বৃহস্পতিবার ১৪ চৈত্র, ১৪৩০ ২৮ মার্চ, ২০২৪ বৃহস্পতিবার

জম্মু-কাশ্মীর এবং লাদাখের মানুষ যেমনটা চাইবেন, তেমনটাই উন্নয়ন হবে: মোদী

বিষেরবাঁশী ডেস্ক: জম্মু ও কাশ্মীরে সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিল করে দু’টি নতুন কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল তৈরি করেছে মোদী সরকার। এই অঞ্চলের সংহতি বজায় রাখা এবং গতিশীল উন্নয়ন আনা ও দ্বৈত নাগরিকত্বের ভ্রান্ত ধারণাটি শেষ করার উদ্দেশেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে কেন্দ্র।

৩৭০ ধারা বাতিলের সিদ্ধান্তটি অনেকেই স্বাগত জানিয়েছেন, তবে যেভাবে এটি করা হয়েছে তা নিয়ে সমালোচনার মুখোমুখিও হয়েছে কেন্দ্র। সংবাদ সংস্থা আইএএনএস জম্মু ও কাশ্মীরে এই বড় পদক্ষেপের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে একান্তে কথা বলেছে।

প্রশ্ন: এই মুহুর্তে জম্মু কাশ্মীর অস্থির রকমের শান্ত। আপনি কী মনে করেন, জম্মু কাশ্মীরের মানুষ আপনার সঙ্গে আছে?

মোদী: কাশ্মীর সম্পর্কে নেওয়া সিদ্ধান্তের যারা বিরোধিতা করেছেন তাদের তালিকা দেখুন – সাধারণ স্বার্থান্বেষী মানুষ, রাজনৈতিক রাজবংশ, যারা সন্ত্রাসের প্রতি সহানুভূতিশীল এবং বিরোধী দলের কিছু বন্ধুবান্ধব। ভারতের জনগণ তাদের রাজনৈতিক পছন্দ নির্বিশেষে, জম্মু-কাশ্মীর এবং লাদাখে গৃহীত পদক্ষেপগুলিকে সমর্থন করেছে। এটা জাতির ভালোর জন্য, এতে রাজনীতি নেই। ভারতের মানুষ দেখছে যে, ব্যাপারটা কঠিন কিন্তু অত্যাবশ্যকীয় সিদ্ধান্ত। যা আগে অসম্ভব বলে ধরে নেওয়া হয়েছিল তা বাস্তবে পরিণত হচ্ছে।

মোদী বলেন, উপত্যকায় জীবনযাত্রা স্বাভাবিকের দিকে ফিরছে আস্তে আস্তে। সামনে পথ কতটা সরু কতটাই বা প্রশস্ত এই বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর অবশ্য স্পষ্ট দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে। তিনি জানান, কীভাবে এই বিধানগুলি ভারতের ক্ষতি করেছে।

প্রধানমন্ত্রীর কথায়, এটি এখন সবার কাছে স্পষ্ট হয়ে গেছে যে কীভাবে ৩৭০ এবং ৩৫ (এ) জম্মু, কাশ্মীর এবং লাদাখককে সম্পূর্ণভাবে বিচ্ছিন্ন করেছে। দীর্ঘ সাত দশকে ‘স্পেশ্যাল স্টেটাস’ সুস্পষ্টভাবেই মানুষের আকাঙ্ক্ষাকে পূরণ করতে পারেনি। নাগরিকদের উন্নয়নের ফল থেকে দূরে রাখা হয়েছিল। সবচেয়ে বড় বাজে বিষয় হল উপার্জন বাড়াতে কোনো সঠিক অর্থনৈতিক সুযোগেরই অভাব ছিল এই অঞ্চলে। আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি আলাদা – দারিদ্র্যের চক্র ঘুচিয়ে জনগণকে আরও বেশি অর্থনৈতিক সুযোগ দিতে হবে। বছরের পর বছর ধরে হুমকিরাজ চলেছে। আসুন এখন আমরা উন্নয়নকে সুযোগ করে দিই।

মোদী আরো বলেন, জম্মু-কাশ্মীর এবং লাদাখের আমার বোনরা এবং ভাইরা সর্বদাই একটি উন্নত ভবিষ্যত চেয়েছিল, কিন্তু ৩৭০ অনুচ্ছেদ তা দিতে পারেনি। নারী ও শিশু, তপশিলী উপজাতির পাশাপাশি তপশিলী জাতিদের উপরও অবিচার চলছিল। এবং, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, জম্মু, কাশ্মীর ও লাদাখের মানুষের উদ্ভাবনী উদ্যোগকেই মান্যতা দেওয়া হয়নি। এখন বিপিও থেকে শুরু করে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, পর্যটন অনেক শিল্পই বিনিয়োগের সুযোগ পেতে পারে এবং স্থানীয় যুবকদের জন্য সুযোগ তৈরি করতে পারে। শিক্ষা ও দক্ষতার বিকাশও ফুলেফেঁপে উঠবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি জম্মু-কাশ্মীর এবং লাদাখের আমার বোন এবং ভাইদের স্পষ্টভাবে আশ্বস্ত করতে চাই যে এই অঞ্চলগুলি স্থানীয় জনগণের ইচ্ছা, তাদের স্বপ্ন এবং আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ীই বিকাশ লাভ করবে। এই অঞ্চলের বৃদ্ধি প্রথম এবং সর্বাগ্রে এই অঞ্চলের সম্প্রদায়ের দ্বারা পরিচালিত হবে। ৩৭০ এবং ৩৫ (এ) শৃঙ্খলার মতো ছিল যা মানুষকে বেঁধে রাখত। এই শৃঙ্খলা এখন ভেঙে গেছে, মানুষ এখন নিজেই নিজের ভাগ্যকেই আকার দেবে।

প্রশ্ন: আর যারা জম্মু ও কাশ্মীরের এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করছেন তাঁরা কী বলবেন?

মোদী তাঁদের উদ্দেশে একটি প্রাথমিক প্রশ্ন রেখেছেন: আর্টিকেল ৩৭০ এবং ৩৫ এ থাকা উচিৎ কেন বলে তাঁদের মনে হচ্ছে?

প্রধানমন্ত্রীর কথায়, তাদের এই প্রশ্নের কোনও উত্তর নেই। এবং এই প্রশ্ন তোলা মানুষগুলো আসলে একই ব্যক্তিরা যারা সাধারণ মানুষের সহায়তার পরিপন্থী, সবেতেই তাঁরা প্রতিবাদ করতে অভ্যস্ত। জনগণকে জল সরবরাহ করার একটি প্রকল্প রয়েছে, তাঁরা এরও বিরোধিতা করবে। রেললাইন পাতা হচ্ছে, তাঁরা তার বিরোধিতা করবে। এঁদের হৃদয় কেবল মাওবাদী ও সন্ত্রাসবাদীদের জন্য কাঁদে। প্রতিটি ভারতীয় আজ জম্মু, কাশ্মীর ও লাদাখের জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছে এবং আমি নিশ্চিত যে জনগণ আমাদের পাশে থাকবে।

বিষেরবাঁশী ডেস্ক/সংবাদদাতা/হৃদয়

Categories: আন্তর্জাতিক

Leave A Reply

Your email address will not be published.