মঙ্গলবার ৩ বৈশাখ, ১৪৩১ ১৬ এপ্রিল, ২০২৪ মঙ্গলবার

নূরুল ইসলাম নাহিদ, আপনি কত বড় মন্ত্রী ?

 

  • কামাল পাশা চৌধুরী

মাধ্যমিক পর্যায়ে চারুকলা শিক্ষার পরীক্ষা বা মূল্যায়ন বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এটা যে দেশের বা জাতির জন্য একটি আত্মঘাতি সিদ্ধান্ত, সকল শিল্পী এবং দু’একজন ছাড়া দেশের পুরো বুদ্ধিজীবী মহল তাতে একমত। বিষয়টি নিয়ে হৈ চৈ বা আন্দোলন করে আমরা এতদিন সরকারকে বিব্রত করতে চাইনি, কারণ আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস ছিল সরকার বিশেষ করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে কোনও স্বার্থান্বেষি মহল বিষয়টা নিয়ে ভুল বুঝিয়েছে, যা থেকে আলোচনার মাধ্যমে সহজেই উত্তরণ ঘটানো সম্ভব।
এই বিবেচনায় দেশের প্রক্ষ্যাত চিত্রশিল্পীদের আট জনের একটি ক্ষুদ্র দল মাননীয় শিক্ষামন্ত্রীর সাথে সাক্ষাতের উদ্দ্যোগ গ্রহন করেন। দেশ বরেণ্য শিল্পী হাশেম খান, রফিকুন নবী, মুস্তফা মনোয়ার, আবুল বারক আলভীসহ আটজনের নাম উল্লেখ করে শিক্ষামন্ত্রীর কাছে সাক্ষাতের সময় চেয়ে লিখিত আবেদন করা হয় গত তিন মাস আগে। কিন্ত সেই সাক্ষাতের সময় অদ্যাবধি দিতে পারেননি আমাদের মহাব্যস্ত মন্ত্রী। তাঁর দপ্তরে যোগাযোগ করা হয়েছে তিন মাসে তিরিশ বার। পরীক্ষা, রোজা, ঈদ, অসুস্থতা ইত্যাদি নানা রকম ব্যস্ততা দেখিয়ে প্রতিবারই বলা হয়েছে পরের সপ্তাহে সময় দেবেন। কিন্ত সেই পরের সপ্তাহের আর শেষ আসেনি।


আজ শেষবার যোগাযোগ করে ব্যর্থ হয়ে আমরা এই বৃথাচেষ্টা থেকে বিরত হয়েছি। ইতিহাসের বিরল প্রজাতির এই মন্ত্রীর সাথে সাক্ষাতের চেষ্টা শিল্পী সমাজ এখন নিজেদের অসম্মান বলে মনে করছে। এখানে উল্লেখিত শিল্পীগণ চাইলে মাননীয় প্রধান মন্ত্রীও তাদের বিমুখ করতেননা বলে আমরা জানি।
তাই আজ বলতে বাধ্য হচ্ছি, চারুকলাকে পাঠ্যক্রম থেকে বাদ দেয়ার ষড়যন্ত্রের সাথে যদি আপনিও সামিল থেকে থাকেন মহামান্য মন্ত্রী মশাই তবে শুনুন, জাতীয় শিক্ষা ও সংস্কৃতির বিরুদ্ধে গৃহীত এই চক্রান্ত বাস্তবায়নের ক্ষমতা আপনার হবেনা। এ রকম চক্রান্ত এই জাতি অতীতে অনেক প্রতিহত করেছে। শিল্পীদের ক্ষমতা কতটুকু তা’ এবার আপনি দেখবেন। শুধু শেষবার বলতে চাই, আপনি যাদের অপমান করেছেন সেই মহান শিল্পীদের নখের সমানও আপনি না। আপনার মত মন্ত্রী এ দেশে গন্ডায় গন্ডায় জন্মাবে। আর শিল্পী হাশেম খান, রফিকুন নবী, মুস্তফা মনোয়ারের মত ক্ষণজন্মা সন্তান বহুযুগ অপেক্ষার পর জাতি কখনও কখনও পায়। বেশি নয়, গত পঞ্চাশ বছরে এ দেশে যত মন্ত্রী হয়েছেন দু’চারজন ব্যতিক্রম ছাড়া তাঁদের কয়জনের নাম আজ মানুষ জানে ? অনেকের কবর কোথায়, সে খোঁজটাও কেউ রাখেনা। আর আপনি যাদের অপমান করলেন এই শিল্পীদের নাম যুগে যুগে মানুষ মনে রাখবে।তাদের নিয়ে গবেষণা করবে, থিসিস লিখবে। শতাব্দীর পর শতাব্দী আগামী প্রজন্ম টিকেট কেটে লাইন দিয়ে যাদুঘরে ঢুকবে তাঁদের শিল্পকর্ম দেখার জন্য।  (কামাল পাশার ফেসবুক পোষ্ট থেকে)

এস/ক্যানি

Categories: শিক্ষা,সারাদেশ

Leave A Reply

Your email address will not be published.