বুধবার ৪ বৈশাখ, ১৪৩১ ১৭ এপ্রিল, ২০২৪ বুধবার

গণভবনে আজ প্রধানমন্ত্রীর চা-চক্র

 

যাচ্ছে না জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও বাম গণতান্ত্রিক জোট

 

 

মুহম্মদ আকবর: বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চা-চক্র আজ শনিবার। বেলা সাড়ে ৩টায় গণভবনের এই আয়োজনে নির্বাচনের আগে সংলাপে অংশ নেওয়া রাজনৈতিক দলের নেতাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়। তবে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এ আমন্ত্রণে যাচ্ছে না জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও বাম গণতান্ত্রিক জোট।

আমন্ত্রণের জন্য প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে ধন্যবাদের পাশাপাশি এ অনুষ্ঠানে না যাওয়ার সিদ্ধান্তের কথাও জানিয়ে দিয়েছে দুই জোট। গতকাল শুক্রবার সকালে গণভবনে ঐক্যফ্রন্টের পক্ষে চিঠি নিয়ে যান জোটের দপ্তরপ্রধান জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু, সমন্বয় কমিটির সদস্য আজমেরী বেগম এবং মিডিয়াপ্রধান জাহাঙ্গীর আলম।

চিঠিতে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির সদস্য সুব্রত চৌধুরীর স্বাক্ষরে আনুষ্ঠানিকভাবে দাওয়াতে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়া হয়। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্যাডে লেখা চিঠিতে প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলা হয়েছে- ‘জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির সভায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর চা-চক্রের আমন্ত্রণ অন্যতম এজেন্ডা হিসেবে আলোচিত হয়। কমিটি এই চা-চক্রে অংশ না নেওয়ার ব্যাপারে সর্বসম্মতভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।’

চিঠিতে আরও বলা হয়, ‘৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনের নামে প্রহসনের মাধ্যমে গঠিত সরকার কোনোভাবেই নৈতিক নয়। সেদিন দেশের মানুষের ন্যূনতম গণতান্ত্রিক অধিকার ভোটাধিকার প্রয়োগ করে প্রতিনিধি নির্বাচনের ক্ষমতা হরণ করা হয়েছে। অন্যদিকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের হাজার হাজার নেতাকর্মী এখনো জেলে। নতুন নতুন মামলায় অসংখ্য নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। এমন অবস্থায় প্রধানমন্ত্রীর চা-চক্রে অংশগ্রহণ করা কোনোক্রমেই সম্ভব নয়।’

অন্যদিকে বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক ও বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম আমাদের সময়কে বলেন, আমরা প্রধানমন্ত্রীর চা-চক্রের আমন্ত্রণ পেয়েছি; কিন্তু যাচ্ছি না, যাওয়ার পরিবেশ নেই। গত ৩০ ডিসেম্বর যে নির্বাচন হয়েছে তাতে মনে হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর এই আমন্ত্রণে যাওয়ার কোনো মানে হয় না।

সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর চা-চক্রে ১৪-দলীয় জোট ও মহাজোটের বাইরে ইসলামিক ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্স, গণতান্ত্রিক বাম ঐক্যসহ বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল অংশ নেবে।

প্রধানমন্ত্রীর চা-চক্রের বিষয়ে কাদের বলেন, আমন্ত্রণে যোগ না দেওয়া নেতিবাচক রাজনীতির বহির্প্রকাশ ও ধারাবাহিকতা। যদি এখনো তারা নেতিবাচক ধারা আঁকড়ে রাখে, তারা অন্ধকার গভীর খাদে পতিত হবে।

চা পান করতে করতে খোলামেলা আলোচনা হতে পারে বলেও উল্লেখ করেন আওয়ামী লীগ নেতা। বলেন, চা খেতে খেতেও কথা বলা যায়। শুভেচ্ছা বিনিময়ের মাধ্যমে রাজনীতিবিদরা রাজনীতির কথাই বলবেন। তারা যেখানেই যান রাজনীতির কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তারা রাজনীতির কথা বলতে পারেন এবং তাদের মনের কোনো কথা থাকলে, প্রধানমন্ত্রীকে বলার মতো কিছু থাকলে খোলামেলা আলোচনা করতে পারেন। তাদের কেউ বাধা দেবে না।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে গত নভেম্বরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ঐক্যফ্রন্টসহ দেশের প্রায় সব রাজনৈতিক দলের সংলাপ হয়। ওই সংলাপে নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হয়। পরে ৩০ ডিসেম্বর সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ বিপুল বিজয় পায়। তবে নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করে পুনর্নির্বাচনের দাবি করে আসছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। এরই মধ্যে ঐক্যফ্রন্টসহ নির্বাচনের আগে সংলাপে অংশ নেওয়া সব নেতাকে শুভেচ্ছা বিনিময় ও চা-চক্রের জন্য আমন্ত্রণ জানান শেখ হাসিনা।

এদিকে সংলাপে অংশ নেওয়া ঐক্যফ্রন্টের নেতারা গত ২৬ জানুয়ারি আমন্ত্রণ পাওয়ার পর থেকেই তারা চা-চক্রে যাবেন না বলে জানিয়ে আসছেন। বৃহস্পতিবার জোটের শীর্ষ নেতাদের বৈঠক শেষে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানান, এ দাওয়াত তাদের কাছে ‘প্রহসন’। সেখানে যাওয়ার প্রয়োজন আছে বলে তারা মনে করেন না।

 

বিষেরবাঁশী.কম/ডেস্ক/নিঃতঃ

Categories: সারাদেশ

Leave A Reply

Your email address will not be published.