মঙ্গলবার ৫ চৈত্র, ১৪৩০ ১৯ মার্চ, ২০২৪ মঙ্গলবার

অপরাধী-দুর্নীতিবাজ যত বড় হোক, নিজ দলের হলেও ছাড় দেবো না: প্রধানমন্ত্রী

অনলাইন ডেস্ক: জাতীয় সংসদ অধিবেশনে অধিবেশনে বুধবার (১২ জুন) প্রধানমন্ত্রীর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘অপরাধী-দুর্নীতিবাজ যত বড়ই হোক, এমনকি দলের হলেও কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে।’ একইসঙ্গে অপরাধ ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য মেজর জেনারেল (অব) রফিকুল ইসলাম এবং বিরোধী দল জাতীয় পার্টির রওশন আরা মান্নানের আলাদা দু’টি সম্পূরক প্রশ্নের জবাব দেন প্রধানমন্ত্রী। রওশন আরা মান্নানের প্রশ্নে ‘দুর্নীতি দমন কমিশনের অনেকেই দুর্নীতি ব্যাধিতে আক্রান্ত বলে জনশ্রুতি আছে’- এই লাইনটি বাতিল করতে রফিকুল ইসলামের প্রস্তাবের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, প্রশ্নে তিনি জনশ্রুতি আছে এ কথাটা বলেছেন। এ কথাটা বাতিল করার প্রয়োজন নেই। কারণ কথাটা একেবারে মিথ্যা নয়। আর সবাইতো একেবারে ধোয়া তুলসি পাতা নন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই গ্যারান্টি কেউ দিতে পারবে না যে, সবাই একেবারে একশ’ ভাগ সৎ। সেক্ষেত্রে উনি বলেছেন এই সংস্থার মধ্যে অনেকেই দুর্নীতিবাজ বলে জনশ্রুতি আছে। আমি মনে করি, সংস্থাকে এখন থেকে সচেতন হতে হবে। যে বা যারা কাজ করবে তাদের ব্যাপারেও সচেতন হতে হবে, যেন এমন কিছু না করেন যাতে এই ধরনের জনশ্রুতি সৃষ্টি হয়। তিনি আরো বলেন, দুর্নীতি দমনই বলেন আর খাদ্য নিরাপত্তাই বলেন, অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, এমন অনেক বড় বড় জায়গা আছে, যেখানে হাত দিলেই মনে হয় হাতটা পুড়ে যাচ্ছে এবং যারা এই কাজটা করতে যায় তারাই অপরাধী হয়ে যায়। আর কিছু কিছু পত্র-পত্রিকাতো আছেই যে এদের বিরুদ্ধে লেখা শুরু করে। সেখানেও আমাদের এ ব্যাপারে সচেতন থাকা যে, সঠিক কাজটা করেছে কি-না, সেটা দেখে বিচার করা। কোন পত্রিকায় কী লিখলো সেটা দেখা নয়। সরকারপ্রধান বলেন, রোজার সময় আমি দেশের বাইরে ছিলাম, তখন বেশ কিছু বড় জায়গায় একজন অফিসার হাত দিয়েছেন বলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হলো, যেটা আমার কাছে মোটেও গ্রহণযোগ্য ছিল না। আমি বলে দিয়েছি তাদের আগের জায়গায় বহাল রাখতে। হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যত বড় জায়গা হোক, খারাপ কিছু থাকবে না, অনিয়ম হবে না। সাধারণ ছোট-খাট সেগুলো ধরতে পারবে, বড় অর্থশালী-সম্পদশালী হলে তাদের হাত দেওয়া যাবে না, তাদের অপরাধ অপরাধ না, এটাতো হয় না। যে অপরাধী সে অপরাধী, আমার চোখে অপরাধী অপরাধীই, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এর আগে বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য রওশন আরা মান্নানের সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, চেষ্টা করি, কিভাবে দেশের মানুষের কল্যাণ করা যায়। আমি নিজেকে দেশের মানুষের সেবক হিসেবে মনে করি। প্রধানমন্ত্রী একটা দায়িত্ব, এই দায়িত্ব যথাযথ পালনের চেষ্টা করি। শেখ হাসিনা বলেন, দেশ যখন অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে যায়, উন্নয়নের পথে এগিয়ে যায়, তখন বিভিন্ন স্তরে কিছু টাউট-বাটপার শ্রেণির মানুষ তৈরি হয়। এদের শুধু আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দিয়ে দমন  করা সম্ভব হয় না। এদের সামাজিকভাবে দমন করতে হবে। জনপ্রতিনিধিসহ বিভিন্ন স্তরে যারা প্রতিনিধি আছেন, তাদের আমি বলবো সবাই মিলে এলাকায় এলাকায় কমিটি করতে, যেন কেউ অপরাধের সুযোগ না পায়। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি সবসময় বলি, অপরাধী যেই হোক, আমার দলেরও যদি হয়, ছাড় দিচ্ছি না, পাবেও না। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার শাসন ঘর থেকেই শুরু করতে হয়, আমিও তাই করছি। অন্যরা করলেও ছাড় পাবে না, আমাদের দলের কেউ অপরাধ করলে তারাও ছাড় পাবে না। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কেউ জড়িত থাকলেও আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি এবং এটি অব্যাহত থাকবে। ঘুষ গ্রহণকারীর মতো প্রদানকারীদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ঘুষ যে নেবে সেও অপরাধী, যে দেবে সেও অপরাধী। সবার বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নেবো। কেউ ছাড় পাবে না। সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দুর্নীতি-অপরাধ দমনে সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। এজন্য জনপ্রতিনিধিসহ বিভিন্ন স্তরের যারা আছেন সবাই একসঙ্গে কাজ করুন। তবেই এই অপরাধ-দুর্নীতি বন্ধ করতে পারবো। বিষেরবাঁশি.কম/ডেস্ক/মৌ দাস.

Categories: জাতীয়

Leave A Reply

Your email address will not be published.