অনলাইন ডেস্ক: বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক অনুমোদিত জলবায়ু ট্রাস্ট ফান্ড এর অর্থায়নে বাস্তবায়নাধীন ‘বজ্রপাত সংগঠনের আবহাওয়া জনিত অবস্থা পর্যবেক্ষণ এবং বাংলাদেশে বজ্রপাত মোকাবেলায় সহনশীল জনগোষ্ঠি গঠন ‘শেষ’ শীর্ষক আলোচনা সভা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া বিজ্ঞান বিভাগে অনুষ্ঠিত হয়। বজ্রপাত নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পের পরিচালক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারপার্সন অধ্যাপক ড. তৌহিদা রশিদ এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোঃ শাহ কামাল। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থ এন্ড সাইন্স ভ্যাকাল্টির ডিন অধ্যাপক ড. মাকসুদ কামাল, দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোঃ মহসিন, আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক মোঃ শামসুদ্দিন আহমেদ, জলবায়ু ট্রস্ট ফান্ডের মহাপরিচালক দিপক দাস পাল, আবহাওয়াবিদ অধ্যাপক দেওয়ান আব্দুল কাদের, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক ড. আছিব আহমেদ প্রমুখ।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই লালমনির হাট জেলার ২টি উপজেলা ও সুনামগঞ্জের ৯টি উপজেলা সমন্বয়ে গঠিত বজ্রপাতের কারণ ও এর প্রতিকার ও জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে মাঠ পর্যায়ে প্রশিক্ষণ প্রদান এবং ঢাকায় তিনদিন ব্যাপী সেমিনারের সমাপ্তি করবে কর্মশালার উপর আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। প্রথমেই মাঠ পর্যায়ের তথ্য উপাত্তের ভিত্তি করে একটি ভিডিও প্রদর্শণ করা হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে সিনিয়র সচিব মোঃ শাহ কামাল বলেন, বর্তমান সরকার প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় নানামুখী কর্মসূচি গ্রহণ করেছেন। একটি মানুষও যাতে প্রাকৃতিক দুর্যোগে মৃত্যুবরণ না করে এ জন্য সরকার বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। সরকারের অর্থনৈতিক সীমাবদ্ধতা সত্যেও নিজস্ব অর্থায়নে জলবায়ু পরিবর্তন জনিত প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় সরকার কয়েক বছর যাবৎ বাজেটে অর্থ বরাদ্দ রাখছেন। এই অর্থ জলবায়ু পরিবর্তন জনিত প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়িত হচ্ছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ থাকবেই এটা মোকাবেলা করেই আমাদেরকে পথ চলতে হবে। তবে এ কথা সত্য আমাদের দেশে দক্ষ ও উচ্চ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত বিশেষজ্ঞ তেমন নেই। এই জন্য আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় আমুল পরিবর্তন আনতে হবে এবং আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত করতে হবে। তবে দুর্যোগ মোকাবেলায় সরকারের পাশাপাশি সামাজিক বিভিন্ন সংগঠন ও এনজিওদের আগে এগিয়ে আশা দরকার। তাহলে প্রাকৃতিক দুর্যোগ বিশেষ করে বজ্রপাতের হাত হতে জীবন রক্ষা করা বহুলাংশে সম্ভব হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক ড. মাকসুদ কামাল বলেন, যে কোন মৃত্যুই অনাকাঙ্খিত। প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে মানুষকে নিরাপদ রাখা ও মৃত্যুর হার কমানো সরকারের দায়িত্ব। সরকার এ বিষয়ে অনেক সচেতন আছে। তবে এই বিষয়ে ব্যাপক গবেষণা প্রয়োজন এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সমন্নিতভাবে এক যোগে সবাইকে দুর্যোগ মোকাবেলায় কাজ করতে হবে। জলবায়ু ট্রাস্ট ফান্ডের মহাপরিচালক দিপক দাস বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন জনিত কারণে প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় বিশেষ করে বজ্রপাত থেকে জীবন রক্ষার জন্য সরকার বিভিন্ন প্রকল্প হাতে নিয়েছে। এখানে অর্থের কোন সমস্যা নেই। এই প্রকল্পগুলো সার্থকভাবে বাস্তবায়িত হলে আমরা অবশ্যই এর সুফল ভোগ করবো। ড. মোঃ মোহসিন বলেন, যখনই শোনা যাবে বজ্রধ্বনি, ঘরে ফিরতে হবে তখনই। জনগণকে অবশ্যই সচেতন হতে হবে, সেল্টার নির্মাণ, বনাঞ্চল সৃষ্টির মাধ্যমে প্রাকৃতিক সকল দুর্যোগ থেকেই আমরা রক্ষা পেতে পারি। আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক শামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, সরকার আবহাওয়া অধিদপ্তরকে অত্যাধনিক যন্ত্রপাতির মাধ্যমে সয়ংসম্পন্ন করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। এগুলো বাস্তবায়িত হলে অবশ্যই জনগণকে আগাম পূর্ভাবাস, সতর্কতা জানানো হবে এবং কখন, কোথায়, কত সময় আবহাওয়া বিপদ জনক থাকবে তা জনগণকে জানানো সম্ভব হবে। অনুষ্ঠান শেষে সেমিনারে আগত প্রত্যেককে প্রধান অতিথি সনদপত্র বিতরণ করেন।
ধন্যবাদজ্ঞাপন করেন, ড. তৌহিদা রশিদ প্রকল্প পরিচালক, জলবায়ু ট্রাস্ট ফান্ড এবং চেয়ারপার্সন আবহাওয়া বিজ্ঞান বিভাগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
বিষেরবাঁশি.কম/ডেস্ক/মৌ দাস.