বৃহস্পতিবার ১৪ চৈত্র, ১৪৩০ ২৮ মার্চ, ২০২৪ বৃহস্পতিবার

একজন মূর্খ অটোচালকের ইংরেজী ম্যাসেজে লুকিয়ে আছে শুভ্র হত্যাকাণ্ডের রহস্য

 

  • নিজস্ব সংবাদদাতা, নারায়ণগঞ্জ

মাসদাইরের প্লামি ফ্যাশনে মার্চেন্ডাইজার শাখাওয়াত হোসেন শুভ্র খুন হওয়ার সাত দিন পর মামলা নিয়েছে ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশ। পোষ্ট মর্টেম রিপোর্টে খুনের আলামত পাওয়ার পর শুভ্র’র পিতা শাহাদাত হোসেন শিকদার বাদী হয়ে ৭ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরো ২/৩ জনকে আসামী করে গত মঙ্গলবার ২২ তারিখ রাতে মামলাটি দায়ের করেন। মামলা নং ৮১।

থানা সূত্রে জানা যায়, মামলায় মোট সাত জনকে আসামী করা হয়। আসামীরা হলো বাবুল সাহা জীবন, নাজমুল ইসলাম, সঞ্জয় দাশ মনা, মিলন, বশির, সমীর, কাউসারসহ অজ্ঞাত আরো ২/৩ জন। মামলার বিবরনে বাদী শাহাদাত হোসেন শিকদার উল্লেখ করেন, ১৫ আগষ্ট সন্ধ্যায় আসামী জীবনসহ আরো কয়েকজন মিলে তার পুত্র শাখাওয়াত হোসেন শুভ্রকে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে যায় আদর্শ স্কুলের পাশে মায়ের আচল নামে একটি নির্মাণাধীন ভবনে। এরপর আমার ছেলেকে নারায়ণগঞ্জ ৩০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে মৃত অবস্থায় পাই। শুভ্র’র ময়না তদন্ত রিপোর্টে শ্বাসরুদ্ধধ করে হত্যার কথা উল্লেখ করা হয়। সেই সাথে মাথার পিছনে ধারালো অস্ত্রেও আঘাতসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখমের চিহ্ন পাওয়া যায়।

মামলায় আরো উল্লেখ করা হয় পুলিশ হেফাজতে থাকা আসামী জীবনের কছে নিহত শুভ্র’র মোবাইল ও মানিব্যাগ উদ্ধার করা হয়। তবে মোবাইলের সিম কার্ড, মেমোরী কার্ড ও জরুরী কিছু কাগজপত্র পাওয়া যায়নি।

মামলার বাদী শাহাদাত হোসেন শিকদার বলেন, “আমি ছেলে হত্যার বিচার চাই। কোন প্রভাবশালী মহলের কারনে যাতে মামলা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত না হয়, সে ব্যাপারে প্রশাসনের কঠোর নজরদারী কামনা করছি।”

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তুষার কান্তি দাশ ভাষ্য ,” মামলাটি পেয়েছি। আমরা তদন্ত কাজ শুরু করবো।”

মামলার গ্রেফতারকৃত তিন আসামী নাজমূল, মনা ও জীবনকে বুধবার আদালতে হাজির করা হলে বিচারক তাদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণ করার আদেশ দেন।

বাদী পক্ষের আইনজীবী এড. সাখাওয়াত হোসেন খান বলেন, পোষ্ট মর্টেম রিপোর্টে খুনের আলামত পাওয়া গেছে। শুভ্রকে পরিকল্পিতভাবে খুন করা হয়েছে। আমি চাই শুভ্র হত্যার প্রকৃত রহস্য উদঘাটন হোক। আমি সব সময় শুভ্রর পরিবারের পাশে থাকবো।   গত বৃৃৃহস্পতিবার আদালত আসামিদের কে ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে । রবিবার আসামীদেরকে আদালতে হাজির করা হবে ।

গ্রেফতারকৃত ৩ আসামীর মধ্যে একজন অটো চালক একজন গার্মেন্টস এর কাটিং মিস্ত্রি।

আটো চালক ও কাটিং মিস্ত্রি নিখুদ পূর্ব পরিকল্পনা করে হত্যাকাণ্ডটি সমাপ্ত করেছে বলে পরিবারের সদস্যদের দাবি। নিহতের ভাই রাশেদুল হক জানান, একজন অটোচালক যে কিনা ঠিক মতো নিজের নাম লিখতে পারেনা সে কিভাবে হত্যাকাণ্ডের আগে ইংরেজীতে নিহতের মোবাইলে ম্যাসেজ পাঠায়।  “Money is nothing, men power is everything ” আর “Kawsor Vai ur awesome, are u sure” এই দু’টি ম্যাসেজকে ঘিরে হত্যাকাণ্ডের রহস্য লুকিয়ে আছে বলে রাশেদুল আরও জানান।

উল্লেখ্য, শাহাদাত হোসেন শুভ মাসদাইর নিবাসী শিকদারের বড় ছেলে সাউথ ইস্ট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ শেষ করে সদ্য বিবাহ বন্ধনে আবধ্য হয়েছিল। সে  প্লামি ফ্যাশনে মার্চেন্ডাইজার হিসেবে কর্মরত ছিল। গত  ১৫ আগষ্ট শাখাওয়াত হোসেন শুভ’র লাশ নারায়ণগঞ্জ ৩০০ শয্যা হাসপাতালে ফেলে রেখে পালিয়ে যায় আসামী মিলন ও বশির । পুলিশ সন্দেহভাজন হিসেবে মাসদাইরের নাজমুল, জীবন ও মনাকে গ্রেফতার করে ৫৪ ধারায় আদালতে প্রেরণ করে ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশ।

আর হত্যাকান্ডের দিন ফতুল্লা মডেল থানার ওসি (তদন্ত) শাহজালাল স্বীকার করেছিলেন, ‘ধারনা করা হচ্ছে শুভকে হত্যা করা হয়েছে। নিহতের মুখে আঘাতের চিহৃ রয়েছে।’

অনলাইন ডেস্ক/ক্যানি

Categories: অপরাধ ও দুর্নীতি,নারায়ণগঞ্জের খবর

Leave A Reply

Your email address will not be published.