বৃহস্পতিবার ১২ বৈশাখ, ১৪৩১ ২৫ এপ্রিল, ২০২৪ বৃহস্পতিবার

রিজলের বিরুদ্ধে মামলা করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক

বিষেরবাঁশী ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রের একটি ব্যাংক থেকে বাংলাদেশের রিজার্ভ চুরির ঘটনায় ফিলিপাইন রিজল কমার্শিয়াল ব্যাংকের (আরসিবিসি) বিরুদ্ধে মামলা করার পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে মতিঝিলের কেন্দ্রীয় ব্যাংক। যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ও সুইফটের সঙ্গে এ নিয়ে ইতোমধ্যেই বাংলাদেশ ব্যাংকের আলোচনা হয়েছে। একটি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম গতকাল শুক্রবার এ কথা জানায়। এক প্রতিবেদনে বার্তা সংস্থাটি জানিয়েছে, নিউইয়র্কের ফেডারেল রিজার্ভ কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য দেয়নি। বাংলাদেশের আহ্বানে সাড়া দিয়ে ওই মামলায় যুক্ত হওয়ার কোনো ইঙ্গিতও তাদের দিক থেকে পাওয়া যায়নি।

২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারির শুরুতে সুইফট মেসেজিং সিস্টেমের মাধ্যমে ৩৫টি ভুয়া বার্তা পাঠিয়ে ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্কে রক্ষিত বাংলাদেশের এক বিলিয়ন ডলার সরিয়ে ফেলার চেষ্টা হয়। এর মধ্যে পাঁচটি মেসেজে আট কোটি ১০ লাখ ডলার যায় ফিলিপাইনের আরসিবিসিতে। আরেক আদেশে শ্রীলঙ্কায় পাঠানো হয় ২০ লাখ ডলার। শ্রীলঙ্কায় পাঠানো অর্থ ওই অ্যাকাউন্টে জমা হওয়া শেষ পর্যন্ত আটকানো গেলেও ফিলিপাইনের ব্যাংকে যাওয়া অর্থের বেশির ভাগই স্থানীয় মুদ্রায় বদলে জুয়ার টেবিল ঘুরে চলে যায় নাগালের বাইরে।

বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ সাইবার চুরির এ ঘটনা বাংলাদেশের মানুষ জানতে পারে ঘটনার এক মাস পর ফিলিপাইনের একটি পত্রিকার খবরের মাধ্যমে। এ ঘটনায় রিজল ব্যাংককে ২০ কোটি ডলার জরিমানাও করেছে ফিলিপাইনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ওই জরিমানার অর্থ পরিশোধ করলেও বাংলাদেশকে বাকি অর্থ ফেরতে কোনো দায় নিতে নারাজ ব্যাংকটি। গত মাসে এক কনফারেন্স কলে রিজলের বিরুদ্ধে মামলা করার পরিকল্পনা নিয়ে নিউইয়র্ক ফেডের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা। ব্যাংকিং লেনদেনের আন্তর্জাতিক মেসেজিং নেটওয়ার্ক সুইফটের দুজন প্রতিনিধিও ছিলেন ওই আলোচনায়। ওই আলোচনা সম্পর্কে সরাসরি ধারণা রয়েছে এমন তিন বাংলাদেশি কর্মকর্তার বরাতে রয়টার্স জানিয়েছে, রিজলের বিরুদ্ধে মামলা করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক নিউইয়র্ক ফেডে একটি প্রস্তাব পাঠাবে বলে সিদ্ধান্ত হয় ওই বৈঠকে।

প্রাথমিক পরিকল্পনা অনুযায়ী, চুরি যাওয়া টাকা উদ্ধারের জন্য আগামী মার্চ-এপ্রিল নাগাদ ওই দেওয়ানি মামলাটি করা হবে নিউইয়র্কে। বাংলাদেশ আশা করছে, ফেডারেল রিজার্ভ ও সুইফট কর্তৃপক্ষও সেখানে বাদী হবে। বাংলাদেশ ব্যাংক ইতোমধ্যে এ বিষয়ে কাজ শুরু করেছে এবং শিগগিরই তা নিউইয়র্কে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন তথ্যদাতাদের একজন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র শুভঙ্কর সাহা রয়টার্সকে বলেছেন, ওই রকম কোনো মামলার বিষয়ে তার কোনো ধারণা নেই। তবে রিজার্ভ চুরির পুরো অর্থ ফেরানোর চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। এ বিষয়ে নিউইয়র্ক ফেড বা সুইফটের আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে নিউইয়র্ক ফেডের কার্যক্রম সম্পর্কে অবগত একজনের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশ ব্যাংককে আইনি পরামর্শ দিচ্ছেন-এ রকম একজন ওই কনফারেন্স কলে আরসিবিসির বিরুদ্ধে মামলা করার বিষয়টি তোলেন। বাংলাদেশ ব্যাংক কোনো লিখিত প্রস্তাব পাঠালে তা বিবেচনা করে দেখা হবে বলে ওই বৈঠকে আশ্বাস দেন নিউইয়র্ক ফেডের কর্মকর্তারা। তবে ওই মামলার বাদী হওয়ার বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো সম্মতি তারা দেননি বা এ বিষয়ে পরে আর কোনো কাজও এগোয়নি বলে নিউইয়র্কের ওই তথ্যদাতা রয়টার্সকে জানিয়েছেন।

বিষেরবাঁশী ডেস্ক/সংবাদদাতা/হৃদয়

Categories: অর্থনীতি

Leave A Reply

Your email address will not be published.