শনিবার ৭ বৈশাখ, ১৪৩১ ২০ এপ্রিল, ২০২৪ শনিবার

আপনারা আমার বিরুদ্ধে মামলা কেন করলেন- মেয়র আইভী

বিষেরবাঁশী ডেস্ক: নারায়ণগঞ্জের যত খাল আছে, যত মাঠ আছে খেলার জন্য, সেগুলো আমি সংরক্ষণ করার জন্য চেষ্টা করবো। তবে এই বাবুরাইলটা কিন্তু যখন আমি পৌরসভার চেয়ারম্যান ছিলাম তখন থেকেই শুরু করেছিলাম। আমরা বাবুরাইল থেকে প্রথমে শুরু করলাম জিমখানেতেও এই বাবুরাইল খালটা। তখন ওবায়দউল্লাহ সাহেব প্যানেল মেয়র ছিলেন এবং ১৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ছিলেন। এবং উনি আমাকে যথেষ্ট সহযোগিতা করেছিলেন। সেসময় আমরা বাবুরাইলের মোড়ে বড় একটা প্রোগ্রাম করেছিলাম। এই খাল সম্পর্কে ধারণা দেয়ার জন্য। সেসময় যত ধরণের সহযোগিতা ছিলো উনি আমাকে করেছেন। উনি আমাকে জিমখানা উচ্ছেদ করতে যথেষ্ট সহযোগিতা করেছেন।
রোববার (৭ অক্টোবর) বিকেলে ২ নম্বর বাবুরাইল আমবাগান এলাকায় বাবুরাইল খালের কাশিপুর অংশের নির্মাণ কাজ উদ্বোধনকালে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন’র মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী এসব কথা বলেন ।
তিনি বলেন, কাশিপুরে কেন আসলাম? আমি তো বাবুরাইল পর্যন্তই শেষ করে দিতে পারতাম। কিন্তু আমি এই কাজটা কখনোই করতে চাই নাই। আমাদের দেশে যেভাবে খাল বিল ভরে যাচ্ছে, এটা কিন্তু আমাদের জন্য বিপদ ডেকে আনবে। তাই আমি চিন্তা করলাম এই খাল আমাকে উদ্ধার করতে হবে এবং একদম ধলেশ্বরী পর্যন্ত নিয়ে যেতে হবে।
নাসিক মেয়র আইভী বলেন, এই প্রকল্পটি আমরা অনেকবার করার চেষ্টা করেছি কিন্তু পৌরসভার আমলে তখন এত টাকা পাইনি। সিটি করপোরেশনে যখন হলো তখন ওয়ার্ল্ড ব্যাঙ্কে প্রস্তাব দিলাম, আমি এখানে একটি খাল খনন করতে চাই। আমাকে সহযোগিতা করবা কিনা? তখন আমাকে আশ্বস্ত করা হলো, যত টাকা লাগে দেবো তুমি কাজ করো। এরপর শুরু হলো কাজ। ১‘শ ৮৮ কোটি টাকার কাজ এটা।
তিনি বলেন, জিমখানাতে এবং এই পাড়েতে যারাই ছিলেন আমি সবাইকে বলেছি একটু সময় নিন, আমি আপনাদের জন্য ব্যবস্থা করবো। একটু দেরিতে হলেও আমি ব্যবস্থা করবো। কিন্তু দুই চার পাঁচজন মিলে একটা মামলা করে দিয়েছে। কিন্তু এই মামলা করে খাল দখল করে রাখা যাবে? সরকারের আদেশ, সকল খাল, বিল, পুকুর খনন করতে হবে কেউ এসব অবৈধ দখল করে রাখতে পারবে না। এই সরকার কিন্তু এটা আইন করেছে।
আইভী বলেন, এই আপনারা আমার বিরুদ্ধে মামলা কেন করলেন? আমি তো আপনাদেরই সন্তান। আপনাদেরই বোন। আমি তো বলেইছিলাম আপনাদের ব্যবস্থা করবো এবং প্রয়োজনে আপনাদের ভাঙার টাকাও দেবো। কারণ, আমি একশো জন মানুষের জন্য দুই চার পাঁচ লাখ মানুষকে কষ্ট দিতে পারি না। এই কাজের জন্য আপনারা একশো জনম মানুষ নারাজ হয়েছেন অন্যদিকে পাঁচ লাখ মানুষ খুশি হয়েছে।
তিনি বলেন, যেভাবে খাল বিল শহর দখল হচ্ছে, এই দখল এই শহরে চলবে না, সোজা হিাসাব। আমি অন্তত যে কদিন ক্ষমতায় আছি, ততদিন আমি সিটি করপোরেশনের সকল খাল, পুকুর উদ্ধার করবোই।
আইভী বলেন, আজকে এই অনুষ্ঠানে আমাদের কাশিপুরের চেয়ারম্যান সাহেবকে কিন্তু দাওয়াত করেছিলাম। উনি যদি সরকারের একজন হয়ে থাকেন তাহলে আজকে তিনি এখানে আসলেন না কেন? আজতো কাশিপুরের সকলেরই এখানে থাকার কথা ছিলো। এবং বলার কথা ছিলো আপনি কাজ করে যান আমরা আপনাকে সহযোহিতা করবো। আমি প্রভাবশালীদের দ্বারস্থ না হয়ে সাধারণ মানুষের কাছেই বেশি গিয়েছি। তাই আমার দৃঢ় বিশ^াস এই বাবুরারাইল খাল খননের জন্য আপনারা সকলেই আমাকে সহযোগিতা করবেন।
তিনি বলেন, কাশিপুরকে আমরা সিটি করপোরেশনের আওতায় নিয়ে যাবো। কিন্তু উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাহেব এই সংযুক্তির বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। ৮ মাস ধরে সে মামলা চলছে। মামলা চলার কারণে সম্প্রসারণ করা যাচ্ছে না। আমরা ব্যাখ্যা দিয়ে মিনিষ্ট্রিতে পাঠিয়েছি। তবে আশা করি ইলেকশনটা শেষ হলে কাশিপুর, এনায়েতনগর, গোগনগর, ফতুল্লার আংশিক এবং কুতুবপুরের আংশিক আমাদের আওতায় চলে আসবে। ইনশাল্লাহ আমাকে যদি আল্লাহ বাঁচিয়ে রাখে আপনাদের এখানে কাজকর্ম করতে পারবো।
আইভী বলেন, কাশিপুর ইউনিয়ণ আমাদের সাথে সম্পৃক্ততা হওয়ার আগেই কিন্তু আমরা এখানে কাজ শুরু করেছি। সুতরাং এই এলাকাবাসীর বিশ^াস রাখতে হবে যে, আমি স্বার্থ ছাড়া দলমত নির্বিশেষে সকলের কাজ করি। আর এই কারণে আপনাদের সহযোগিতা চাই। আমার দলীয় পরিচয় কি, আপনার দলীয় পরিচয় কি এসব জানার দরকার নাই। সিটি করপোরেশন হলো আপনাদের, নিজেদের প্রত্যেকের। আমি যদি একটি দলীয় ফোড়ামে দাঁড়ায় তখন আমি দলের, আমি দল করি এবং আমি অবশ্যই বঙ্গবন্ধুর আদর্শের দল করি। এখান থেকে আমাকে কেউ সরাতে পারবে না। কিন্তু এর অর্থ এই না যারা অন্য দল করেন তাদের প্রতি আমার সম্মান নেই। অবশ্যই আমি আমার সম্মানবোধ রেখে, যারা অন্যদল করেন তাদের প্রতি সম্মান রেখে, আমি এলাকার কাজ করতে চাই। শুধু সকল দলের লোক এক হয়ে সিটি করপোরেশনের জন্য কাজ করবেন এটাই আমার বিশ^াস।
তিনি বলেন, আমি এ পর্যন্ত যে কাজগুলো করেছি তাতে আমার কোনো স্বার্থ নেই। নারায়ণগঞ্জের কোনো ঠিকাদারই সিটি করপোরেশনের কাজে কোনো দুই নম্বরী করতে পারে না। প্রত্যেকেই এখানে ভালো কাজ করেছেন। আমি একশো পার্সেন্ট কাজ বুঝে নিতে না পারলেও নব্বই পার্সেন্ট কাজ আমি ঠিকাদারদের কাছ থেকে বুঝে নিই। আমি দৃঢ়তার সাথেই বলে দিতে চাই, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনে কোনো প্রকার দুর্নীতি হয় না।

বিষেরবাঁশী ডেস্ক/সংবাদদাতা/হৃদয়

Categories: নারায়ণগঞ্জের খবর

Leave A Reply

Your email address will not be published.