বৃহস্পতিবার ৫ বৈশাখ, ১৪৩১ ১৮ এপ্রিল, ২০২৪ বৃহস্পতিবার

সিদ্ধিরগঞ্জে জ্বীন তাড়ানোর নামে শারীরিক নির্যাতনে গৃহবধূর মৃত্যু

ভন্ড কবিরাজ দম্পতি গ্রেফতার

 

বিষেরবাঁশী.কম: নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে জ্বীন তাড়ানোর নামে শারীরিক নির্যাতনে শাহনাজ আক্তার শিখা (২৫) নামে এক গৃহবধূর মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। বুধবার মিজমিজি চৌধুরীপাড়ায় এ ঘটনাটি ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল (ভিক্টোরিয়া) হাসপাতালে পাঠায়। এ ঘটনায় বুধবার রাতেই সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেছে নিহত ওই গৃহবধূর মা সুরাইয়া বেগম। এ ঘটনায় ভন্ড কবিরাজ ফারুক হোসেন ও তার স্ত্রী জেসমিনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃত ফারুক হোসেন চাঁদপুরের উত্তর মতলবের মান্দার আলী এলাকার আব্দুল মতিনের ছেলে।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ঈদুল ফিতরের ৩ দিন পর শাহনাজ আক্তার শিখা অস্স্থু হয়ে পড়ে। প্রায়ই সময় উল্টাপাল্টা আচরণ করতে থাকে। এ অবস্থায় শিখাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করানো হলেও ভালো হয়নি। পরে প্রতিবেশীদের পরামর্শে গত ১৬ জুন কবিরাজ ফারুক হোসেনের শরনাপন্ন হয়।

ফারুক জানায়, শাহনাজকে বদ জ্বীনে আছর করেছে। এক সপ্তাহ চিকিৎসা দিতে হবে। এতে ১০ হাজার টাকা লাগবে। এতে শিখার পরিবার রাজি হয়। কবিরাজ ফারুক প্রথমদিন চিকিৎসা করেন। কিন্তু ভালো না হওয়ায় ফারুকের নিজ বাসায় নিয়ে চিকিৎসার করানোর প্রস্তাব দেন। এতে শাহনাজের পরিবার রাজি হয়। পরে ১৮ জুন সন্ধ্যায় কবিরাজ শাহনাজকে বাসায় নিয়ে যান। নিজের বাসায় নিয়ে কবিরাজ ফারুক ও তার স্ত্রী জেসমিন শাহনাজের উপর কবিরাজি চিকিৎসার নামে শারীরিক নির্যাতন চালানো হয়। প্রথমে শাহনাজকে ঝাঁড়– দিয়ে পেটানো হয়। পরে হাত ও পায়ের আঙ্গুল মোচড়ানো হয়। এতে শাহনাজ চিৎকার করলে তার গলায় এবং বুকে পা দিয়ে চেপে ধরে জ্বীনকে চলে যেতে বলে ভন্ড কবিরাজ। নির্যাতনে শাহনাজ এক পর্যায়ে নিস্তেজ হয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। পরে ফারুক তার পরিবারকে বাসায় পাঠিয়ে দেয়। পরদিন শাহনাজের পরিবারের লোকজন কবিরাজের বাসায় গিয়ে শাহনাজের মৃতদেহ ফ্লোরে চাদর মোড়ানো অবস্থায় দেখতে পায়। পরে বিষয়টি পুলিশকে অবহিত করে।

সিদ্ধিরগঞ্জ থানার পরিদর্শক (অপারেশন) জসিম উদ্দিন জানান, গৃহবধূ শিখার শারীরিক সমস্যা দেখা দিলে তার পরিবার কোন এক মাধ্যমে ভন্ড কবিরাজ ফারুকের শরনাপন্ন হয়। ফারুক এ সময় বলে শিখাকে বদ জ্বীনে ধরেছে। এই কথা বলে চিকিৎসার নামে তাকে হাত পা বেধে শারীরিক নির্যাতন চালানো হয়। এক পর্যায়ে শিখা মারা যায়। এ ঘটনায় কবিরাজ দম্পতিকে আটক করা হয়েছে। এ বিষয়ে মামলা নেয়া হয়েছে।

 

বিষেরবাঁশী.কম/নিরাক/নিঃতঃ

Categories: নারায়ণগঞ্জের খবর

Leave A Reply

Your email address will not be published.