শুক্রবার ১৫ চৈত্র, ১৪৩০ ২৯ মার্চ, ২০২৪ শুক্রবার

তিনি গণধর্ষণের শিকার হাসপাতালে ডাক্তারকে গিয়ে বললেন

অনলাইন ডেস্ক: এক নারীকে (৩২) গণধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে যশোরের শার্শায় পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) ও পুলিশের সোর্সের বিরুদ্ধে রাতের আঁধারে বাড়িতে ঢুকে । পঞ্চাশ বোতল ফেনসিডিলসহ ওই নারীর স্বামীকে গ্রেফতারের পর সোমবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে পঞ্চাশ হাজার টাকার দাবিতে বাড়িতে গিয়ে এ ঘটনা ঘটিয়েছে।

ঘটনার শিকার ওই নারী মঙ্গলবার(৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে যশোর জেনারেল হাসপাতালে সাংবাদিকদের কাছে এ অভিযোগ করেন। ভিকটিম নিজেই ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে আসেন। কিন্তু পুলিশের মাধ্যমে না আসায় তার শারীরিক পরীক্ষা করা হয়নি।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে যশোরের পুলিশ সুপার মঈনুল হক বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। যাচাই-বাছাই করে সত্যতা পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

ভিকটিম নারী অভিযোগ করেন, তার স্বামী একসময় চোরাচালানি পণ্য আনা নেয়ার কাজ করতেন। বর্তমানে ওই কাজের সঙ্গে জড়িত নেই। সর্বশেষ ২৫ আগস্ট শার্শার গোড়পাড়া পুলিশ ক্যাম্পের উপ-পরিদর্শক (এসআই) খায়রুল তার স্বামীকে আটক করে ৫০ বোতল ফেনসিডিল দিয়ে চালান দেন।

ওই নারী দাবি করেন, সোমবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে এসআই খায়রুল, পুলিশের সোর্স কামরুল, লতিফসহ বেশ কয়েকজন আমার বাড়িতে আসে। রাতে ঘরের দরজায় ধাক্কা দেয়। প্রথমে দরজা খুলতে রাজি হইনি। এক পর্যায়ে স্বামীকে ছাড়ানোর ব্যবস্থা করবে, সেই বিষয়ে কথা বলতে এসেছে, জানালে দরজা খুলে দিই। এসময় আমার কাছে ৫০ হাজার টাকা দাবি করে। এসআই খায়রুল বলেন, ৫০ হাজার টাকা দিলে মামলা হালকা করে দেবে, ৫৪ ধারার মামলা দেবে। আমি বলেছি, আটকের পর ৫০ বোতল ফেনসিডিল দিয়ে চালান দিয়েছেন। এখন বলছেন ৫০ হাজার টাকা দিলে মামলা হালকা করে দেবেন? আমি কোনো টাকা দিতে পারবো না। এতে তিনি ক্ষিপ্ত হন। এক পর্যায়ে ঘরের ভিতরে ঢুকে পুলিশের সোর্স কামরুল, এসআই খায়রুলসহ ২-৩ জন তাকে ধর্ষণ করে। বিষয়টি এলাকাবাসীকে জানালে, তারা হাসপাতালে পরীক্ষার জন্য আসতে বলে। এজন্য থানায় না গিয়ে এখানে চলে এসেছি।’

যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার আরিফ আহমেদ বলেন, বেলা ১১টার দিকে শার্শার ওই নারী জরুরি বিভাগে এসে জানান, পুলিশ কর্তৃক গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন। তখন বিষয়টি আমাকে অবগত করা হয়। ভিকটিমকে আমার দপ্তরে ডেকে ঘটনা শুনি। তাকে জিজ্ঞাসা করলে জানান, শারীরিক পরীক্ষা করাতে চান। ভর্তি হবেন না। কিন্তু ধর্ষণের ঘটনা পুলিশের রেফারেন্স ছাড়া আমরা পরীক্ষা করতে পারি না। পরে বিষয়টি কোতোয়ালি থানা পুলিশের ওসিকে অবহিত করেছি। তিনি এসে ভিকটিমকে নিয়ে গেছেন।

জানতে চাইলে যশোর কোতোয়ালি থানা পুলিশের ওসি মনিরুজ্জামান বলেন, আমরা ওই নারীকে নিয়ে আসিনি। শার্শা থানার কেস। সেখানে কথা বলেন।

শার্শা থানা পুলিশের ওসি এম মশিউর রহমান বলেন, ওই নারীর স্বামীকে ৫০ বোতল ফেনসিডিলসহ এসআই খায়রুল গ্রেফতার করেছে গত ২৫ আগস্ট। এরপর আর ওই বাড়িতে খায়রুল যায়নি। অথচ তার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ করছেন ওই নারী। কামরুল ওই নারীর স্বামীর চাচাতো ভাই। স্থানীয় রাজনৈতিক দলাদলির কারণে ওই নারীকে কেউ ইন্ধন দিচ্ছে কিনা, সেটি খতিয়ে দেখা দরকার। ওই নারীর স্বামীর বিরুদ্ধে চারটি মাদক মামলা রয়েছে। ওসি বলেন, যেহেতু অভিযোগ উঠেছে, বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।

বিষেরবাঁশি.কম/ডেস্ক/নাদিম

Categories: অপরাধ ও দুর্নীতি,সারাদেশ

Leave A Reply

Your email address will not be published.