শুক্রবার ১৫ চৈত্র, ১৪৩০ ২৯ মার্চ, ২০২৪ শুক্রবার

ঢাকার চেয়ে ৩ গুন গৃহকর নারায়ণগঞ্জে

বিষেরবাঁশী ডেস্ক: নগরীর আমলাপাড়ায় এক হাজার বর্গফুটের একটি আবাসিক ভবনের এক মালিক জানান প্রতিবছর তার বাড়ির ভাড়া বাড়াতে হয়। আর এ কারণে বছরে এক দুই মাস খালিও থাকে।
সমস্যা কোথায় জানতে চাইলে মো. আলাউদ্দিন মিয়া বলেন, প্রতিবছর আমি ২০ হাজার ৯ ‘শ টাকা দিই। এই টাকা আমার ভাড়াটিয়াদের কাছ থেকেই আদায় করতে হবে। নাকি নিজের পকেট থেকে দিবো। তাই আরকি ছোট খাট ঝামেলা সৃষ্টি হয়।


জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের গৃহকর ১৯ শতাংশ হারে শুধু যে এ বাড়ির বালিকই দেন তা নায়, তারমতই এনসিসি’র প্রায় ১ লাখ ৭২ হাজার বাড়ির মালিক এই হারে গৃহকর দিচ্ছেন। যেখানে এক হাজার বর্গফুটের একটি আবাসিক ভবনে ১২ শতাংশ হারে ঢাকা উত্তর-দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বাসিন্দারা দিচ্ছে ৬ হাজার থেকে ৭ হাজার ৬৮০ টাকা, খুলনায় সেটা ১০ হাজার ৪‘শ টাকা, আবার রংপুরে ১১ হাজার ৪০টা। সেখানে ঢাকার চেয়ে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের বাসিন্দাদের গুনতে হচ্ছে প্রায় ৩ গুন গৃহকর। এবিষয়ে নাগরীক কমিটির সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান বলেন, ১৯ শতাংশ হারে গৃহকর দিতে হচ্ছে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনকে। আমার মতে এটা একটু বেশি। তবে যেহেতু সকলেই দিচ্ছে, আর কর নির্ধারণের সময় কেউ প্রতিবাদ করেনি, তাই মেয়রের কাছে দাবি করবো তিনি যেন বিষয়টি বিবেচনা করে দেখেন।
আমরা নারায়ণগঞ্জবাসীর সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন মন্টু বলেন, বিষয়টিতে আমি অবগত আছি। আগামীকাল (রোববার) নগর ভবনে গিয়ে আলোচনা করে, তারপর মন্তব্য করবো।
করবিধিতে বলা আছে, বাৎসরিক গৃহকর নির্ধারিত হবে স্থাপনার ভাড়ার ভিত্তিতে। আর তা হবে বাড়ির মালিক ও ভাড়াটের মধ্যে সম্পাদিত চুক্তি অনুযায়ী। কিন্তু কার্যকর বাড়িভাড়া নিয়ন্ত্রণ আইন না থাকায় ভাড়ার ভিত্তিতে গৃহকর নির্ধারণ কতটা গ্রহণযোগ্য, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। সিটি করপোরেশন মিউনিসিপ্যাল ট্যাক্সেশন রুলস (করবিধি), ১৯৮৬ এবং আদর্শ কর তফসিল, ২০১৬ অনুযায়ী গৃহকর আদায় করতে পারবে। এর মধ্যে ইমারত বাবদ ৭ শতাংশ, ময়লা নিস্কাশন ৭ শতাংশ, সড়কবাতি বাবদ ৫ শতাংশ, পানি সরবরাহের জন্য ৩ শতাংশ এবং স্বাস্থ্য কর ৮ শতাংশ। পানি সরবরাহের কাজ ওয়াসা করে বলে সিটি করপোরেশন পানি সরবরাহের কর নিচ্ছে না।
করবিধি অনুযায়ী, যেকোনো স্থাপনার মোট বার্ষিক ভাড়া থেকে দুই মাসের ভাড়া বাদ যাবে রক্ষণাবেক্ষণ খরচ হিসেবে। বাকি ১০ মাসের ভাড়া ওপর কর নিধারণ করা হয়। ভবনের মালিক যদি ঘর ভাড়া না দিয়ে শুধু নিজেই বসবাস করেন, সেই ক্ষেত্রে আরো ৪০ শতাংশ ছাড় দেওয়া হয়। কোনো সিটি করপোরেশন সর্বোচ্চ কত শতাংশ গৃহকর নিতে পারবে। তা আদর্শ কর তফসিলে বলা আছে। সেই সীমার মধ্যে করের হার নির্ধারেণ স্বাধীনতা সিটি করপোরেশনের রয়েছে। ফলে সিটি করপোরেশন নিজেদের মতো করে গৃহকরের হার নির্ধারণ করছে।
তবে এবিষয়ে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এএফএম এহতেশামূল হকের টেলিফোন নম্বরে একাধীকবার ফোন করলেও তিনি তা রিসিভ করেনি।

বিষেরবাঁশী ডেস্ক/সংবাদদাতা/হৃদয়

Categories: নারায়ণগঞ্জের খবর,সারাদেশ

Leave A Reply

Your email address will not be published.