বৃহস্পতিবার ১৪ চৈত্র, ১৪৩০ ২৮ মার্চ, ২০২৪ বৃহস্পতিবার

ভারতকে হারিয়ে এশিয়া কাপে চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ

বিশেরবাঁশী ডেস্ক: দেরাদুনে সাকিব আল হাসানরা বাংলাদেশের ক্রিকেটকে বিব্রতকর পরিস্থিতির মধ্যে ফেলে দিয়েছে। অন্যদিকে, মালয়েশিয়া থেকে মেয়েরা দিল বড় সুখবর। এ যেন ঈদের আগে আরেক ঈদের আনন্দ। প্রথমবার এশিয়া কাপে ইতিহাস রচনা করে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশের মেয়েরা। রোববার ফাইনালে ভারতকে ১১২ রানেই থামিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশের মেয়েরা। জবাবে বাংলাদেশ ৭ উইকেট হারিয়ে জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে যায়।

বাংলাদেশ ক্রিকেট ইতিহাসে সর্বোচ্চ সাফল্য এটি। এরআগে বাংলাদেশের মেয়েদের শিরোপা জয় তো দূরের কথা কখনো ফাইনালেই উঠতে পারেনি। এর আগে যে ছয়বার এশিয়া কাপ হয়েছে। সবগুলোই নিয়ে গেছে ভারত। এবার প্রথম পর্বে ভারতকে হারানো দেখেই বোঝা গিয়েছিল সালমার দল অন্যরকম কিছুই ঘটাতে চলেছে। শেষ অবধি হলোও তাই। মেয়েদের ক্রিকেটে শক্তিধর ভারতকে হারিয়ে এশিয়া কাপ জয় করল মেয়েরা। এই জয়ে ছেলেদের ক্রিকেটের দুর্দশা সামান্য হলেও মুছবে।

মজার ব্যাপার, বাংলাদেশের ফুটবল যখন ধুকছিল ঠিক তখনেই সামনে এসেছিল মেয়েররা। তাদের একের পর এক সাফল্যে ছেলেদের ব্যর্থতা খানিকটা আড়াল হয়। একইভাবে ক্রিকেটেও যখন গর্তে পড়েছে জাতীয় দল ঠিক তখনই মেয়েদের এশিয়া জয় বাংলাদেশের মানুষকে পুলকিত করছে। ঠিক মতো সুযোগ সুবিধা দিলে এই মেয়েরা যে আরো বড় সম্মান বয়ে নিয়ে আসবে সেটি এখন পানির মতো পরিস্কার।

এদিন ১১৩ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশকে দারুন শুরু এনে দেন দুই ওপেনার শারমিন সুলতানা আর আয়েশা খাতুন। দুজনে মিলে তোলেন ৩৫ রান। আয়েশাকে (১৭) হারানোর পরপরই বাংলাদেশ হারায় অপর ওপেনার শারমিনকে (১৬)। এরপর খানিকটা দিকভ্রান্ত হয়ে পড়ে বাংলাদেশ। তবে দলকে টেনে নিয়ে যান নিগার সুলতানা (২৭) ও রুমানা আহমেদ (২৩)। তবুও ম্যাচটি শেষ ওভার অবধি গড়ায়। যেখানে স্নায়ুচাপের পরীক্ষা দিয়ে বাংলাদেশকে জিতিয়েছেন জাহানারা আলম। শেষ বলে দরকার ছিল ২ রান। এক বলে ২ রানই নিয়েছেন এই পেসার। ম্যাচসেরা হয়েছেন রুমানা আহমেদ।

এরআগে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১১২ রানে তোলে ভারত। টসে জিতে বোলিংয়ে নেমে চতুর্থ ওভারেই ভারতীয় ওপেনার স্মৃতি মন্দনাকে(৭) রান আউট করেন সালমা। ভারতের রানের চাকাও শুরুতে ভালোই আটকে রাখে বাংলাদেশ। প্রথম ৫ ওভারের মধ্যে ২৩টি বল ‘ডট’ দিয়েছে বোলারেরা। রান তোলার চাপে পড়ে সপ্তম ওভারে দীপ্তি শর্মাকেও (৪) হারায় ভারত। তাঁকে সরাসরি বোল্ড করেন জাহানারা। ভারতের স্কোর তখন ৬.৪ ওভারে ২ উইকেটে ২৬। এখান থেকে ৬ রানের ব্যবধানে ভারতের আরও ২টি উইকেট তুলে নিয়েছে মেয়েরা। সাত, আট ও নয়-এই তিন ওভারে ৩ উইকেট হারায় ভারত।

দীপ্তি ফিরে যাওয়ার পরের ওভারেই ওপেনার মিতালি রাজকে (১১) তুলে নেন খাদিজা। নবম ওভারে আনজুয়া পাতিল (৩) আউট হয়েছেন নিজের দোষে। ৮.২ ওভারে রান নিতে গিয়ে নিজের প্রান্তে ফেরার সময় উইকেটরক্ষকের থ্রো দেখে তিনি উইকেট ঢেকে দৌড়ান। সালমারা ‘অবস্ট্রাক্টিং দ্য ফিল্ড’ আউটের আবেদন করলে টেলিভিশন রিপ্লে দেখে আউট ঘোষণা করেন থার্ড আম্পায়ার। ১৩তম ওভারে ভেদা কৃঞ্চমূর্তিকেও তুলে নেন অধিনায়ক সালমা। তাঁকে বোল্ড আউট করেন এই স্পিনার।

১৫তম ওভারে একাই ২ উইকেট তুলে নেন রুমানা আহমেদ। খাদিজার করা শেষ ওভারের প্রথম বলে রান আউটের শিকার হন ভারতের পেসার ঝুলন গোস্বামি। সতীর্থরা এক প্রান্তে তেমন ভালো করতে না পারলেও দলের ইনিংসটা বলতে গেলে একাই টেনেছেন ভারতের অধিনায়ক হারমনপ্রীত কাউর। ৪১ বলে ৫৬ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। বাংলাদেশের হয়ে সবচেয়ে সফল খাদিজা ও রুমানা। দুজনেই ২টি করে উইকেট নেন। ভারতের রানের চাকা আটকে রাখায় দারুণ অবদান রেখেছেন নাহিদা আক্তার ও সালমা খাতুন। ১ উইকেট নেওয়া সালমা ১৩টি ‘ডট’ দিয়েছেন। নাহিদা উইকেট না পেলেও ১৬টি ‘ডট’ দিয়েছেন।

বিশেরবাঁশী ডেস্ক/সংবাদদাতা/ইলিয়াছ

Categories: খেলাধূলা

Leave A Reply

Your email address will not be published.