মঙ্গলবার ৩ বৈশাখ, ১৪৩১ ১৬ এপ্রিল, ২০২৪ মঙ্গলবার

মেয়র আইভীর উন্নয়ন কর্মযজ্ঞে যোগ হচ্ছে আরো একটি প্রস্তাবিত স্বপ্নপূরী

বিষেরবাঁশী ডেস্কঃ আজ ৭ অক্টোবর রোববার নগরীতে আরো এক নতুন দিনের সুচনা হতে যাচ্ছে। বহুল প্রতিক্ষিত মৃত বাবুরাইল খালের প্রাণ সঞ্চারের কর্মযজ্ঞে হাত দেবেন মেয়র ডা.সেলিনা হায়াৎ আইভী।
ইতিহাসের স্বাক্ষী বিলুপ্ত প্রায় ২.৫ (আড়াই) কিলোমিটার দীর্ঘ বাবুরাইল খালটি সংস্কারের পর আইভী’র নাম বাবুরাইল খালের সাথে ইতিহাস হয়ে থাকবে বলে এলাকাবাসী মনে করছেন।
আজ রোববার আনুষ্ঠানিক ভাবে বাবুরাইল খাল সংস্কার কাজের উদ্ধোধন করবেন নারায়ণগঞ্জ সিটি মেয়র ডাঃ সেলিনা হায়াত আইভি। বাংলাবাজার হাজী উজির আলীর মাঠে এক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে কাজের শুভ উদঘাটন করার কথা রয়েছে। এ জন্য এলাকায় মানুষের মাঝে উৎসাহ বিরাজ করছে। সকলেই উৎফুল্ল এই ভেবে যে এলাকা এবার সুন্দর ও পরিকল্পিত হতে যাচ্ছে।
জানাগেছে,জলাশয় উদ্ধার ও সংস্কার করে নগরীর সৌন্দর্য বর্ধনে মন্ডলপাড়া থেকে চর কাশিপুর পর্যন্ত খালটিকে নতুন আঙ্গিকে সাজানো হবে। কয়েক দশক যাবত এই খালটি দখল ও ভরাট অবস্থায় পড়ে ছিল। ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছিল খালটি। ১৭০ কোটি টাকা ব্যয়ে এই খালটি সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন। নাসিককে সহযোগিতা করছে উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা। খালটি সংস্কার হলে শহরের সৌন্দর্য অনেকটা বৃদ্ধি পাবে বলে মনে করছেন নগরবাসী । খাল সংস্কারের এই উদ্যোগের জন্য মেয়রকে সাধুবাদ জানিয়েছে এলাকাবাসী ও নাগরিক মহল।
জানা গেছে, প্রায় দেড় বছর মেয়াদী খাল সংস্কারের এই প্রকল্পের কাজ ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গেছে। মন্ডলপাড়া থেকে চর কাশিপুর পর্যন্ত খালটির সংস্কারের মোট ব্যয় হবে ১৭০ কোটি টাকা। চলতি মাসের শেষের দিকে প্রকল্পটির কাজ শুরু হয়েছে। প্রায় আড়াই কিলোমিটার দৈর্ঘের খাল সংষ্কারের এই প্রকল্পের সময় দেয়া হয়েছে ১৫ মাস। বাবুরাইল মোড় থেকে কাশীপুর পর্যন্ত দুপাশে অনেকে দখল কওে বাড়িঘর নিজস্ব রাস্তা নিমার্ণ করেছে। সিটি করপোরেশন এসকল স্থাপনা সরিয়ে নেয়ার জন্য সকলকে অনুরোধ জানিয়েছে।
আনোয়ার হোসেন নামে এক ব্যক্তি বলেন, বড় কিছু পেতে গেছে ছোট ছোট ব্যক্তি স্বার্থ ত্যাগ করতে হয় । আমরা এলাক্ওা উন্নয়নে এবিষয়টি গুরুত্ব দিচ্ছি আশা করছি সবাই সহযোগীতা করে উন্নয়ণ এগিয়ে নিতে পারবো।তিনি বলেন, জিমখানায় পরিত্যক্ত রেলের জমি সিটি করপোরেশনকে দেয়া হয়েছে। দখলদাররা মামলা করেও টিকতে পারেন নি। গত সপ্তাহে তাদেও উচ্ছেদ করা হয়েছে।
মিলন হোসেন নামে আরেকজন বলেন, এই খাল দিয়ে বড় বড় নৌকা চলতে দেখেছি , কতো মাছ ধরেছি , গোসল করেচি। স্বপ্নেও ভাবতে পারি নাই খালটি উদ্ধার হবে। মেয়রকে ধন্যবাদ জানালে অকৃতজ্ঞতা প্রকাশ হবে। আমরা এলাকাবাসী তার কাছে কৃতজ্ঞ থাকলাম। যতো দিন এই খাল সচল থাকবে ততো দিন আইভির নাম থাকবে।
এই প্রকল্পের ঠিকাদারি পাওয়া রত্না এন্টারপ্রাইজের পরিচালক মো. জাকির হোসাইন বলেন,এই প্রকল্পটিকে ৮টি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। এই প্রকল্পটি পেয়েছে তিনটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। তাঁর মধ্যে আমার আছে ৪ অংশ। আরেকজনের রয়েছে ৩ অংশ এবং বাকি ১ অংশের দায়িত্বে রয়েছে আরেকটি প্রতিষ্ঠান। সব মিলিয়ে ১৭০ কোটি টাকার প্রকল্প এটি। সময় ১৫ মাস রয়েছে, সময়টা যদিও খুব অল্পো। তবে এর মধ্যেই শেষ করতে পারবো বলে মনে করি।
এ বিষয়ে সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এফ এম এহ্তেশামূল হক বলেন, ‘নগরীর সৌন্দর্য বর্ধনের জন্যই এই প্রকল্প ৷ ইতিমধ্যে এর কার্যক্রম চলছে ৷ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে তাঁর সুফল ভোগ করবে নগরবাসী ৷’
এদিকে খাল সংস্কারের এমন উদ্যোগের জন্য সাধুবাদ জানিয়েছে নাগরিক মহল। তাদের মতে, একটি খাল উদ্ধার মানে শহরের প্রাণ ফিরিয়ে আনা। এই কাজটি সিটি কর্পোরেশন করছে বলে মেয়রকে এর জন্য ধন্যবাদ ও সাধুবাদ জানাই। নাগরিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান বলেন, শহরে রাসেল পার্কটি এখনো সম্পন্ন হয়নি। কিন্তু যতোটুকু কাজ হয়েছে এর মধ্যেই শহরের রূপটি পরিবর্তিত হয়ে গেছে। তেমনি এই খালটি শীতলক্ষ্যা, বুড়িগঙ্গা, ধলেশ্বরী নদীর সাথে একটি সংযোগ তৈরি করবে। যে প্রকল্পের কথা শুনেছি সে অনুযায়ী, এই খালটি উদ্ধার ও সংস্কারের মাধ্যমে নারায়ণগঞ্জের সম্পূর্ণ রূপটাই পরিবর্তন হয়ে যাবে। এবং এটা যে হবে তাতে কোন সন্দেহ নেই। নারায়ণগঞ্জের মানুষ এক টুকরো স্বস্তি খুজে পাবে এই খালের ওয়াকওয়েগুলোতে।তিনি আরো বলেন, আমরা এই খালটি উদ্ধার করার জন্য আমরাই প্রথম নাগরিক কমিটি থেকে কথা বলেছি, আন্দোলন করেছি। এই প্রকল্পটা বাস্তবায়নের জন্য আমি নাগরিক কমিটির পক্ষ থেকে মেয়রকে সাধুবাদ জানাই।
জানা গেছে, এই খালটি সংস্কার হলে শীতলক্ষ্যা নদী ও বুড়িগঙ্গার শাখা নদী যেটি চরকাশিপুর এলাকা দিয়ে বয়ে গেছে সেই শাখার সাথে একটি সংযোগ তৈরি হবে। এদিকে প্রায় আড়াই কিলোমিটার দীর্ঘ এই খালটি সংস্কার করা হলে শহরের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পাবে। এই খালে কোন প্রকারের ময়লা পানি কিংবা ড্রেনের পানি থাকবে না । দুই পাশে থাকবে দৃষ্টিনন্দন ওয়াকওয়েএতে । এতে থাকবে সবুজের সমারোহ। রাতের সৌন্দর্যের জন্য ওয়াকওয়েতে এলইডি লাইট থাকবে । এছাড়া খালের দুই পাশে থাকবে রাস্তা ও ড্রেন। অনেকটা রাজধানীর হাতির ঝিল লেকের আদলে নির্মিত হবে এই খালটি। দেওভোগ পাক্কারোড খালটি মিলিয়ে বলা যায় নারায়ণগঞ্জে পরিপূর্ণ হতিরঝিল। সূত্র;নারাণগঞ্জের খবর

 

বিষেরবাঁশী.কম/ডেস্ক/নিঃতঃ

Categories: নারায়ণগঞ্জের খবর,সারাদেশ

Leave A Reply

Your email address will not be published.