শনিবার ৭ বৈশাখ, ১৪৩১ ২০ এপ্রিল, ২০২৪ শনিবার

আমাকে ‘জল্লাদ’ বানাতে চেয়েছিলেন খালেদা জিয়া : মাহী বি চৌধুরী

অনলাইন ডেস্ক: সাবেক রাষ্ট্রপতি ড. এ কিউ এম বরুদ্দোজা চৌধুরীর ছেলে বিকল্পধারা বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব মাহী বি চৌধুরী বিএনপি সরকারের সময়ে সংসদে থাকা, রাষ্ট্রপতিকে অপসারণ, দল থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়াসহ নানা বিষয় জানিয়ে সংসদে বক্তব্য রেখেছেন ।

এসময় তিনি জানান, বিএনপি চেয়ারপারসন তার সঙ্গে তখন এমন কাজ করেছিলেন যা তাকে ‘জল্লাদ’ বানানোরই অপচেষ্টা ছিলো।

রোববার ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বি মিয়ার সভাপতিত্বে জাতীয় সংসদের অধিবেশনে রাষ্ট্রপতির ভাষণের উপর আনীত ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এসব ঘটনা তুলে ধরেন।

মাহি বদরুদ্দোজা চৌধুরী বলেন, ‘এই সংসদে সাবেক রাষ্ট্রপতি বদরুদ্দোজা চৌধুরীর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হয়েছিলো। একতরফভাবে রাষ্ট্রপতির বিরুদ্ধে বিষেদাগার করা হয়েছি।

অন্যায়ভাবে তাকে অপসারণ করা হয়েছিলো। আমি তখন এই সংসদের সদস্য ছিলাম। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তখন বিরোধী দলের নেতা।

তিনি আমার নির্বাচনি এলাকা দিয়ে যাওয়ার সময় আমি তাকে স্বাগত জানিয়ে তোরণ নির্মাণ করেছিলাম, আমি চেয়েছিলাম শ্রদ্ধার রাজনীতি শুরু হোক।

আমি যখন থেকে রাজনীতি শিখেছি তখন থেকেই জেনেছি আওয়ামী লীগ আমাদের চির রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বি। কিন্তু আমি দেখিছি আমার বাবা বরুদ্দোজা চৌধুরী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে কি রকম শ্রদ্ধা করতেন।’

মাহি বি চৌধুরী আরো বলেন, ‘রাষ্ট্রপতি বদরুদ্দোজা চৌধুরীর বিরুদ্ধে কি অভিযোগ ছিলো? অভিযোগ ছিলো তিনি একজন প্রয়াত রাষ্ট্রপতির (জিয়াউর রহমান) কবরে যাননি জিয়ারত করতে। এ কারণে রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর মাত্র ৭ মাসের মাথায় তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু হয়।

একদিন বিএনপি নেতা তারেক রহমান আমাকে ফোন করে বললেন আমি রাষ্ট্রপতির সঙ্গে ডিনার করবো, তিনি মেন্যুও জানিয়েছিলেন। আমি আমার মাকে জানালাম।

ডিনার তৈরি হচ্ছে এই সময় বঙ্গভবনের নিরাপত্তা পরিবর্তন হলো। পিজিআরকে সরিয়ে এসএসএফ নিয়ন্ত্রণ নিলো। এরপর বিএনপির সংসদীয় দলের সভায় রাষ্ট্রপতিকে অপসারণের সিদ্ধান্ত হয়।’

‘তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী এবং বিএনপির সংসীয় দলের নেতা খালেদা জিয়া আমাকে বললেন, তুমি দলের সর্বকনিষ্ঠ সদস্য, তুমি এই সিদ্ধান্ত রাষ্ট্রপতিকে জানিয়ে দেবে এবং পদত্যাগ পত্র নিয়ে আসার দায়িত্ব তোমার। এ যেন অন্যায়ভাবে পিতাকে ফাঁসি দেওয়ার আদেশ দেওয়া হলো আর ছেলেকে বানানো হলো জল্লাদ’, বলেন মাহি বি চৌধুরী।

এরপর ২০০৪ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত ২৯ বার আমার ওপর আক্রমণ করা হয় জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের বাড়িতে রাতের অন্ধকারে গান পাউডার দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।

জীবন নিয়ে কোনোরকম আমরা বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসেছিলাম। আমরা বাসা ভাড়া পাইনি, বাসা ভাড়ার জন্য সেখানে যাই সেখানেই সরকারের গোয়েন্দা সংস্থা বাধা দেয়। আজ ১২ বছর পর হয়ে গেছে আমরা একটি মামলা করেছি তার কোনো তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ হয়নি।’

মাহি বলেন, ‘বর্তমান রাজনৈতিক পেক্ষাপটে আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোট করে আমরা নির্বাচন করেছি। এর আগে আমরা ড. কামাল হোসেনকে নিয়ে একটি জোট করার উদ্যোগ নিয়েছিলাম। আমরা বলেছিলাম প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে কোনো স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির সঙ্গে জোট হবে না। কিন্তু এতে তারা রাজি হননি।

ড. কামাল হোসেন তার বাসায় আমাদের আমন্ত্রণ জানিয়ে তার বাড়ি দরজা বন্ধ রেখেছিলেন। লুকিয়ে লুকিয়ে তারা অনৈতিক চুক্তি করলেন। যার ফলে অনৈতিক ঐক্য জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। তারা জামায়াতকে সঙ্গে নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিলেন।

তখন আমরা আওয়ামী লীগ, ১৪ দল, জাতীয় পার্ট জোটে যাই। আমরা স্বাধীনতার পক্ষের শক্তির সঙ্গে জোট করে নির্বাচনে অংশ নিলাম। আমাদের মধ্যে মতপার্থক্য আছে কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের প্রশ্নে, স্বাধীনতাবিরোধীদের প্রশ্ন যখন আসবে তখন আমাদের ঐক্য অক্ষুন্ন থাকবে।’

 

বিষেরবাঁশী.কম/ডেস্ক/নিঃতঃ

Categories: রাজনীতি

Leave A Reply

Your email address will not be published.