শুক্রবার ১৫ চৈত্র, ১৪৩০ ২৯ মার্চ, ২০২৪ শুক্রবার

খালেদা ছাড়া যেভাবে চলবে বিএনপি

বিষেরবাঁশী ডেস্ক: খালেদার বিরুদ্ধে দুর্নীতি মামলার রায়ের আগেই দেশের রাজনীতিক অঙ্গনে সবচেয়ে আলোচিত প্রশ্নটি হচ্ছে খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে দলের হাল ধরছেন কে?

দলের দায়িত্বশীলদের কাছে বিষয়টি জানতে চাইলে তারা কেউই এটিকে আলোচনায় আনতে চাইছেন না। বরং বলছেন, বিএনপি নেত্রীর রায়ের আগেই এই ধরনের বিশ্লেষণ ‘অহেতুক’। বিএনপি নেত্রী বেকসুর খালাস পাবেন বলে নেতাদের বিশ্বাস।

দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, এই মামলা মিথ‌্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন। এক এগারোতে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে এই মামলা হয়েছিলো। ন‌্যায় বিচার হলে এই মামলায় তিনি খালাস পাবেন। সেহেতু তার অনুপস্থিতিতে দল পরিচালনার বিষয়টি আসছে কেন? যে কোনো পরিস্থিতিতেই বিএনপি নেত্রীর নির্দেশে সিনিয়র ভাইস চেয়ারম‌্যান তারেক রহমানের পরামর্শে দল পরিচালিত হবে।

এদিকে রায়কে কেন্দ্র করে বুধবার রাতে দলের নীতি নির্ধারকদের নিয়ে বৈঠক করেছেন খালেদা জিয়া।

সূত্র বলছে, বৈঠকে যে কোনো পরিস্থিতিতে দল কীভাবে চলবে তার একটি দিক নির্দেশনা দিয়ে দিয়েছেন বিএনপি প্রধান। দুর্নীতি মামলার রায়ে নেতিবাচক কিছু হলে খালেদা জিয়ার কারাদণ্ড হতে পারে। সেক্ষেত্রে নেতা-কর্মী থেকে এক প্রকার বিচ্ছিন্নই থাকবেন তিনি।

তার অনুপস্থিতিতে লন্ডনে তারেক রহমানই আড়ালে থেকে দলের নির্দেশনা দেবেন। স্থায়ী কমিটির সদস‌্যরা তার নির্দেশে সিদ্ধান্তগুলো নেবেন।

জানা গেছে, রায় বিপক্ষে গেলেও আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে সর্বোচ্চ সহনশীল আচরণ করতে এরই মধ‌্যে তৃণমূল ইউনিট পর্যন্ত নির্দেশনা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। সরকার চাইছে রায়কে কেন্দ্র করে পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করতে। এই ফাঁদে পা না দিতে হাইকমান্ডের বার্তা রয়েছে নেতা-কর্মীদের কাছে।

যদিও ‘নিয়মতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণ’ আন্দোলনের কথা বলা হচ্ছে, তবে রায় পরবর্তী প্রতিক্রিয়া কেমন হয়, তা নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন খোদ দলটির শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের।

বিএনপি’র এক নেতা বলেন, দেখুন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া একজন ব‌্যক্তি নন, তিনি একটি প্রতিষ্ঠান। তিন বারের প্রধানমন্ত্রী, তিনবারের বিরোধী দলীয় নেতা, বিএনপি চেয়ারপারসন। তিনি নির্বাচনে হারেননি। দেশের মানুষ ও নেতা-কর্মীদের কাছে তার যে গ্রহণযোগ‌্যতা, আবেগের একটি জায়গা আছে।

তিনি বলেন, তাকে যদি মিথ‌্যা মামলায় কারাদণ্ড দেওয়া হয় সেটিতে মাঠ পর্যায়ে কী প্রতিক্রিয়া হতে পারে তা সহজেই অনুমেয়। যদিও দলের পক্ষ থেকে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের নির্দেশ রয়েছে। তবে যেখানে আবেগ জড়িত সেখানে অন‌্য কিছু ঘটা তো অস্বাভাবিক নয়।’

বিভিন্ন পর্যায়ের বিএনপি নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কেন্দ্র থেকে তৃণমূলে বার্তা দেওয়া হয়েছে যে, সরকারের ফাঁদে পা দেওয়া যাবে না। খালেদা জিয়ার প্রতি জনসমর্থন দেখাতে ব্যাপক জনসমাগম ঘটানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে দলের প্রতিটি ইউনিটকে। নিজেদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে মাঠে থাকার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করারও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে কেন্দ্র থেকে। সারা দেশের জেলা শহরগুলোতেও একই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

তারা জানায়, খালেদা জিয়ার সাজা হলে দলের মধ‌্যে যাতে ঐক‌্যের জায়গায় ফাটল না ধরে সেটিকেই সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছেন দলটির নেত্রী। গঠনতন্ত্রের কোনো ধারার সুযোগ নিয়ে দলে যাতে বিতর্ক সৃষ্টি করতে না পারে সেজন্য ৭ ধারাটি বাতিল করা হয়েছে।

বিএনপির নেতাদের থেকে খালেদা জিয়ার যোগাযোগ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন করা হলে লন্ডনে অবস্থান করা দলটির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যানের তারেক রহমানের পরামর্শে দল চলবে। দলের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী ফোরাম স্থায়ী কমিটি ও সিনিয়র নেতারা সে অনুযায়ী করণীয় নির্ধারণ করবেন। মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সেসব সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করবেন।

বিষেরবাঁশী ডেস্ক/সংবাদদাতা/হৃদয়

Categories: রাজনীতি

Leave A Reply

Your email address will not be published.