শুক্রবার ১৫ চৈত্র, ১৪৩০ ২৯ মার্চ, ২০২৪ শুক্রবার

পূজার কেনাকাটায় জমজমাট ফুটপাত

বিশেরবাঁশী ডেস্ক: প্রতি প্রাবণ, উৎসবের কেনাকাটার জন্য মধ্যবিত্ত শ্রেণির একমাত্র ভরসা হকার মার্কেট। যেখানে সাধ্যের মধ্যে পরিবারের সব সদস্যদের জন্য স্বাচ্ছন্দে কেনাকাট করতে পারেন তারা। অন্যান্য উৎসবের মতো হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজোয় নিন্ম মধ্যবিত্ত ক্রেতাদের প্রথম পছন্দ ফুটপাত। তাই শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে জমে উঠেছে নগরীর ফুটপাতগুলো।

শনিবার (১৩ অক্টোবর) সন্ধ্যায় নগরীর বিভিন্ন স্থান সরেজমিনে ঘুরে দেখা যাড, চাষাড়া হতে ডিআইটি পর্যন্ত পুরো বঙ্গবন্ধু সড়কের ফুটপাতে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভীড়। অন্যদিকে শতশত হকার তাদের পসরা সাজিয়ে বসেছেন। ঝিড়িঝিড়ি বৃষ্টির মধ্যে আলোর কোনো ব্যবস্থা না থাকা সত্ত্বেও রাস্তার পাশে দাড়িঁয়ে দাঁড়িয়ে কেনাকাটা করছেন ক্রেতারা। ফুটপাতে হাটার জন্য তিল পরিমান জায়গা নেই। পুরো ফুটপাত জুড়ে বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন জিনিস। ফুটপাতে পাওয়া যাচ্ছে ছোট, বড়, ছেলে, মেয়ে সব বয়সের মানুষের পোশাক, জুতা, গহনা, ব্যাগ আরো অনেক কিছু। আর প্রতিটি জিনিসই পাওয়া যাচ্ছে ২০০ থেকে ৩০০ টাকার মধ্যে।

পল্লবী সেন একজন গৃহিনী। তার স্বামী সিটি কর্পোরেশনের একজন সুইপার। সুইপারদের গড় বেতন ৫ হাজার টাকার। যা দিয়ে ঘর চলে না, পূজার কেনাকাটা কি করবে। তবু সাধ্যের মধ্যে পূজার জন্য পরিবারের জন্য কেনাকাটা করতে এসেছেন। পল্লবী সেন বলেন, ‘স্বামী ছেলের বেতনে যা আসে তা দিয়ে ঠিক মতো ঘরও চলে না। কেনাকাটা তো দূরের কথা। এই ফুটপাত ও হকার্স মার্কেট আছে বলে আমাদের মতো গরিব ঘরের মানুষ উৎসবে পরিবারের জন্য কিছু কেনাকাটা করতে পারছে।’

জুই রানী সরকার একজন শিক্ষার্থী। বাবার সঙ্গে এসেছেন এবার পূজোর কেনাকাটা করতে। তিনি বলেন, ‘আমার বাবা একজন তৃতীয় শ্রেণির কর্মকর্তা। আমাদের পক্ষে কোনো ভালো শপিংমলে গিয়ে শপিং করা সম্ভব নয়। আমাদের কাছে এই ফুটপাতই একমাত্র ভরসা। কম দামের মধ্যে প্রায় সব কিছুই পাওয়া যায়। মা, দাদী, ছোট ভাই, বোন সবার জন্য কিছু না কিছু কিনেছি। তাদের জন্য কিনতে পেরেই আমি খুশি।’

ডালিম মিয়া একজন হকার। ফুটপাতে হকারি করেই তার জীবিকা অর্জিত হয়। ডালিম মিয়া বলেন, ‘মার্কেটের দোকানের ভাড়া গুণতে হয় অনেক বেশি। ফুটপাথ তো আর তেমন নয়। তা ছাড়া আমরা সরাসরি বিভিন্ন গার্মেন্ট থেকে লট হিসেবে পোশাক কিনে আনি। ফলে আমরা কম দামে কিনতে পারি। তাই বিক্রিও করি কম দামে।’

সবুর আলীও একজন হকার। দীর্ঘদিন যাবত নারায়ণগঞ্জে আছেন এবং হকারি করছেন। সবুর আলী বলেন, ‘কম দামে পায় বলে মানুষ আমাদের কাছে আসে। আমরাও কিছু লাভ করি। পূজা উপলক্ষে বেচাকেনা ভালোই চলছে। তবে কিছুদিন পর ভীড় আরো বাড়বে। এখন পুলিশ বা সিটি কর্পোরেশন এর মধ্যে কিছু না করলেই হলো। পূজা উপলক্ষে আমরা সবাই অনেক টাকার মাল তুলছি। পুলিশ, প্রশাসন আমাদের তুলে দিয়ে আমাদের অনেক লস হয়ে যাবে।’

বিশেরবাঁশী ডেস্ক/সংবাদদাতা/ইলিয়াছ

Categories: সারাদেশ

Leave A Reply

Your email address will not be published.