শুক্রবার ৬ বৈশাখ, ১৪৩১ ১৯ এপ্রিল, ২০২৪ শুক্রবার

নারীর হার্ট অ্যাটাক

অধ্যাপক শুভাগত চৌধুরী: হার্ট অ্যাটাক যখন হয়, তখন নারীর ক্ষেত্রে পুরুষের মতো উপসর্গ নাও হতে পারে। হতে পারে অন্য ধরনের উপসর্গ। বুক ভেঙে ব্যথা, একটি বাহু বেয়ে ব্যথা নিচে চলে আসা, এমন বৈশিষ্ট্যপূর্ণ উপসর্গ নাও হতে পারে। অনেক সময় অস্পষ্ট, নীরব উপসর্গ থাকে যা নজরে পড়ে না।

দেখা যায়, ছয় ধরনের উপসর্গ

হতে পারে নারীর হার্ট অ্যাটাকের সময়। তাই সেসব জেনে রাখা ভালো।

১. বুকে ব্যথা বা অস্বস্তি : বুকে ব্যথা হলো সচরাচর উপসর্গ। তবে অনেক নারীর তেমন ব্যথা হতে পারে পুরুষের তুলনায় অনেক কম এবং অন্যরকম। মনে হবে বুক চেপে আসছে, নয়তো বুক ভার ভার লাগছে এবং ব্যথা হতে পারে বুকের যে কোনো স্থানে। শুধু বাঁ দিকে হবে, তাই নয়।

২. ব্যথা হতে পারে বাহু, পিঠ বা চোয়ালে : এমন ব্যথা নারীদের ক্ষেত্রে হয় বেশি। মনে করবেন অনেকের যে ব্যথা হওয়া উচিত বুকে বা বাঁ বাহুতে; কিন্তু ব্যথা হলো পিঠ বা চোয়ালে। ব্যথা হতে পারে ক্রমে ক্রমে আবার হঠাৎও হতে পারে। কম-বেশি হতে হতে তীব্র হয়ে উঠতে পারে। ঘুমিয়ে থাকলে ব্যথায় জেগে উঠতে পারে।

৩. পেটের ব্যথা : কখনও কখনও অনেকে পাকস্থলীর ব্যথাকে ভুল করে হার্ট অ্যাটাকের ব্যথা ভাবেন। বুক জ্বালা বা ফ্লুর কারণে এমন ব্যথা হতে পারে। কখনও অনেক নারীর অভিজ্ঞতা এমন হয় যে, পেটে প্রচন্ড চাপ অনুভব করেন।

৪. শ্বাসকষ্ট, বমিভাব ও মাথা হালকা বোধ হওয়া : অকারণে যদি শ্বাসক্রিয়ায় খুব কষ্ট হয়, হতে পারে তা হার্ট অ্যাটাকের জন্য। সঙ্গে যদি অন্য দুই-একটি উপসর্গ থাকে, তাহলে সন্দেহ অবশ্য। মনে হবে ম্যারাথন দৌড়ে এসেছেন, অথচ বস্তুতপক্ষে একটুও শরীর নাড়ানো হয়নি।

৫. শরীরে ঘামঝরা : শরীর শীতল করে ঘাম ঝরলে তা নারীর জন্য হার্ট অ্যাটাকের সঙ্কেত হতে পারে। ব্যায়াম করে যে ঘাম হয় বা বাইরে রোদে কাজ করে যে ঘাম, তেমন নয়। মনে হবে শরীর-মনে খুব চাপ পড়েছে, ঘাম ঝরছে। এ ধরনের হলে ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া খুবই প্রয়োজন।

৬. ক্লান্তি বোধ হওয়া : যাদের হার্ট অ্যাটাক এমন হয় ওই নারী প্রচন্ড ক্লান্তি অনুভব করেন, ধীরস্থিরভাবে বসে আছেন, নড়ছেন না, তবুও খুব ক্লান্ত বোধ করছেন। রোগী বলেন, বুকজুড়ে ক্লান্তি বোধ করছেন। সহজ সব কাজকর্ম করতে পারেন না, এমনকি গোসল করতে যেতেও তারা অসীম ক্লান্তি বোধ করেন। এমন হলেও ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করা জরুরি। এমন সব উপসর্গের অভিজ্ঞতা হলে ডাক্তারি সাহায্য চাইতে দ্বিধা করবেন না।

উপরে উল্লিখিত যে কোনো উপসর্গে দেরি না করে জরুরিভাবে ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করুন। নিজে নিজে গাড়ি ড্রাইভ করে হাসপাতালে যাবেন না।

প্রয়োজনে অ্যাম্বুলেন্স ডাকুন। বন্ধু বা আত্মীয়স্বজনও যেন ড্রাইভ করে না নিয়ে যান, কারণ এতে দ্রুত হাসপাতালে যাওয়া সম্ভব নাও হতে পারে। সুতরাং যা অনুভব করছেন তা কোনোভাবেই এড়িয়ে যাবেন না। ভুল হলেও, লোকে বোকা বললেও লজ্জা পাবেন না। চেকআপ জরুরি ভুল হোক আর শুদ্ধ হোক। স্বাস্থ্যসেবা নেয়া জরুরি, জীবন বাঁচানোর জন্য।

অধ্যাপক শুভাগত চৌধুরী

পরিচালক, ল্যাবরেটরি সার্ভিসেস

বারডেম হাসপাতাল, ঢাকা

বিষেরবাঁশী ডেস্ক/সংবাদদাতা/হৃদয়

Categories: স্বাস্থ্য

Leave A Reply

Your email address will not be published.