্ছেন। কারণ, শামীম বিরোধীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেলে পলাশের জন্য অনেক বেশি সুবিধে হবে। কেন্দ্রও শামীম ওসমানের প্রতি নাখোশ হয়ে উঠবে। আর সে সুযোগে আগামী নির্বাচনের প্রার্থীতাও তিনি বাগিয়ে নিতে পারবেন। কেননা, শামীম ওসমানের পরবর্তীতে এখানে প্রার্থী হওয়ার মত থাকলে একমাত্র পলাশই রয়েছেন। আর তিনিও দীর্ঘদিন ধরে এই আসন থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশা করে যাচ্ছেন।

শামীম ওসমান বিরোধী পালে হাওয়া দেয়ার ব্যাপারটি একদমই ভিত্তিহীন দাবি করে শ্রমিক লীগ নেতা কাউসার আহমেদ পলাশ বলেন, আনোয়ার ভাই ছাত্রলীগের রাজনীতি দিয়ে রাজনীতি শুরু করেছেন। তিনি শামীম ভাইয়েরও গুরু। আর তাঁর মত একজন নেতাকে শামীম ওসমানের বিরুদ্ধে উস্কে দেয়ার মত অত বড় নেতা আমি এখনও হইনি।

তিনি বলেন, আনোয়ার ভাই, খোকন ভাইয়ের সাথে হয়তো শামীম ভাইয়ের কোনো রকম মত পার্থক্য হতে পারে। তাই বলে এটা বড় রকমের কোনো দ্বন্দ্ব হতে পারে বলে আমার মনে হচ্ছে না। তাছাড়া খোকন ভাই শামীম ভাইয়ের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। অনেক সময় দুই বন্ধুর মধ্যে সাময়িক মতপার্থক্য হয়, মানঅভিমান হয় তা আবার পরে ঠিকও হয়ে যায়।

যুব মহিলা লীগের কমিটি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সামনে নির্বাচন। এখন দলের মধ্যে কাদা ছোড়াছুড়িটা ঠিক না। তাছাড়া সহযোগি সংগঠনগুলো গঠনের ক্ষেত্রে যদি নিয়মতান্ত্রিকভাবে কাউন্সিল করা হয়, এর মাধ্যমে যদি নেতা তৈরি করা যায়, তাহলে তৃণমূলও উজ্জীবিত হবে। দলও শক্তিশালী হবে। নয়তো বা এভাবে কাদা ছোড়াছুড়িতে দল ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আমি আশা করি জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি সাধারণ সম্পাদকসহ সিনিয়র নেতারা বসে কমিটির ব্যাপারে বিরোধ নিষ্পত্তি করতে পারলে ভালো হয়।

বিষেরবাঁশী ডেস্ক/সংবাদদাতা/হৃদয়

Categories: রাজনীতি,সারাদেশ

Leave A Reply

Your email address will not be published.