মঙ্গলবার ৫ চৈত্র, ১৪৩০ ১৯ মার্চ, ২০২৪ মঙ্গলবার

গুলশানে স্ত্রীকে হত্যার পর স্বামীর থানায় আত্মসমর্পণ

 

  • স্টাফ রিপোর্টার

রাজধানীর গুলশানে পরকীয়ায় আসক্ত হওয়ার সন্দেহে স্ত্রীকে গলা কেটে হত্যা করেছে স্বামী। হত্যার পরপর স্বামী মিন্টু গাজী (৪২) গুলশান থানায় আত্মসমর্পণ করেছেন। নিহত গৃহবধূর নাম রানী বেগমকে (৩০)। রানী গুলশানে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থায় (আইএলও) কর্মরত ভারতীয় এক নাগরিকের বাসার গৃহকর্মী ছিলেন। গতকাল শনিবার সকাল ৮টার দিকে গুলশান-২ এর ৬৮ নম্বর রোডের ১০ নম্বর বাড়ির চতুর্থ তলায় ওই কর্মকর্তার বাসায় এ ঘটনা ঘটে।

গুলশান থানার এসআই নাজমুল জানান, গতকাল সকাল সাড়ে ৮ টার দিকে এক ব্যক্তি থানায় এসে বলেন, আমি আমার বউকে খুন করে এসেছি! তখন আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম, তিনি মারা গেছেন নাকি জীবিত আছেন? কিন্তু তাকে ক্লান্ত দেখাচ্ছিল। এ সময় তার কাছ থেকে বাসার ঠিকানা নিয়ে তাকে আটকে রাখি। আর ওই এলাকায় টহল পুলিশকে ফোন করে বাসায় গিয়ে খোঁজ নিতে বলা হয়। পুলিশ সদস্য আইএলও কর্মকর্তার বাসায় গিয়ে রানীর গলা কাটা লাশ উদ্ধার করেন।

নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, প্রায় আড়াই বছর আগে মিন্টুর সাথে রানীর দ্বিতীয় বিয়ে হয়। মিন্টুরও এটি দ্বিতীয় বিয়ে। তারা গুলশান-২ এর ১১৬/১৮-ক দক্ষিণ খ্রিস্টান পাড়া এলাকায় থাকত। তাদের সাথে রানীর আগের ঘরের এক ছেলে সুজন এবং মিন্টুর আগের ঘরের দুই ছেলে থাকত। রানীর গ্রামের বাড়ি পটুয়াখালীর মজিদ বাড়িয়া এলাকায়।

নিহতের মামা খোরশেদ আলম জানান, রানী ওই বাসায় ৩-৪ বছর ধরে কাজ করে আসছিল। সে মাসে ১০ হাজার টাকার বেশি বেতন পেত। মিন্টু প্রাইভেটকার চালাতো। তবুও সে রানীর কাছ থেকে টাকা নিতো। টাকা না দিলে প্রায়ই রানীর সঙ্গে ঝগড়ায় লিপ্ত হতো মিন্টু। গত শুক্রবার রাতেও তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। গতকাল সকালে রানীকে ওই কর্মকর্তার বাসায় এগিয়ে দিতে গিয়ে সেই বাসাই তাকে হত্যা করে মিন্টু। রানী টাকা না দেয়ায় তাকে হত্যা করা হতে পারে বলে খোরশেদের ধারণা।

গুলশান থানার ওসি (তদন্ত) সালাউদ্দিন বলেন, মিন্টু প্রতিদিন সকালে তার স্ত্রী রানীকে ওই কর্মকর্তার বাসায় কাজে দিয়ে তিনিও কাজে চলে যান। গতকাল সকালে ওই বাসায় পৌঁছে দেওয়ার পর সবজি কাটার ছুরি দিয়ে রানীর গলা কেটে হত্যা করে। ঘটনার সময় আইএলও কর্মকর্তা এবং তার স্ত্রী বাসায় ছিলেন না। তারা সে সময় পাশের পার্কে হাঁটতে বেরিয়েছিলেন। ওসি বলেন, ঘটনার পর মিন্টু থানায় আত্মসমর্পণ করেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মিন্টু জানিয়েছেন, রানী অন্য কারো সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়েছে- এই সন্দেহ থেকে তাকে হত্যা করার কথা আমাদের বলেছে। নিহতের ছেলে সুজন হাওলাদারের বরাত দিয়ে ওসি বলেন, গত ৪/৫ মাস ধরে মিন্টু রানীকে সন্দেহ করে আসছিল। সন্দেহের পরিপ্রেক্ষিতে তাদের মধ্যে প্রায় ঝগড়া হতো। শুক্রবার রাতেও এ নিয়ে দু’জনের মাঝে ঝগড়া হয়। এ ঘটনায় সুজন বাদী হয়ে মামলা করেছেন। মিন্টুকে সে মামলায় গ্রেফতার দেখানো হবে বলে জানান ওসি।

এসএস/ক্যানি

Categories: আইন-আদালত,সারাদেশ

Leave A Reply

Your email address will not be published.