বিষেরবাঁশী ডেস্ক: গার্মেন্টস শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরী ১৬ হাজার টাকা, ১০% ইনক্রিমেন্ট, স্থায়ীভাবে রেশনিং ব্যবস্থা চালু, ভেরিয়েবল ডিএ, কন্ট্রিবিউটরি প্রভিডেন্ট ফান্ড (পিএফ) ঘোষণার দাবিতে গার্মেন্টস শ্রমিক অধিকার আন্দোলন কেন্দ্রীয় পরিচালনা কমিটির পক্ষ থেকে – নারায়ণগঞ্জে ফতুল্লার বিসিক শিল্প অঞ্চলে পদযাত্রা-
আজ বেলা ১২টায় গার্মেন্টস শ্রমিক অধিকার আন্দোলন এর পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি হিসেবে বিসিকে পদযাত্রা কর্মসূচী পালন উপলক্ষ্যে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন গার্মেন্টস শ্রমিক অধিকার আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী এড. মাহবুবুর রহমান ইসমাইল। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন গার্মেন্টস শ্রমিক সভার কেন্দ্রীয় সভাপতি সামসুজ্জোহা, গার্মেন্টস শ্রমিক ঐক্য ফোরাম কেন্দ্রীয় নেত মমিনুর রহমান মমিন, গার্মেন্টস শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সম্পাদক রাজু আহম্মেদ, গার্মেন্টস শ্রমিক সংহতির যুগ্ম সম্পাদক জায়িদ আলম আল জাহিদ, বাংলাদেশ টেক্সটাইল গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, বিসিক আঞ্চরিক কমিটির নেতা আল আমিন, সুমন মিয়া, সেলিম হোসেন, আব্দুল কুদ্দুস। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন শ্রমিক নেতা হেলিম সরদার। সমাবেশে এড. ইসমাইল তার বক্তৃতায় বলেন বাংলাদেশে রাষ্ট্রপতির বেতন ১ লাখ ২০ হাজার টাকা, প্রধানমন্ত্রীর বেতন ১ লাখ ১৫ হাজার টাকা, স্পীকারের বেতন ১ লাখ ১২ হাজার টাকা, বিরোধীদলীয় নেতার বেতন ১ লাখ ৫ হাজার টাকা, প্রধান বিচারপতির বেতন ১ লাখ ১০ হাজার টাকা, পুলিশের আইজির বেতন ৮৫ হাজার টাকা, সচিবের বেতন ৮৫ হাজার টাকা। একজন পুলিশ কনস্টেবলেরও নিম্মতম গড় বেতন পায় ১৮ হাজার ১০০ টাকা। ২০১৫ সালের শেষে পে-কমিশণ ঘোষিত হলে ১০১% বেতন বৃদ্ধি করা হয়েছিল। অথচ একই দেশে গার্মেন্টস শ্রমিকদের মজুরী ৫,৩০০/- টাকা। এটি অযৌক্তিক ও অন্যায়।
একজন পুলিশ কনষ্টেবল ১৮ হাজার ১০০ টাকা গড় বেতন পেয়েও ১১৫ টাকায় ৩০ কেজি চাল, ৩০ কেজি আটা, ৫ কেজি চিনি, ৮ লিটার তেল, ৮ কেজি ডাল, ১ কেজি পোলার চাউল পেয়ে থাকে। যুক্তির খাতিরেই শ্রমিকদের স্থায়ীভাবে রেশনিং ব্যবস্থা চালু করা অপরিহার্য।
এড. ইসমাইল আরও বলেন যে, ১০% ইনক্রিমেন্ট- ২০১৩ সালে ন্যূনতম মজুরী ঘোষনার সময় প্রতি বছর ৫% ইনক্রিমেন্ট এর ঘোষনা করা হয়েছিল। পে-কমিশন, ওয়েজ কমিশন সহ বিভিন্ন শিল্প সেক্টরে ১০% ইনক্রিমেন্ট এর উদাহরণ দৃষ্টান্তমূলক। সেই হিসাবে গার্মেন্টস শিল্প সেক্টরে প্রতি বছর ১০% ইনক্রিমেন্ট ঘোষনা দাবী অত্যান্ত যৌক্তিক ও বাস্তবসম্মত।
ভেরিয়েবল ডিএ (Dearness Allowance): পরাধীন পাকিস্তান আমলেও ভেরিয়েবল ডিএ এর প্রচলন ছিল। বর্তমানে পাশর্^বর্তী দেশ ভারত-পাকিস্তান সহ বিশে^র প্রায় প্রতিটি দেশেই ভেরিয়েবল ডিএ প্রচলন আছে।
অংশীদারীত্ব প্রভিডেন্ট ফান্ড: অংশীদারীত্ব মূলক প্রভিডেন্ট ফান্ড বাংলাদেশ শ্রম আইনে উল্লেখ থাকলেও শুধুমাত্র ইপিজেড ছাড়া কোন গার্মেন্টস শিল্প কারখানায় প্রভিডেন্ট ফান্ড প্রচলন করা হয়নি। যার কারণে শ্রমিক কর্মজীবন শেষে শূণ্য হাতে বিদায় নিতে হয়। এ কারণে বাধ্যতামূলকভাবে অংশীদারীত্বমূলক প্রভিডেন্ট ফান্ড চালু করার জন্য দাবী জানানো হয়।
সমাবেশে নেতৃবৃন্দ নিম্মবর্ণিত ছয় দফা দাবী মেনে নেওয়ার জন্য সরকারের কাছে দাবী জানান-
১। গার্মেন্টস শ্রমিকদের বেসিক ১০ হাজার টাকা সহ ১৬ হাজার টাকা ন্যূনতম মজুরী ঘোষনা করতে হবে।
২। চাল, ডাল, তেল, শিশুখাদ্য সহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য রেশন কার্ডের মাধ্যমে বিতরণের লক্ষ্যে স্থায়ীভাবে রেশনিং ব্যবস্থা চালু করতে হবে।
৩। প্রতি বছর মূল মজুরীর ১০% ইনক্রিমেন্ট প্রদান করতে হবে।
৪। বাধ্যতামূলক অংশীদারীত্বমূলক প্রভিডেন্ট ফান্ড চালু করতে হবে।
৫। ভেরিয়েবল ডিএ চালু করতে হবে।
৬। সোয়েটার ও পিছ রেট এ কর্মরত শ্রমিকদের কাজের আগে মজুরী নির্ধারণ ও ঢাল সিজনে পূর্ণ বেসিক দিতে হবে।
বিষেরবাঁশী ডেস্ক / সংবাদদাতা / হীরা