পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমী উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখা ও শ্রী শ্রী গৌর নিতাই বিগ্রহ মন্দিরের উদ্দ্যোগে শ্রী শ্রী গৌর নিতাই বিগ্রহ মন্দির হতে এক বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়।
হিন্দু মহাজোটের র্যালী শুভ উদ্ভোধন করেন কেন্দ্রীয় সিনিয়র সহ-সভাপতি ও হিন্দু হেরিটেজ ফাউন্ডেশনের সেক্রেটারী জেনারেল বিশিষ্ট মানবাধিকার কর্মী মানিক চন্দ্র সরকার ।অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, হিন্দু মহাজোট নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি সাংবাদিক সুভাষ সাহা,সাঃ সম্পাদক সম্পাদক এড.রঞ্জীত চন্দ্র দে , সাংগঠনিক সম্পাদক প্রদীপ মন্ডল ,দপ্তর সম্পাদক গোপাল চন্দ্র মন্ডল ,প্রচার সম্পাদক শ্যামল দাস,সহ প্রচার সম্পাদক সঞ্জিত মন্ডল,ধর্মবিষয়ক সম্পাদক শিবু ভট্টাচার্য্য,মহিলা সম্পাদীকা শ্যামলী দাস,আরও উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ হিন্দু যুব মহাজোটের বন্দর উপজেলা সভাপতি রঞ্জিত দাস,প্রচার-সম্পাদক রতন দাস,নাঃ গঞ্জ জেলা হিন্দু ছাত্র মহাজোটের সভাপতি অজয় কুমার বিশ্বাস, বন্দর উপজেলা সভাপতি বিনয় কুমার মন্ডল,সাঃ সম্পাদক পার্থ সারথী দাস প্রমুখ।
শোভাযাত্রাটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষীন করে পূনরায় গৌর নিতাই বিগ্রহ মন্দিরে এসে সমাপ্ত হয়। র্যালী শেষে নেতৃবৃন্দ দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনায় পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের নিকট প্রার্থনা করেন এবং বলেন ভগবান শ্রীকৃষ্ণ ভাদ্র মাসের কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী তিথিতে রোহিনী নক্ষত্রে কংসের কারাগারে দৈবকীর কোলে আবির্ভূত হয়েছিলেন। শাস্ত্রে দেখা যায়, এই আবির্ভাব ছিল বসুদেব দৈবকীর প্রতি ভগবানের তৃতীয় বারের প্রতিজ্ঞা পালন।অষ্টমী তিথি দৈবকীর অষ্টম গর্ভে জন্ম নিয়েছিলেন বলে এই জন্মতিথির নাম ‘জন্মাষ্টমী’ তিথি। আর এ উপলক্ষে যে উৎসব তাই ‘জন্মাষ্টমী উৎসব’। ভগবানশ্রীকৃষ্ণ যখন অত্যাচারী কংসের কারাগারে জন্ম নিয়েছিলেন তখন কংসের অত্যাচারে সমগ্র এলাকায় মহা ত্রাসের লক্ষণ দেখা দিয়েছিল।ভগবান শ্রীকৃষ্ণ কংসকে হত্যা করে ধরণীকে অসুর ভার মুক্ত করেছিলেন। শ্রী কৃষ্ণের আবির্ভাব সম্পর্কে ভগবত গীতায় আছে ‘‘যদা যদাহি ধর্মস্য গ্লানি ভবতি ভারত। অভ্যুথানম অধর্মস্য তদাত্মনং সৃজম্যহম। পরিত্রাণায় সাদুনাং বিনাশায়া দুষ্কৃতাম।ধর্ম সংস্থাপনায় সম্ভাবামি যুগে যুগে।’‘‘অর্থাৎ যুগে যুগে পৃথিবীতে ধর্মের গ্লানি ও অধর্মেরমাত্রা বৃদ্ধি হয়ে থাকে।
সে জন্য যুগে যুগে পৃথিবীতে অবতীর্ণ হয়ে সাধুদের রক্ষা, পাপীদের বিনাশ ও ধর্ম স্থাপনের জন্য ভগবান অবতাররূপে অবতীর্ণ হন।’’ ভগবান শ্রীকৃষ্ণ মানব দেহ ধারণ করে ১২৫ বৎসর জীবিত ছিলেন। তাঁর এই জীবনকালকে বিন্যস্ত করলে দেখা যায়-‘‘মথুরায় তাঁর জন্ম গোকূলে নন্দালয়ে পরিবর্ধন, মথুরায় কংসবধ রাজ্যাধিকার কুরুক্ষেত্রে পান্ডবদের সখা এবং দ্বারকায় রাজধানী স্থানান্তর ও লীলাবসান।’’ সনাতনী সমাজে শ্রী কৃষ্ণের অন্যতম শ্রেষ্ঠ অবদান শ্রীমদভগবত গীতা।শাস্ত্রে শ্রীভগবান বলে কীর্তিত হলেও সমসাময়িক সমাজ জীবনে সকলের নিকট তাঁর ঈশ্বরতত্ত্বের প্রকাশ ঘটে নি। বাল্যলীলায় পুতনাবধ, দাম বন্ধনলীলা, কালীয়দমন,গোবর্ধন ধারণ প্রভৃতি কার্যের মধ্য দিয়ে শ্রীকৃষ্ণের অলৌকিক শক্তির পরিচয় মেলে। এছাড়া মুষ্ঠক ও চানুর নামক দুই ল্লযোদ্ধার নিধন, কংসবধ, বকাসুর বধ, অকাসুর বধ,শিশুপাল বধপ্রভৃতি ঘটনার মধ্য দিয়ে শ্রীকৃষ্ণের ঐশ্বরিক শক্তিরপ্রকাশ লক্ষ্য করা গেছে।তবে কুরুক্ষেত্রে সমরাঙ্গনে যুদ্ধবিমুখ উদ্বুদ্ধ করার জন্য নিজেকে তিনি ভগবান বলে পরিচয় দিয়েছেন। মহাভারতে, গীতা, ভগবত ও বৈষ্ণবীয় পুরাণ সমূহে শ্রী কৃষ্ণের ঐশ্বরত্ব সুপ্রতিষ্ঠিত এবং ভক্তজনের নিবিড় সাধনায় পরম ইশ্বর হিসেবে তিনি পূজিত।
সিএ/ক্যানি