শনিবার ৭ বৈশাখ, ১৪৩১ ২০ এপ্রিল, ২০২৪ শনিবার

ভরা মৌসুমেও বাড়তি পেঁয়াজের দাম

বিষেরবাঁশী ডেস্ক: পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকার পরও সন্তোষজনকভাবে কমেনি পেঁয়াজের দাম। বরং দুই দিন আগের তুলনায় দেশি ও আমদানি করা পেঁয়াজের দাম কেজিতে পাঁচ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। তাই মৌসুমেও ভোক্তাদের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে আসছে না পেঁয়াজের দাম। এজন্য সরবরাহ ঘাটতির অজুহাত দেখাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। তাছাড়া গত তিন সপ্তাহ থেকে চালের দামও বাড়ছে। এই সপ্তাহে বেড়েছে কেজিপ্রতি এক-দুই টাকা। তবে দাম বাড়ার কারণ জানাতে পারেননি ব্যবসায়ীরা।

এদিকে শীতকালে সাধারণত চাহিদার তুলনায় বাজারে সবজির সরবরাহ বেশি থাকায় দামও কম থাকে। কিন্তু এবারের শীতে সরবরাহ থাকার পরও রাজধানীতে সবজির দাম ছিল বেশ চড়া। বেশির ভাগ সবজির কেজি ছিল ৪০-৫০ টাকারও বেশি। তবে শীত বিদায় নেওয়ার পর বেশ কিছু সবজির দাম অনেক কমে গেছে। অবশ্য গ্রীষ্মের যেসব সবজি বাজারে আগাম আসতে শুরু করেছে সেগুলো চড়া দামেই বিক্রি হচ্ছে।

গতকাল শুক্রবার মহাখালী কাঁচাবাজার ঘুরে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা যায়। দীর্ঘ সময় ধরে চাল ও পেঁয়াজের ঊর্ধ্বমুখী দাম ক্রেতাদের ভোগাচ্ছে অস্বস্তিতে। বিক্রেতারা বারবার পণ্য দুটির দাম কমার আশ্বাস দিলেও এর সুফল পাচ্ছেন না ক্রেতারা। বরং সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে দাম। পেঁয়াজের দাম কিছুটা কমলেও তা এখনো পর্যন্ত আসেনি ক্রেতার হাতের নাগালে। খুচরা বাজারে পেঁয়াজের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, দেশি ও আমদানি করা পেঁয়াজ কেজিপ্রতি ৫০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে।

মহাখালী কাঁচাবাজারের পেঁয়াজের খুচরা বিক্রেতা জামাল বলেন, ‘পেঁয়াজের দাম এই কমছে এই বাড়ছে। বাজারের মতিগতি আমরা নিজেরাও বুঝতে পারছি না। পাইকারি ব্যবসায়ীরা এখনো পেঁয়াজের ফলন নষ্ট ও আমদানি সমস্যার কথা বলে যাচ্ছেন। ফলে বেশি দামে কিনে আমাদের বেশি দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে।’

অন্যদিকে খুচরা বিক্রেতাদের তথ্য অনুযায়ী, নাজিরশাইল কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ৭৩ টাকা, ১ নম্বর মিনিকেট ৬৫, সাধারণ মিনিকেট ৬২, বিআর-২৮ ৫৫ টাকা ও স্বর্ণা এবং পারিজা বিক্রি হচ্ছে ৪৫ টাকা কেজিতে।

চালের খুচরা বিক্রেতা কবির হোসেন বলেন, ‘চালের দাম দ্রুত কমার সম্ভাবনা নেই। অনেকে বলেন বাজারে বোরো মৌসুমের চাল এলে নাকি দাম কমবে। তবে এর থেকে দাম আর খুব বেশি কমবে বলে মনে হচ্ছে না।’

এদিকে কয়েক সপ্তাহ ধরে সবজি বাজারে ক্রেতাদের স্বস্তি থাকলেও চলতি সপ্তাহে কয়েকটি সবজির দাম বেড়ে গেছে। এর মধ্যে রয়েছে বেগুন, শসা, করলা, বরবটি ও ঢেঁড়স। এদিন প্রতি কেজি টমেটো ১০-১৫ টাকা, পেঁপে ২০, বেগুন ৬০, শিম ৪০, মুলা ১৫, কাঁচামরিচ ৫০, ধনেপাতা ৬০, গাঁজর ৩০, আলু ১৫-২০, শসা ৬০, করলা ৮০, বরবটি ৮০ টাকা। লালশাক, পালংশাক ও ডাঁটাশাক দুই আঁটি ১৫ টাকা। লাউ প্রতি পিস ৩০ টাকা করে বিক্রি হয়েছে। প্রতি জোড়া বাঁধাকপি ও ফুলকপি ১৫ টাকা।

তবে শীত চলে যাওয়ার পরপরই বাজারে আসতে শুরু করেছে নতুন কিছু সবজি। এর মধ্যে রয়েছে ঢেঁড়স, পটোল, করলা। তবে এই সবজিগুলো খুব চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি ঢেঁড়স ৭০-৮০ টাকা, পটোল ৬০-৭০ ও করলা ৮০-৮৫ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে। সবজির বাজার নিয়ে জানতে চাইলে মহাখালী কাঁচাবাজারের বিক্রেতা মো. আসলাম উদ্দিন বলেন, প্রায় ১০-১২ দিন ধরে সরবরাহ অনেক বেড়েছে। অনেক সবজির দাম পড়ে গেছে। তবে তিনি বলেন, কৃষক তো দাম পাচ্ছেন না। তারা দাম না পেলে পরের সিজনে আবাদ করবে না।

আমদানি করা রসুনের বাজারেও স্বস্তি নেই ক্রেতাদের। কেজিপ্রতি ৮০ টাকা দরে বিক্রি হওয়া আমদানি করা রসুন এ সপ্তাহে এসে ২০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকায়। এ ছাড়া দেশি রসুন ৬০-৭০ টাকা, চিনি ৫৫-৬০, দেশি মসুর ডাল ১০০-১২০ ও আমদানি করা মসুর ডাল ৬০ টাকা কেজি করে বিক্রি হচ্ছে।

মাছ ও মাংসের দামও রয়েছে গত সপ্তাহের মতোই। প্রতি কেজি কাতল ২২০ টাকা, পাঙ্গাশ ১২০, রুই ২৩০-২৮০, সিলভারকার্প ১৩০, তেলাপিয়া ১৩০, শিং ৪০০ ও চিংড়ি ৪৫০-৫০০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।

এ ছাড়া প্রতি কেজি গরুর মাংস ৪৫০-৪৬০ টাকা, খাসির মাংস ৭০০-৭৫০ ও ব্রয়লার মুরগি ১৪০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। সোনালি মুরগি প্রতি পিস সাইজ অনুযায়ী ১৫০-২২০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।

বিষেরবাঁশী ডেস্ক/সংবাদদাতা/হৃদয়

Categories: অর্থনীতি

Leave A Reply

Your email address will not be published.