অপরিপক্ক নোবেল গায়ে-গতরে,চিন্তাচেতনায় বেড়ে উঠোক,তারপর..!
অনলাইন ডেস্ক (কবির য়াহমদ): বাংলাদেশের বেসরকারি টেলিভিশনের ‘ক্লোজ আপ ওয়ান, তোমাকেই খুঁজছে বাংলাদেশ’, ‘ক্ষুদে গানরাজ’ প্রতিযোগিতার মত ভারতীয় বেসরকারি টেলিভিশনের অনুষ্ঠান ‘সারেগামাপা’। এখানে যেমন শিল্পীর জন্ম হয়েছে, ওখানেও তেমন। জন্মের পর এই বেড়ে ওঠাটা কতদিনের সেটা প্রমাণসাপেক্ষ।
এখানে কিছু শিল্পী এসেছে, হারিয়েও গেছে; ওখানেও হয়ত। সারেগামাপা’র বাংলাদেশি শিল্পী নোবেলের অবস্থাও এমন হতে পারে; তিনি টিকে যেতে পারেন, আবার হারিয়েও যেতে পারেন। এটা আগামির গর্ভে বলে এখনই চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়ার মত অবস্থা আসেনি।
সারেগামাপা অনুষ্ঠান নিয়ে আমাদের ফেসবুকে অনেক আলোচনা-মাতামাতি হয়েছে। ওসব থেকে দূরে ছিলাম, এখনও আছি। তবে জাতীয় সংগীত নিয়ে এখনকার এই আলোচনায় ছোট্ট সাদামাটা কিছু কথার বলার প্রয়োজনীয়তা বোধ করছি।
এখানে আমার ছোট্ট মন্তব্য হচ্ছে, নোবেলের বক্তব্যে জাতীয় সংগীত ইস্যুতে বিভক্তির কিছু নাই। দেশের জাতীয় সংগীত বদল নিয়ে কেউ কিছু বললে তখনই আলোচনা হতে পারে যখন বক্তার বড়ধরনের কোন পরিচিতি থাকে, এখানে নোবেলের সেরকম কিছু নেই। আর সে যে মঞ্চ থেকে ওঠে এসেছে সেটাও বিশ্বসংগীতের উল্লেখের মত এমন কোন পর্যায় নয়।
সুতরাং তার বক্তব্যের অংশবিশেষ আমাদের জাতীয় ইস্যু হতে পারে না।
ক্ষুদে গানরাজ, কিংবা এইধরনের যেকোনো অনুষ্ঠানের মত এই সারেগামাপা। আপনারাই কেবল এই অনুষ্ঠানকে হাইলাইট করেছেন, গুরুত্বের দিক থেকে সর্বোচ্চ স্তরে নিয়ে গেছেন। এই বিষয়টা মূলত চিন্তার, এরবেশি কিছু নয়।
বিদেশি কিংবা ভারতীয় কোনো এক টেলিভিশন চ্যানেলের সংগীত প্রতিযোগিতাকে আপনারা সংগীতের স্ট্যান্ডার্ড হিসেবে ধরে নিয়েছেন, সমস্যাটা এখানেই। ওখানকার শিল্পী, বিচারক, উপস্থাপক, দর্শকের আবেগে গদগদ হয়েছেন, তাদের হাসিতে হেসেছেন, কান্নায় কেঁদেছেনও। ফলে আপনাদের কাছে ওটাই সংগীত, ওটাই জগতশ্রেষ্ঠ। মানসিক অবস্থা এমনই চরমে যে আপনাদের শ্বশুরবাড়ির পশুকেও সালাম-আদাব-নমস্কার জপ করে যাচ্ছেন। একারণেই নোবেলের অদ্ভুত ভাবনা আপনাদের কাছে জাতীয় ইস্যু, অথচ এটা এমন কিছু নয়।
ভারতের একটা টেলিভিশন চ্যানেলে সংগীত প্রতিযোগিতায় তৃতীয় স্থান পাওয়া উঠতি শিল্পী নোবেল সংগীতাঙ্গনের বড় কোনো নাম নয়। তার মাঝে সম্ভাবনা আছে, আগে সেটার বাস্তবায়ন দরকার। আগে তাকে শিল্পী হতে দিন, শিল্পী হয়ে গেলে তার পরিচিতির জায়গাটা স্পষ্ট হবে। কিন্তু তারআগে তার বক্তব্যকে এত গুরুত্ব দিয়ে দেখার দরকার কী?
তার বক্তব্য আমার পছন্দ হয়নি। এটা ফেসবুকের রিঅ্যাকশন বাটনের মত, চাইলে টিপলাম; নয়ত ইগনর করে গেলাম। এইকারণে তাকে জাতীয় ব্যক্তিত্ব বানিয়ে ফেলা উচিত হচ্ছে না।
নোবেলের পছন্দ-অপছন্দে আমাদের জাতীয় সংগীত বদলাবে না, নোবেলের এক বক্তব্যে রবীন্দ্রনাথের কোনো লেখাকে ছাড়িয়ে যাবেনা প্রিন্স মাহমুদের লেখা কোনো গান। এই বোধ আমাদের থাকারও দরকার। আমাদের অনুধাবন করা দরকার কার সঙ্গে কীসের তুলনা আমরা করছি, বড় অসম এই তুলনা।
নোবেল নামের উঠতি শিল্পীকে আমি প্রতিপক্ষ ভাবছি না। কমবয়েসি ছেলে, জানাশোনা কম, তারচেয়ে কম মগজের পরিপক্বতা।
সে বড় হোক আগে, তারপরে তাকে নিয়ে ভাবা যাবে।
বিষেরবাঁশি.কম/ডেস্ক/মৌ দাস.
Categories: খোলা বাতায়ন