শুক্রবার ১৫ চৈত্র, ১৪৩০ ২৯ মার্চ, ২০২৪ শুক্রবার

‘বরিশালে বেড়েছে মাছের উৎপাদন’

বিষেরবাঁশী ডেস্ক: অবৈধভাবে মাছ ধরার বিরুদ্ধে প্রশাসন কঠোর অবস্থানে থাকায় বরিশালে মাছের উৎপাদন বেড়েছে বলে দাবি করেছেন জেলা মৎস্য কর্মকর্তা তপন কুমার পাল। মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) দুপুরে ‘জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ-২০১৭’ উপলক্ষে বরিশাল মৎস্য ভবনের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দাবি করেন।

এসময় জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বলেন, ‘মৎস্য হ্যাচারি আইন-২০১০ বাস্তবায়নের লক্ষে ১৬টি হ্যাচারিকে নিবন্ধনের আওতায় আনা হয়েছে। এছাড়া মৎস্য খাদ্য আইন-২০১০ বাস্তবায়নের জন্য ৪৭টি খাদ্য বিক্রেতাকে লাইসেন্সের আওতায় আনা হয়েছে। যার ফলে মৎস খামারগুলোতে গুণগত মান সম্পন্ন খাদ্য সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে।’
এসময় সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয় ‘জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ-২০১৭’ চলবে ২৪ জুলাই পর্যন্ত। ওইদিন জাতীয় মৎস্য সপ্তাহের মূল্যায়ন সভা, পুরস্কার বিতরণ ও সমাপনী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে।

বরিশাল জেলা মৎস্য কর্মকর্তা (ইলিশ) বিমল চন্দ্র দাসসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা এসময় উপস্থিত ছিলেন।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা তপন কুমার পাল সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘বরিশাল জেলায় ২০১৫-১৬ উৎপাদন-বছরে মাছের চাহিদা ছিল ৫৩ হাজার ১২৪.০৬ মেট্রিক টন। সেখানে উৎপাদন হয়েছে ৯১ হাজার ৬৩৭.২৩ মেট্রিক টন। বেড়েছে ৩৮ হাজার ৫১৩.১৭ মেট্রিক টন মাছ। এর মধ্যে ইলিশ মাছ উৎপাদন হয়েছে ৪০ হাজার মেট্রিক টন। বিগত ২০১১-১২ সালের তুলনায় ২০১৫-১৬ তে মাছের উৎপাদন বেড়েছে অনেক।’
মৎস্য উৎপাদন বাড়ার কারণ হিসেবে অবৈধভাবে মাছ ধরায় প্রশাসনের কঠোন অবস্থানের কথা উল্লেখ করে জেলা মৎস কর্মকর্তা তপন কুমার বলেন, ‘বরিশাল জেলা ১০ উপজেলায় ২০১৬-১৭ সালের জাটকা নিধন প্রতিরোধ কর্মসূচিতে ৪৪৮টি অভিযান, ২’শটি মোবাইল কোর্ট পরিচালিত হয়। এর আওতায় ৪৪.১৫৮ মে.টন জাটকা জব্দ, ৩৫.১৯ লাখ মিটার অবৈধ জাল আটক, ৩১৯টি দায়েরকৃত মামলা, ১৩.২৯ লাখ টাকা জরিমানা এবং ৯০ জনকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া জেলা মৎস বিভাগ ২০১৬ সালের ১২ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত প্রধান প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযানে ১০ উপজেলায় ৪৭০টি অভিযান, ২১৩টি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে । এসময় ১.৫০৭ মে.টন জাটকা ইলিশ আটক, ৬.৫০৬২ লাখ মিটার অবৈধ জাল জব্দ, ১৫৩টি মামলা দায়ের, ৩.৪১৭৫ লাখ টাকা জরিমানা এবং ৮৬ জনকে জেলহাজতে পাঠানো হয়।’
অন্যদিকে ২০১৭ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত মৎস্য সম্পদ ধ্বংসকারী অবৈধ জাল ব্যবহার বন্ধকরণে বিশেষ অভিযানে ১৩৯টি অভিযান, ৫০টি মোবাইল কোর্ট পরিচালিত হয় বলে জেলা মৎস বিভাগীয় কর্মকর্তারা জানান। এসব অভিযানে ১.৩০৯ মে.টন জাটকা জব্দ, ৭.১৩৬ লাখ মিটার অবৈধ জাল, ৫৯টি মামলা, ১.৫৯ লাখ টাকা জরিমানা এবং ২৭ জনকে জেলহাজতে প্রেরণ, ১৪০টি বেহুন্দি জাল ও ১৪১টি অন্যান্য জাল উদ্ধার করা হয়।

তপন কুমার জানান, ২০১৫-১৬ বছরে ইকোফিস প্রকল্পের মাধ্যমে ১ হাজার ৫৬১ জেলেদের প্রতি পরিবারকে ৫ হাজার টাকার জাল,হাঁস-মুরগী ও ছাগল বিতরণ করা হয়। এছাড়া ২০১৬-১৭ বছরে ভিজিএফ’র সহায়তা কার্যক্রমে ৪৩ হাজার ৬৪৪ জেলেকে ৮৭২.৮৮ মে.টন চাল বিতরণ করা হয়।
ইলিশ জেলেদের দুর্যোগে মরনোত্তর সহায়তা কার্যক্রমে জেলেদের নিবন্ধন ও পরিচয়পত্র প্রদান প্রকল্পের মাধ্যমে ২০১৫-১৬ বছরে ৬ জেলে-সদস্যের প্রতি পরিবারকে এককালীন ৫০ হাজার টাকা করে নগদ টাকা দেওয়া হয়।

বিষেরবাঁশী ডেস্ক/সংবাদদাতা/হৃদয়

Categories: সারাদেশ

Leave A Reply

Your email address will not be published.