শুক্রবার ১৫ চৈত্র, ১৪৩০ ২৯ মার্চ, ২০২৪ শুক্রবার

সারাদেশে আন্তর্জাতিক গুম প্রতিরোধ দিবস পালন: ৫ বছরে গুম ৩৪৪ জন

অনলাইন ডেস্ক: গতকাল ৩০ আগস্ট আন্তর্জাতিক গুম প্রতিরোধ দিবসে সারা পৃথিবীতে গুমের শিকার ব্যক্তিদের স্মরণে আন্তর্জাতিক দিবস পালিত হয়েছে। ২০০৬ সালের ২০ ডিসেম্বর গুম হওয়া থেকে সব ব্যক্তির সুরার জন্য আন্তর্জাতিক সনদ জাতিসঙ্ঘের সাধারণ পরিষদে গৃহীত হয়। ২০১০ সালের ডিসেম্বরে ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন ফর প্রটেকশন অব অল পারসন্স অ্যাগেইনস্ট এনফোর্সড ডিসঅ্যাপিয়্যারেন্স এই আন্তর্জাতিক সনদ কার্যকর হয় তাতে ৩০ আগস্টকে আন্তর্জাতিক গুম প্রতিরোধ দিবস ঘোষণা করা হয়। ২০১১ সাল থেকে প্রতি বছর ৩০ আগস্ট গুম হওয়া মানুষগুলোকে স্মরণ এবং সেই সাথে তাদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানানোর জন্য দিবসটি পালন করা হচ্ছে বিশ্বব্যাপী। আর গুমের শিকার হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে রাজনৈতিক নেতাকর্মীর পাশাপাশি আছে সাধারণ লোকজনও। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেশে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার পরিচয়ে বিভিন্ন ব্যক্তিকে তুলে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা বন্ধ হচ্ছে না। যার ফলে গুমের হাত থেকে সুরা পাওয়ার অধিকারটি আন্তর্জাতিক আইনে পরিণত হয় এবং কাউকে গুম করে দেয়া মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ হিসেবে আন্তর্জাতিক আইনে স্বীকৃৃতি পায়। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের তথ্য মতে, লাতিন আমেরিকার দেশগুলোতে ১৯৭০ ও ৮০-র দশকে কেবল অবৈধ অস্ত্র কারবারি ও ভিন্নমতাবলম্বীরাই গুম হতো। কিন্তু বর্তমানে নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠী, মাদক কারবারি ও মানবপাচাকারীদের মধ্যেও গুমের ঘটনা দেখা যায়। এদিকে আন্তর্জাতিক গুম দিবস উপলক্ষ্যে বেসরকারি সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বিগত কয়েক বছরে গুম বা বলপূর্বক অন্তর্ধান জনমনে ব্যাপক আতঙ্ক, উদ্বেগ আর নিরাপত্তাহীনতা তৈরি করেছে। আসক কর্তৃক বিভিন্ন গণমাধ্যম থেকে সংগৃহীত তথ্য অনুযায়ি, ২০১৪ থেকে ২০১৯ (জুলাই) পর্যন্ত ৩৪৪ জন গুমের শিকার হয়েছে বলে ভুক্তভোগী পরিবার ও স্বজনরা অভিযোগ তুলেছেন। এদের মধ্যে পরবর্তী সময়ে ৪৪ জনের লাশ উদ্ধার হয়েছে, ৬০ জনকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে এবং ৩৫ জন ফেরত এসেছে। এসব ঘটনায় অধিকাংশ ক্ষেত্রে পরিবার, স্বজন বা প্রত্যক্ষদর্শীরা দাবী করেছেন যে, বিশেষ বাহিনী-র‌্যাব, ডিবি পুলিশ ও গোয়েন্দা বিভাগের পরিচয়ে সাদা পোশাকে ব্যক্তি বা ব্যক্তিদের তুলে নেয়া হচ্ছে। কিন্তু প্রায়শ সংশ্লিষ্ট বাহিনী তাদের গ্রেফতার বা আটকের বিষয়টি অস্বীকার করে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে থানা এসব ঘটনায় কোনো অভিযোগ নেয় না, স্বজনরা জিডি করতে গেলেও কোনো বিশেষ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নাম যারা ঘটনার সাথে যুক্ত তাদের নাম উল্লেখ করে জিডি করা যায় না। বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বা প্রভাবশালী ব্যক্তিবর্গ ছাড়া খুব কম ক্ষেত্রেই উদ্ধারের তৎপরতা লক্ষ করা যায়। আবার অনেক ক্ষেত্রে গুম হওয়ার অনেকদিন পর হঠাৎ করেই তাদের কোনো মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয় বা ক্রসফায়রে তাদের মৃত্যুর সংবাদ পাওয়া যায়। কয়েকজনকে আমরা সৌভাগ্যবশত ফিরে আসতে দেখলেও কি ঘটেছিলো সে সম্পর্কে তারা সম্পূর্ণ নিরবতা বজায় রেখেছেন। ২০১৩ সালের ১২ ডিসেম্বর পল্লবী এলাকা থেকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে তৎকালীন সূত্রাপুর থানা ছাত্রদলের সভাপতি সেলিম রেজা পিন্টুকে(৩১) ধরে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর থেকে তাকে আর পাওয়া যায়নি। গতকাল পিন্টুর ছোট ভাই হাসনাইন রেজা বলেন, ‘আমরা আমাদের ভাইকে ফিরে পেতে এখনও অপেক্ষা করছি। আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ করছি যে আমার ভাইকে ফিরিয়ে দিন।’ বিষেরবাঁশি.কম/ডেস্ক/মৌ দাস.

Categories: জাতীয়,সারাদেশ

Leave A Reply

Your email address will not be published.