সুভাষ সাহা: সকাল ১১ টা ১০ মিনিট। নারায়ণগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের সহকারী পরিচালক রাজু আহমেদ এর কক্ষের বাইরে লম্বা লাইন। একজন করে ভেতরে যাচ্ছেন-বের হচ্ছেন। ক্রমানুসারে ভেতরে ঢুকে দেখি- টেবিলের ট্রেতে তখনো সকালের নাস্তা অক্ষত। সেদিকে খেয়াল নেই। চটপট কাজ করে যাচ্ছেন। পিয়নকে ফাইল আনতে পাঠাচ্ছেন,কম্পিউটার চেক করছেন,মোবাইলও রিসিভ করছেন।ব্যস্ততার শেষ নেই। বললাম নাস্তা সেরে নিন,পরে আসি। হেসে বলেন,” আরে বসেন। খাওয়া যাবে। মানুষ বাইরে দাঁড়িয়ে আছেন। আর দু’দিন আছি। মৌলভী বাজার পোস্টিং হয়েছে। ৩ বছর ছিলাম। পেন্ডিং কাজগুলো সেরে নিচ্ছি। মানুষকে সাধ্যমত সেবা দিতে চেষ্টা করেছি। প্রধানমন্ত্রীর ‘এ ২ আই’ প্রকল্পের অধীন ‘শ্রেষ্ঠ ই-সেবা প্রদানকারী দপ্তর’ নারায়ণগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসকে পরপর দু’বার ১ম পুরস্কারে ভূষিত করেছে। এ স্বীকৃতি আমার জীবনে পরম পাওয়া।”
কথা প্রসঙ্গে বলেন, নারায়ণগঞ্জ পাসপোর্ট অফিসে দালালের উপদ্রব নেই। মানুষের ভোগান্তি নেই। যখন যিনি সমস্যা নিয়ে এসেছেন তাৎক্ষণিক সমাধান দিয়েছি।’
এসময় পিয়ন দৌড়ে মন্তব্য খাতা এনে উল্টে সেবাপ্রাপ্তদের মন্তব্য পাতা উল্টে দেখালেন। জনৈক জহিরুল ইসলাম তাঁর মন্তব্যে লেখেন,’ আমার এক ভাই কেন্সারের রোগীর পাসপোর্ট করতে এসে এ অফিসের সেবা পেয়ে অভিভূত হয়েছি। অন্য পাসপোর্ট অফিসের অভিজ্ঞতার সঙ্গে মেলে না। তাই নারায়ণগঞ্জ পাসপোর্ট অফিসকে ‘মানবতার পাসপোর্ট’ অফিস বলে গেলাম’।পাশে তাঁর মোবাইল নাম্বার-০১৯২৭৩৭৮৯৫৯।’
আমাদের বসিয়ে রেখে ১০/১৫ মিনিটে কাজ শেষ করে দিয়ে বললেন,স্লিপের তারিখ অনুযায়ী এসে পাসপোর্ট ডেলিভারী নিয়ে যাবেন।’
সত্যি অভিভূত। সেবাপরায়ণ সরকারী কর্মকর্তা রাজু আহমেদের প্রশংসা উপস্থিত সবার মুখেমুখে। শুনেছি প্রতিটি কর্মস্থলেই তিনি সেবার অনন্য উদাহরণ রেখে এসেছেন। ২১ নভেম্বর মঙ্গলবার নারায়ণগঞ্জে ছিল তাঁর শেষ কর্মদিবস। রাজু আহমেদ এর জন্য রইল শুভ কামনা।
বিষেরবাঁশী ডেস্ক/সংবাদদাতা/হৃদয়