শনিবার ৭ বৈশাখ, ১৪৩১ ২০ এপ্রিল, ২০২৪ শনিবার

৫৭ ধারায় সাংবাদিক হয়রানি হবে না : আইনমন্ত্রী

  • অনলাইন ডেস্ক

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের বিতর্কিত ৫৭ ধারার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে আগামী আগস্টে। নতুন আইন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে এটি প্রতিস্থাপন হবে, নাকি পরিবর্তন করে নতুনভাবে করা হবে তা আগস্টেই জানা যাবে। আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক এ কথা জানিয়েছেন।

এদিকে বিতর্কিত এই ধারা বাতিলের দাবিতে সাংবাদিকরা আরো সোচ্চার হয়েছেন। মানববন্ধনসহ প্রতিবাদ সমাবেশ অব্যাহত রয়েছে।

গতকাল রবিবার আইন মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাবিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের খসড়া নিয়ে মতবিনিময়সভা অনুষ্ঠানের পর আইনমন্ত্রী সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন। সচিবালয়ের নিজ কক্ষে তিনি জানান, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে মতবিনিময়সভায় আলোচনা হয়েছে। আলোচনায় অনেক বিষয় উঠে এসেছে। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।

আইনমন্ত্রী বলেন, ‘আলোচনায় যেসব কথা এসেছে তার একটি রূপরেখা তৈরি করে আমরা আগামী আগস্টে আরেকটি সভা করব। এরপর বর্তমানে যে খসড়া হয়েছে তার সঙ্গে মিলিয়ে একটি চূড়ান্ত খসড়া করব। ৫৭ ধরা সম্পর্কে সিদ্ধান্ত তখনই পাবেন। ’

আইনমন্ত্রী বলেন, ‘আইসিটি অ্যাক্টের ৫৭ ধারায় যাতে সাংবাদিকরা হয়রানি না হয় সেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাগুলো সতর্কতার সঙ্গে ইনভেস্টিগেশন করতে তদন্ত সংস্থাকে বলা হবে। মিথ্যাভাবে যাতে কোনো

সাংবাদিককে হয়রানি করা না হয় সেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ’ তবে আইনমন্ত্রী বলেন, নতুন ডিজিটাল আইন না হওয়া পর্যন্ত তথ্য-প্রযুক্তি আইন বলবৎ থাকবে। ৫৭ ধারাও বহাল থাকবে। কেউ মামলা করলে সেটা তো আর ঠেকানো যাবে না। যেহেতু আইন বলবৎ থাকবে, কাজেই সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাগুলো সতর্কতার সঙ্গে দেখা হবে।

ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম, তথ্য-প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব কামাল উদ্দিন আহমেদ এ সময় আইনমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন।

এর আগে আইনমন্ত্রী, দুই প্রতিমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব, আইনসচিবসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা ও অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম মতবিনিময়সভা করেন। সভায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের খসড়া নিয়ে আলোচনা হয়।

মানববন্ধন : আমাদের ঢাকা বিশ্বাবিদ্যালয় প্রতিনিধি জানান, ৫৭ ধারা বাতিল ও এই ধারায় যমুনা টেলিভিশনের সিনিয়র রিপোর্টার এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী নাজমুল হোসেনের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন ওই বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।

গতকাল দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে আয়োজিত এক মানববন্ধনে এ দাবি জানানো হয়। এ সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০০৩-০৪ শিক্ষাবর্ষের অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন এ মানববন্ধনে সংহতি প্রকাশ করেন।

গত ২৮ জুন সাংবাদিক নাজমুল হোসেন ‘বিচারপতির লাল সিঁড়ি ও দেলোয়ারের ক্র্যাচ’ শিরোনামে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন। এই স্ট্যাটাসে বিচারপতি, বিচারক ও বিচার বিভাগের ভাবমূর্তি ও মর্যাদা হেয় প্রতিপন্ন হয়েছে বলে অভিযোগ করেন দিনাজপুর জজ আদালতের আইনজীবী হযরত আলী। একই অভিযোগে তিনি গত ৩ জুলাই নাজমুল হোসেনসহ চারজনের বিরুদ্ধে দিনাজপুরের কোতোয়ালি থানায় তথ্য-প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারায় মামলা দায়ের করেন।

ইংরেজি দৈনিক ডেইলি অবজারভারের ফটো সাংবাদিক আসিক মোহাম্মদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে প্রত্যাহার করে তাঁর মুক্তির জোরালো দাবি জানিয়েছেন সাংবাদিক নেতারা। ইয়াবা নাটক সাজিয়ে গ্রেপ্তার করা এই সাংবাদিককে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে মুক্তি দেওয়া না হলে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তাঁরা। একই সঙ্গে বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকের বিরুদ্ধে আইসিটি আইনের ৫৭ ধারায় দায়ের হওয়া মামলা প্রত্যাহরের দাবি জানানো হয়েছে। ৫৭ ধারাকে কালো আইন উল্লেখ করে এই আইন বাতিল ও ভবিষ্যতে এ রকম আইন না করার দাবি জানান সাংবাদিক নেতারা।

এদিকে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে) ও বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধনে ৫৭ ধারা বাতিলের জোর দাবি জানায়।

বি.বা/ডেস্ক/ক্যানি

Categories: অর্থনীতি

Leave A Reply

Your email address will not be published.