বিষেরবাঁশী ডেস্ক: ফতুল্লা থানার পূর্ব ইসদাইর সুগন্ধা এলাকার পানি দেখলে জলের শহর ইতালির ভেনিসের কথা মনে পড়ে যায়। তবে পার্থক্য একটাই। সেই শহর পানি সৌন্দর্যের কারণে পরিণত হয়েছে আর সুগন্ধা এলাকার পানি এলাকাবাসীর দুঃখ আর কষ্টের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাদের এই দূর্ভোগের যেন সীমা নেই।
পানিই আমাগো কপাল, পানি আর আমাগো কাছে কিছু মনে হয় না। বছর পর বছর চইলা যাইতাছে, এই পানি দিয়াই তো চলতাছি। সব রাস্তায় এখন পানি। আর আমরা সারাটা বছর এই পানি দিয়াই চলতেছি, এভাবেই নিজেদের দূর্ভোগের কথা বললেন ফতুল্লা থানার পূর্ব ইসদাইরের সুগন্ধা এলাকার বাসিন্দা শফিক।
শফিক সুগন্ধা এলাকায় আছেন প্রায় পাঁচ বছর। ওই এলাকার পাওলা গার্মেন্টসে কাজ করেন। নিজের কর্মস্থল সেখানে হওয়ায় বাধ্য হয়ে ওই এলাকায় বসবাস করছেন।
শুক্রবার (২৭ জুলাই) সরেজমিনে দেখা যায়, নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের সংযোগ স্থল থেকে পুরো সুগন্ধা সড়কটি কল-কারখানার ক্যামিকেল মিশ্রিত পানিতে সড়কটি ডুবে আছে। সারা বছর সাঁকো দিয়ে চলাফেরা করে এই এলাকাবাসী। পুরো সড়কে চারটি সাঁকো দেওয়া হয়েছে। কিন্তু দূর্ভাগ্যবশত সাঁকোগুলো এখন ডুবো ডুবো অবস্থায়। আর দূর্ঘটনা যেন এই সড়কের প্রতিদিনের ঘটনা।
সুগন্ধা এলাকার শিশুরা ঘরবন্দী হয়ে আছে বহুদিন যাবৎ। কিন্তু এখন এর প্রভাব পড়ছে এই এলাকার শিশুদের পড়ালেখায়ও। সড়কে পানি থাকার কারণে সপ্তাহে প্রায় দিন এলাকার বাচ্চারা স্কুলে যেতে পারে না বলে জানান এলাকার বাসিন্দা নাঈমা বেগম। তিনি বলেন, আমার মেয়ে ইসলামিয়া মর্ডান একাডেমী স্কুলে ক্লাস টু তে পড়ে । রাস্তায় পানি থাকায় সাঁকো দিয়ে স্কুলে যায়। আমার আরেকটা বাচ্চা আছে। প্রতিদিন সময় করতে পারি না যে ওরে সাঁকো টা পার করে দিব। এজন্য প্রায় দিন মেয়ের স্কুল আর কোচিং মিস হয়। নাঈমা বেগমের মত একই কথা বলেন সুগন্ধা মসজিদের মুয়াজ্জিন নুরুজ্জামান । তিনি বলেন, সুগন্ধার পানি বাচ্চাগো পড়ালেখাও নষ্ট করতাছে। আগে সকাল সকাল বাচ্চারা আরবি পড়তে মসজিদে চইলা আসত। আর এখন রাস্তায় পানি দেইখা বাচ্চারা কম আসে। যা শিখাইছি অনেকেই অনেক কিছু ভুইলা গেছে।
একই অবস্থা দেখা যায় ইসদাইর বাজার সড়কে। এই সড়কেও প্রায় হাঁটু সমান পানি। পানি নিরসনে ড্রেনের কাজ শুরু করা হলেও বৃষ্টির জন্য তা আবার স্থগিত হয়ে আছে।
পূর্ব ইসদাইর এলাকার মেম্বার আলী আকবর দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, আমার এলাকাতেও পানি। আমি বয়স্ক মানুষ, এই পানি দিয়ে চলাফেরা করতে কি পরিমাণ কষ্ট হয় সেটা আমি বুঝি। আমি অনেক চেষ্টা করতেছি সুগন্ধা সড়কের জলাবদ্ধতা থেকে যেন এই এলাকাবাসী মুক্তি পায়। আমি এই নিয়ে এমপি শামীম ওসমান সাহেবের সাথে অনেকবার কথা বলছি। এখন এই সুগন্ধা সড়কের জন্য ৩৫ লক্ষ টাকার বাজেট করা হয়েছে। টেন্ডার পাশ হলেই এই সড়কের সংস্কার কাজ শুরু হবে।
বিষেরবাঁশী ডেস্ক/সংবাদদাতা/হৃদয়