অনলাইন ডেস্ক: সুনামগঞ্জে জেলার ১১টি উপজেলায় টানা বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে।
জেলার বিভিন্ন উপজেলার লাখো মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা।
আজ রবিবার (২৮ জুন) সকাল ৯টায় সুরমা নদীর পানি বিপদসীমার ৭০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সুরমা নদীর পানি তীর উপচে প্রবেশ করেছে শহরের বিভিন্ন এলাকায়।
সুনামগঞ্জ-তাহিরপুর সড়কে সরাসরি যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়েছে। এছাড়া সুনামগঞ্জ-ছাতক উপজেলার যান চলাচলও বন্ধ রয়েছে। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত করা হয়েছে আশ্রয় কেন্দ্র।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, সুনামগঞ্জে গত কয়েকদিন থেকে টানা বৃষ্টি হচ্ছে। একইভাবে বৃষ্টি হচ্ছে সুনামগঞ্জের উজানে ভারতের চেরাপুঞ্জিতে। চেরাপুঞ্জিতে গত ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টিপাত হয়েছে ৪৯৫ মিলিমিটার। আর সুনামগঞ্জে গত ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা ১৯০ মিলিমিটার।
বিজ্ঞাপনটি দেখতে ক্লিক করুন
ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে জেলার সদর, বিশ্বম্ভরপুর, তাহিরপুর, ছাতক ও দোয়ারাবাজার ও জামালগঞ্জ উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে।
এসব এলাকার নিম্নাঞ্চলের লাখো মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ছেন। ছাতক উপজেলার পৌর শহরের কিছু এলাকা এবং উপজেলার আরও পাঁচটি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা পরিষদ ভবন, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রাঙ্গণ ও হাটবাজার প্লাবিত হয়েছে। তাহিরপুর উপজেলার কয়েক শতাধিক গ্রামের মানুষ নতুন করে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এছাড়া প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা।
এদিকে সুনামগঞ্জ পৌর শহরের মধ্যবাজার, উকিলপাড়া, কাজীর পয়েন্ট, মাছবাজার, সবজিবাজার, ষোলঘর, নবীনগর, বড়পাড়া, মল্লিকপুর, ওয়েজখালী এলাকায় সুরমা নদীর তীর উপচে ঢলের পানি প্রবেশ করেছে। এসব এলাকায় কিছু কিছু মানুষের ঘরেও পানি প্রবেশ করেছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের সুনামগঞ্জ কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সবিবুর রহমান জানান, সুনামগঞ্জে ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। একই সঙ্গে উজান থেকে ব্যাপক পরিমাণে ঢল নামছে। এ কারণে নদী ও হাওরে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত আছে। যেহেতু উজানে চেরাপুঞ্জিতে প্রচুর বৃষ্টি হচ্ছে এ কারণে পানি আরও বাড়বে।
জেলা প্রশাসক মো. আব্দুল আহাদ জানান, জেলার বন্যায় প্রায় ৫০ হাজার পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব পরিবারদের ত্রাণ পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় ১৪৮টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
পানিবন্দি মানুষদের জন্য ৪১০ মেট্রিক টন চাল এবং নগদ প্রায় ৩০ লাখ টাকা দেয়া হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন উপজেলায় বন্যা আশ্রয় কেন্দ্রের পাশাপাশি সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।
সূত্র: দেশ রূপান্তর
বিষেরবাশিঁ.কম/ডেস্ক/মৌ দাস