গৌতম রায়: গতকাল বাংলাদেশের সীমান্ত রাজ্য ত্রিপুরার বিলোনিয়া থেকে বুলডেজার দিয়ে ঊৎপাটন করা হলো লেলিনের ভাস্কর্য্য। সম্প্রতি ত্রিপুরার নির্বাচনে সিপিএমকে হারিয়ে একক সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন নিয়ে রাজ্য সরকার গঠন করে ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)। ১৯৭৩ সাল থেকে সিপিএম শক্ত অবস্থান নিয়েই ত্রিপুরার ক্ষমতায় ছিল। মাঝখানে শুধু একবার এসেছিল কংগ্রেস। তবে এবারে বিজেপির এই চমক পশ্চিমবঙ্গে মমতা ব্যানার্জির জন্যও এক হুমকী বলে মনে করছেন অনেকে। ইতোমধ্যেই আসাম দখল করে নেয় বিজেপি। আরেক সেভেন সিষ্টারখ্যাত নাগাল্যান্ড ও ত্রিপুরায়ও চলে এসেছে বিজেপি। অনেকের ধারনা, এই পরাজয়ের মধ্য দিয়ে পশ্চিমবঙ্গের পর ত্রিপুরায় কমিউনিজমের সমাধি রচিত হলো। সিপিএম এর বিরুদ্ধে ত্রিপুরাবাসীর পুঞ্জীভূত ক্ষোভ ছিল। দুর্নীতি ও রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় লাগামছাড়া ছিল সজ্জন পরিচিত মানিক সরকারের সিপিএম।
অন্যদিকে ভারতের পিছিয়ে পড়া রাজ্য ত্রিপুরার উন্নয়ন হয়েছে শ্লথ গতিতে। ভারতের মূল ভূ খন্ডের প্রায় বাইরে অবস্থিত ত্রিপুরায় আশানুরূপ বিনিয়োগ হয়নি, মিল কলকারখানা শিল্পায়ন গড়ে উঠেনি। স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র বাংলাদেশ ভূ খন্ড ত্রিপুরাকে ভারতের প্রায় একটি বিচ্ছিন্ন দ্বীপে পরিনত করে রেখেছে। মূল ভূ খন্ডের সাথে সড়ক যোগাযোগ ব্যাবস্থা খুবই নাজুক। এজন্য ব্যবসা বানিজ্যেও প্রানচাঞ্চল্য পায়নি ত্রিপুরা।
তবে এবার অনেকেই বুক ভরা আশায় স্বপ্ন দেখছেন ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারে যেহেতু নরেন্দ্র মোদীর বিজেপি রয়েছে সেহেতু ত্রিপুরার উন্নয়নে গুরুত্ব দিবে দিল্লী। এখন দেখার বিষয়, ত্রিপুরার মূখ্যমন্ত্রী বাংলাদেশের ছেলে বিপ্লব কুমার দেব কতদূর নিয়ে যেতে পারেন ত্রিপুরাকে। আর ত্রিপুরার উন্নয়নে বাংলাদেশের সহযোগীতা অপরিহার্য্য। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে ত্রিপুরাবাসীর অবদান চিরস্মরনীয় হয়ে আছে। তাই আশা করা যায় দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক অক্ষুন্ন রেখে ও বাংলাদেশ তার স্বার্থরক্ষা করে ভারতের এই রুগ্ন সন্তানকে সুস্থ্য করতে হাসিনা-মোদী যৌথ উদ্যোগ নিবে।
বিষেরবাঁশী.কম/ গৌতম / হীরা