শুক্রবার ৬ বৈশাখ, ১৪৩১ ১৯ এপ্রিল, ২০২৪ শুক্রবার

রক্সির ম্যাচে নায়ক রাফায়েল

বিষেরবাঁশী ডেস্ক: ‘আফুসি যেখানে রেখে গেছেন, সেখান থেকেই শুরু করেছি আমরা’- কাল বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে বিজেএমসিকে প্রিমিয়ার লিগে ফিরতি পর্বে ৩-০ গোলে হারানোর পর বলেন শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের ফুটবল কমিটি চেয়ারম্যান আশরাফ উদ্দিন চুন্নু। নাইজেরিয়ান জোসেফ আফুসি হঠাৎ চলে যাওয়ায় শেখ জামাল তার চেয়ারে বসিয়েছে জাতীয় অনূর্ধ্ব-১৮ ও অনূর্ধ্ব-১৯ দলের কোচ মাহবুব হোসেন রক্সিকে। প্রথম ম্যাচেই পাল্টে ফেলেছেন রণকৌশল, শেখ জামালের আক্রমণাত্মক যে রূপ, সেটা দেখা যায়নি।

কেন দেখা গেল না- ম্যাচ শেষে ব্যাখ্যা দিলেন কোচ রক্সি, ‘দল আগে কী খেলত, এ নিয়ে কিছু বলব না। তবে আমাকে দেখতে হবে দলে কেমন সামর্থ্যরে ফুটবলার আছে, প্রতিপক্ষ কারা। দেখে আক্রমণাত্মক ৪-৩-৩ না রক্ষণ শক্ত করে ৪-২-৩-১ ছকে খেলব, ঠিক করব। সীমিত খেলোয়াড়, বদলও করা যাবে না। এদের নিয়েই লিগের লম্বা রেস দৌড়াতে হবে। শক্তি জিইয়ে রাখতে নতুন যারা আছে, তাদেরও খেলিয়ে অভিজ্ঞতা বাড়াতে হবে।’ শেষ দিকে রাকিব ও সোহেলকে দিয়েছেন অভিজ্ঞতা বাড়ানোর সুযোগ। বিজেএমসির বিপক্ষে চেনা ৪-৩-৩ ভেঙে শেখ জামালকে কাল খেলালেন তিনি অনভ্যস্ত ৪-২-৩-১ ছকে! তাতে অ্যাটাকিং থার্ডে গিয়ে প্রেসিং করে খেলার রূপটা দেখা যায়নি। জোড়া গোল করা রাফায়েল ওদোইনকে নম্বর নাইন পজিশনে রেখে পেছনে খেলান সলোমন কিং-জাহেদ পারভেজ-জাভেদকে। মিডফিল্ড ও রক্ষণে শক্তি বাড়াতে ছিলেন ওমর ফারুক ও ইমরান রুবেল; ডিফেন্স লাইনে খান তারা-ইয়াসিন-দিদারুল-শ্যামল। দুই প্রান্ত দিয়ে আক্রমণে বাড়াতে খান তারা ও শ্যামল ওভারল্যাপ করেছেন।

বিশেষ করে ডানপ্রান্তে খান তারা বেশ তৎপর ছিলেন। ৫৩ ও ৬১ মিনিটে রাফায়েলের ২টি গোলেরই উৎস তিনি। প্রথমটি তারার ভাসানো বল বুক দিয়ে নামিয়ে ও দ্বিতীয়টি তারার পা ঘুরে আসা বল সলোমন আলতো তুলে দিতেই প্লেসিং করেন এ নাইজেরিয়ান। এ গোলে মোহামেডানের কিংসলে চিগোজি, চট্টগ্রাম আবাহনীর তৌহিদুল আলম সবুজের সঙ্গে গোলদাতা তালিকার শীর্ষে (৭টি) উঠলেন। ৮২ মিনিটে বুদ্ধিদীপ্ত শটে ব্যবধান ৩-০ করা গোলদাতা সতীর্থ সলোমন কিংও তাদের পাশে দাঁড়ান। তবে গোলের দায় মুশফিকুর শিমুলের; বল ধরে বেশ আয়েশ করে ব্যাকপাস দিতে চাচ্ছিলেন তিনি, ছুটে এসে ছোঁ মেরে কেড়ে নেন সলোমন। তিন-চার কদম গিয়ে আগুয়ান গোলরক্ষক আরিফুজ্জামান হিমেলের মাথার ওপর দিয়ে পোস্টে! বিজেএমসি ফুটবলাররা ফেয়ার প্লে’র দাবিতে মিনিট দুয়েক খেলা বন্ধ রাখেন।
অথচ গোটা ম্যাচে বলার মতো আক্রমণ করতে পারেনি বিজেএমসি; দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে ইসমাইল বাঙ্গুরার সাইড ভলি শটের বল গোলরক্ষক মিতুলের হাত ফসকালেও পোস্টে ঠেলতে ব্যর্থ এলিটা কিংসলে।
অনভ্যস্ত ছকে খেলায় শেখ জামাল দলের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেল ম্যাচ শেষে! কে কী বলল- ভাবছেন না রক্সি, দল জিতেছে তাতেই খুশি। প্রশংসা দিলেন রক্ষণের, ‘ওরা খুব ভালো খেলেছে। প্রতিপক্ষকে গ্যাপ দেয়নি।’ তবে জয় দিয়ে ঘরোয়া ফুটবলে শীর্ষ পর্যায়ে অভিষেক করতে পারায় খুশি তিনি, ‘সব কোচেরই এমন প্রত্যাশা থাকে। এটা ধরে রাখতে চাই।’ পারব কিনা, সময়ই বলবে। কেননা শেখ জামাল তো অগ্নিকুণ্ড।
এমনিতে কালই প্রশ্ন উঠেছে- গোলরক্ষক কোচ মোশারফ বাদলের অধীনে মোহামেডানের বিপক্ষে শেখ জামাল গোল করেছিল ৪০ মিনিটে, বিজেএমসির গোলমুখ খুলেছে ৫৩ মিনিটে। জয়ের পর ১৩ ম্যাচে ৩০ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়েই থাকল শেখ জামাল, বিজেএমসি (১৬) থাকল সাতেই।

বিষেরবাঁশী ডেস্ক/সংবাদদাতা/হৃদয়

Categories: খেলাধূলা

Leave A Reply

Your email address will not be published.