শুক্রবার ৬ বৈশাখ, ১৪৩১ ১৯ এপ্রিল, ২০২৪ শুক্রবার

পেঁয়াজের কেজি ৪৫ টাকা পাতাসহ

অনলাইন ডেস্ক: শীতকালীন আগাম সবজিতে ভরপুর বাজারটি। জমে উঠেছে মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার জয়মন্ডপ বাজার। কিন্তু সবজি বাজারে যে পণ্যটিকে সবাই ঘিরে ধরেছে তার নাম পেঁয়াজ। কৃষকরা ঝুড়িতে করে বাজারে পেঁয়াজ আনতেই ব্যাপারি ও ক্রেতারা যেন হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন। মঙ্গলবার সকালে জয়মন্ডপ বাজারে এমন চিত্র দেখা গেছে। রাজধানী থেকে মাত্র ২৭ কিলোমিটার দূরের এই বাজারে দুই সপ্তাহ ধরে পাওয়া যাচ্ছে নতুন পেঁয়াজ। দাম বেশি পাওয়ায় চাষিরা ক্ষেত থেকে অপরিপক্ব পেঁয়াজ তুলেই বাজারে পাঠাচ্ছেন। স্থানীয় বাজারে পাতাসহ এই পেঁয়াজ কেজি প্রতি ৪৫ থেকে ৫০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। উপজেলার জয়মন্ডপ ইউনিয়নের নয়াডাঙ্গী গ্রামের কৃষক কেরামত আলী। এ বছর এক বিঘা জমিতে চাষ করেছিলেন আগাম জাতের পেঁয়াজ। বাজারে ভালো দাম থাকায় এবার আগে ভাগেই ক্ষেত থেকে পেঁয়াজ তুলছেন তিনি। অর্ধেক জমির পেঁয়াজ প্রায় ৫০ হাজার টাকা বিক্রি করেছেন। পেঁয়াজের ভালো দামে তিনি বেশ খুশি।
কেরামত আলীর মতো জয়মন্ডপ ইউনিয়নের অনেক কৃষক পেঁয়াজের ঊর্ধ্বমুখী দামের সুযোগ নিচ্ছেন। পরিপক্ব হওয়ার আগেই পেঁয়াজ তুলে বাজারে পাঠাচ্ছেন। কৃষক দুলাল শেখ জানান, দাম ভালো থাকার কারণেই তারা ক্ষেত থেকে আগে ভাগেই পেঁয়াজ তুলছেন। অনেকে এই পেঁয়াজটা দুই সপ্তাহ পর তুলবেন। আবার ক্ষেত থেকে পাকিয়েও তুলবেন অনেকে। গত বছর এই সময় পেঁয়াজের দাম ছিল মাত্র ১৫ টাকা কেজি। বর্তমানে কাঁচা পেঁয়াজই ৪৫ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজারে বেশ চাহিদা। নিয়ে যাওয়া মাত্রই বিক্রি হয়ে যায়।
চর দুর্গাপুর গ্রামের কৃষক আছর উদ্দিন জানান, আশ্বিন মাস থেকে তারা পেঁয়াজ আবাদ শুরু করেছেন। আগাম এই পেঁয়াজ মুড়ি জাতের। দেখতে মুড়ির মতো। ছোট ছোট দানা হয়। তবে ঝাঁঝ অনেক। শুকনো পেঁয়াজের চেয়ে স্বাদেও ভালো। এ কারণেই অনেক চাহিদা বাজারে। তিনি জানান, গত বছর এই সময় প্রতি কেজি পেঁয়াজ তারা বিক্রি করেছেন মাত্র ১৫ টাকা কেজিতে। এ কারণে অনেকেই আগাম পেঁয়াজ চাষ করেননি। তবে যারাই করেছেন তারাই এবার লাভবান। স্থানীয় উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মাসুদুজ্জামান জানান, ভৌগোলিক কারণে কিছুটা উঁচুতে অবস্থিত জয়মন্ডপ ইউনিয়ন। তাই রবিশস্য বা শীতকালীন আগাম সবজি চাষ করেন এখানকার কৃষকরা। এখানকার সবজি রাজধানীর কারওয়ান বাজারসহ বিভিন্ন বাজারে যায়। এবার মুড়ি জাতের পেঁয়াজ চাষ করে কৃষকরা বেশ লাভবান হয়েছেন। স্থানীয় বাজারগুলোতেও অনেকটা স্বস্তি ফিরেছে। যেখানে শুকনো পেঁয়াজ ১২০ থেকে ১৩০ টাকা কোজিতে বিক্রি হচ্ছে, সেখানে প্রতি কেজি পাতা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে মাত্র ৪৫-৫০ টাকা দরে।
অপরিপক্ব পেঁয়াজ তুলে বাজারে পাঠানোয় পেঁয়াজের লক্ষ্যমাত্র পূরণে কোনো ব্যাঘাত ঘটবে কি-না? এমন প্রশ্ন ছিল সিংগাইর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা টিপু সুলতান স্বপনের কাছে। তিনি জানান, অস্থির বাজারে দেশীয় পেঁয়াজের জোগান এটা ভালো একটা দিক। মানুষ অর্ধেক দামে পেঁয়াজ কিনতে পারছেন। কৃষকরাও লাভবান হচ্ছেন। তাছাড়া পাতা পেঁয়াজ ওঠানোর পর কৃষকরা সেই জমিতে পুনরায় পেঁয়াজ চাষ করবেন। তাই পেঁয়াজ উৎপাদনে লক্ষ্যমাত্রা পূরণে কোনো ব্যাঘাত ঘটবে না। সূত্র: জাগোনিউজ২৪.কম বিষেরবাঁশি.কম/সংবাদদাতা/নাদিম

Categories: জাতীয়,সারাদেশ

Leave A Reply

Your email address will not be published.