অনলাইন ডেস্ক: পিপিই কেলে’ঙ্কারি থেকে শুরু করে কিট বাণিজ্য এইসব স্বাস্থ্যখাতে করোনা সং’কটের সময় থেকেই একের পর এক দুর্নীতির খবর আসছে। যেখানেই হাত দেওয়া যাচ্ছে সেখান থেকেই দুর্নীতির খবর পাওয়া যাচ্ছে। বাজার মূল্যের থেকে কয়েকগুণ বেশি দামে কেনাকাটা করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, কোন প্রকার টেন্ডার ছাড়া কোন এক বিশেষ ঠিকাদারকে দিয়ে এসব কেনাকাটার অভিযোগও গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।
এসব কারনে হার্ডলাইনে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী- এমনটা শোনা যাচ্ছিল বেশ কিছুদিন ধরেই। অবশেষে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে বিত’র্কিত সেই সব স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রীর বিল পেমেন্ট করা হয়নি। এই ব্যাপারে তাঁর কঠোর নির্দেশে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দিয়েছে।
গতকাল ৩০ জুন ছিল হিসেব বিভাগের বিল সংক্রান্ত কাজকর্ম শেষ করার দিন। জানা গেছে, করোনা সং’কটের সময় যারা বিত’র্কিত স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী সরবরাহ করেছে, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে তাদের বিল আপাতত পেমেন্ট না করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে, করোনা সং’কটে স্বাস্থ্যখাতে প্রায় ৫০০ কোটি টাকার বেশি লু’টপাটের অভিযোগ উঠেছে। এর মধ্যে রয়েছে;
বিজ্ঞাপনটি দেখতে ক্লিক করুন
পিপিই এবং মাস্ক কেলে’ঙ্কারি
যে সমস্ত মাস্ক এবং পিপিই সরবরাহ করা হয়েছিল তা ছিল নিম্নমানের এবং এই ব্যাপারে বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ করা হয়েছিল। আসল এন-৯৫ মাস্ক সরবরাহ না করে নিম্নমানের মাস্ক সরবরাহ করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী গত এপ্রিল মাসেই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে সুনির্দিষ্টভাবে বলেন, যারা এইগুলো সরবরাহ করেছে তারা সঠিকভাবে সরবরাহ করেছে কি না তা খতিয়ে দেখার জন্য। কিন্তু এরপরেও বিভিন্ন জায়গায় নিম্নমানের মাস্ক এবং পিপিই সরবরাহ করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এরপর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে জানানো হয়েছে, যারা এই ধরণের বিত’র্কিত সুরক্ষা সামগ্রী (পিপিই এবং মাস্ক) সরবরাহ করেছে তাদেরকে যেন বিল পেমেন্ট না করা হয় এবং এই ব্যাপারে যেন সুষ্ঠ তদন্ত করা হয় সে ব্যাপারে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশনায় এই বিলগুলো এখনো পেমেন্ট হয়নি।
আরটি-পিসিআর মেশিন কেলেঙ্কারি
করোনা সং’কটের সময় দ্বিতীয় যে দুর্নীতির অভিযোগটি আলোচিত হয়েছে তা হলো আরটি-পিসিআর মেশিন কেলে’ঙ্কারি। যখন করোনা সং’ক্রমণ শুরু হলো তখন মাত্র একটি মেশিন দিয়ে কাজ হচ্ছিল। প্রধানমন্ত্রী যখন সবগুলো জেলায় করোনার নমুনা পরীক্ষার নির্দেশ দিলেন তখন স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ২০০৯ এর মেশিন ক্রয় করলো। এই মেশিনগুলো কম কার্যকর, কম নমুনা পরীক্ষা করা যায় এবং এখন এই মেশিনগুলো ব্যবহারের ক্ষেত্রে কিটের সং’কট দেখা গেছে। এই বিষয়টিও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নজরে এসেছে এবং এই বিলগুলো আটকে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
জেকেজি কেলেঙ্কারি
করোনা সং’কটের সময় বিনামূল্যে করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা করেছিল সরকার এবং সেই কাজে সহযোগিতা করার জন্য ভুঁইফোড় এক প্রতিষ্ঠান জেকেজিকে সব ধরণের সুযোগ সুবিধা দিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এই সমস্ত বিষয়গুলো নিয়েও এখন তদন্ত হচ্ছে। জেকেজিকে যা যা সরবরাহ করতে দেওয়া হয়েছে সেসব জিনিসের বিল আপাতত স্থ’গিত রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এডিবি এবং বিশ্বব্যাংকের প্রকল্পে দুর্নীতি
এডিবি এবং বিশ্বব্যাংকের প্রকল্পের প্রধান ছিলেন ছাত্রদলের সাবেক নেতা ডা. ইকবাল কবির এবং তিনি পিপিই এবং মাস্ক কিনেছেন যা ইচ্ছা দাম দিয়ে। এখানেও ব্যাপক পরিমাণ দুর্নীতি হয়েছে। যদিও এটা এডিবি এবং বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নের টাকা, তবে এখানে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ আছে। এই বাস্তবতায় এই সংক্রান্ত জিনিসপত্র যারা সরবরাহ করেছে সেই সরবরাহকারী বা ঠিকাদারগুলোকেও বিল দেওয়া হচ্ছেনা।
করোনায় যে সমস্ত ঠিকাদারদের দিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কাজ করিয়েছে তাদের একটি সিন্ডিকেট আছে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় এই অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখার নির্দেশনা দিয়েছে। সুনির্দিষ্ট অভিযোগের সুরাহা না হওয়া পর্যন্ত এই সিন্ডিকেটের কেউই বিল পাচ্ছেনা বলে জানিয়েছে হিসেব রক্ষণ বিভাগ।
সূত্র: সময় এখন
বিষেরবাশিঁ.কম/ডেস্ক/মৌ দাস