বিষেরবাঁশী ডেস্ক: প্রকাশ্যে এক গাড়ি চালককে পিটিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়া সেই সোনারগাঁও পৌরসভার মেয়র সাদেকুর রহমানকে আটক করেছে নারায়ণগঞ্জ জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। সোমবার (১৭ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত পৌনে ১ টায় সোনারগাঁ উপজেলার গোয়ালী এলাকার নিজ বাসা থেকে তাকে আটক হয়।
ডিবির ইন্সপেক্টর এনামুল হকের নেতৃত্বে ডিবি পুলিশের একটি টিম তাকে আটক করে। আটকের পর মেয়রকে ডিবি কার্যালয়ে রাখা হয়েছে।
জেলা পুলিশের “ইন্সপেক্টর মিডিয়া” সাজ্জাদ রোমন বলেন, কিশোর চালককে নির্যাতনের ঘটনায় সোনারগাঁয়ের মেয়রকে আটক করা হয়েছে। এই সংক্রান্ত সংবাদ ও ভিডিও পুলিশ সুপার মহাদয়ের নজরে এলে তিনি তৎক্ষণাৎ যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন।
পুলিশ সুপারের বরাত দিয়ে তিনি আরও বলেন, কেউ আইনের ঊর্ধ্বে না। যত প্রভাবশালী হোক না কেনো অপরাধ করে কেউ ছাড় পাবে না।
উল্লেখ্য, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে নারায়ণগঞ্জ-৩ (সোনারগাঁও) আসনে মহাজোটের মনোনীত জাতীয় পার্টির প্রার্থী লিয়াকত হোসেন খোকার পক্ষে গণসংযোগ করে ১৫ ডিসেম্বর নিজ গাড়িতে চড়ে বাসায় ফিরছিলেন মেয়র সাদেকুর রহমান। সোনারগাঁও জাদুঘরের সামনে বিপরীত দিক থেকে আসা বাঁশ বোঝাই নসিমনের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এতে মেয়র সাদেকুর রহমানের গাড়ি ক্ষতিগ্রস্থ হয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সাদেকুর রহমান গাড়ি থেকে বের হয়ে নিজের হাতে থাকা লাঠি দিয়ে ওই যুবককে মারতে শুরু করেন। মারধরের সময়ে ওই কিশোর চালক বার বার ক্ষমা চেয়ে আহাজারি করে মেয়রের দুই পা ধরে বসে থেকে কয়েক বার মাফ চাইলেও মন গলেনি মেয়রের। উল্টো আরো চটে যান তিনি। পরে আরো কয়েক দফা তাকে হাতের লাঠি দিয়ে নির্মমভাবে মারধর করা হয়।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মারধরের ভিডিও ছড়িয়ে পড়ায় বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়। শুরু হয় নিন্দার ঝড়। এরপর এই ঘটনায় জাতীয় ও স্থানীয় গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ সবখানে মেয়রের শাস্তি দাবি উঠে। পরবর্তীতে সোমবার দিবাগত রাতে নিজ বাসা থেকে পৌর মেয়র সাদেকুর রহমানকে আটক করে ডিবি।
নির্যাতনের শিকার জামাল হোসেন উপজেলার পরমশ্বেরদী গ্রামের খবিরউদ্দিনের ছেলে। তিনি পৌর এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করেন।
অভিযুক্ত মেয়র বাংলাদেশ কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতির (বিসিডিএস) কেন্দ্রীয় কমিটিরও সভাপতি।
বিষেরবাঁশী ডেস্ক/সংবাদদাতা/হৃদয়