শুক্রবার ৬ বৈশাখ, ১৪৩১ ১৯ এপ্রিল, ২০২৪ শুক্রবার

‘মিয়ানমার সেনাবাহিনীর অপরাধ সহ্য করা হবে না’

বিষেরবাঁশী ডেস্ক: মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগ করেছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে সংস্থাটি বুধবার এক বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদনে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের উত্তরাঞ্চলে নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে পরিকল্পিতভাবে রোহিঙ্গাদের নিশ্চিহ্ন করার প্রমাণ তুলে ধরা হয়েছে।

অ্যামনেস্টি বিবৃতিতে বলেছে, প্রত্যক্ষদর্শীদের বিবরণ, স্যাটেলাইট ছবি, ফটো, ভিডিও এবং অন্যান্য উপাত্ত বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, হাজার হাজার রোহিঙ্গা নারী, পুরুষ এবং শিশু একটি ব্যাপক ও পরিকল্পিত আক্রমণের শিকার হয়েছেন। যা মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের সমান।’ বাংলাদেশে পালিয়ে আসা ১২০ জন রোহিঙ্গা নারী এবং পুরুষের সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে এই প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে।

বিবৃতিতে অ্যামনেস্টি আরও বলেছে, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের রোম চুক্তিতে ১১ ধরনের অপরাধকে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। রাখাইন রাজ্যের সহিংসতায় এধরনের ছয়টি অপরাধ চিহ্নিত করা সম্ভব হয়েছে। এগুলো হচ্ছে খুন, বলপূর্বক নির্বাসন, নির্যাতন, ধর্ষণ, নিপীড়ন এবং অন্যান্য অমানবিক কর্মকাণ্ড।সবচেয়ে নৃশংস অপরাধের প্রত্যক্ষদর্শীরা এসব তৎপরতার জন্য মিয়ানমার সেনাবাহিনীর পশ্চিমাঞ্চলীয় কমান্ড, ৩৩ লাইট ইনফ্যান্ট্রি ডিভিশন এবং সীমান্তরক্ষা বাহিনীকে দায়ী করেছে।

অ্যামনেস্টি বলছে, তদন্তে তারা প্রমাণ পেয়েছে যে মংডুর মিন গিই গ্রাম, স্থানীয়ভাবে যার নাম তুলাতলী, এবং বুথিডং-এর কিউন পক গ্রামের কোন কোন নারীকে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর সদস্যরা ধর্ষণ করেছে। অ্যামনেস্টি যৌন সহিংসতার শিকার সাতজন রোহিঙ্গা নারীর সাথে কথা বলেছে। তাদের মধ্যে চারজন মহিলা এবং ১৫-বছর বয়সী এক কিশোরীকে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে অ্যামনেস্টির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয় যে, এখনই সময় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ব্যবস্থা নেয়ার। তাদের উচিত এই সহিংসতা বন্ধের জন্য পদক্ষেপ নেয়া। সেনাবাহিনীর সঙ্গে সহযোগিতা বন্ধ করে দিয়ে, অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা দিয়ে, নৃশংসতার জন্য টার্গেটেড ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অবরোধ দিয়ে তাদের প্রতি কড়া বার্তা দিতে হবে যে, রাখাইনে মানবাধিকারের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীর অপরাধ সহ্য করা হবে না। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে নিশ্চিত করতে হবে যে, সেনাবাহিনীর এই জাতি নিধন আইনসম্মত নয়।

এ বিষয়ে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের একজন পরিচালক টিরানা হাসান বলছেন, ‘এই নৃশংস অপরাধের বিরুদ্ধে ন্যায়বিচার পাওয়ার পথে প্রথম ধাপ হচ্ছে এসব অপরাধের কথা ফাঁস করে দেয়া। যারা এসব অপরাধ করেছে তাদের অবশ্যই বিচার করতে হবে।

বিষেরবাঁশী ডেস্ক/সংবাদদাতা/হৃদয়

Categories: আন্তর্জাতিক

Leave A Reply

Your email address will not be published.