শনিবার ৭ বৈশাখ, ১৪৩১ ২০ এপ্রিল, ২০২৪ শনিবার

ব্রাজিল বা আর্জেন্টিনাতেই ট্রফি যাবে: পেরেইরা

বিশেরবাঁশী ডেস্ক: ফিফার টেকনিক্যাল স্টাডি গ্রুপের প্রধান হিসেবে রাশিয়া বিশ্বকাপের মঞ্চে হাজির থাকবেন ব্রাজিলের কিংবদন্তি কোচ কার্লোস আলবার্তো পেরেইরা। ১৯৯৪ সালের বিশ্বকাপজয়ী ব্রাজিল দলের কোচ ছিলেন তিনি। দীর্ঘ কোচিং কেরিয়ারে পাঁচটি দেশকে বিশ্বকাপের মূল পর্বে পথ দেখিয়েছেন। স্পেনে অনুষ্ঠিত ১৯৮২ সালের বিশ্বকাপে কুয়েতকে দিয়ে সূচনা। ১৯৯০ বিশ্বকাপে তিনি সংযুক্ত আরব আমিরশাহীর (আরব আমিরাত) কোচের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৬ সালের বিশ্বকাপে দায়িত্বে ছিলেন সৌদি আরবের। এরপর পেরেইরার অধীনে দুইবার বিশ্বকাপে অংশ নিয়েছে ব্রাজিল। ১৯৯৪ সালে তার কোচিংয়ে ব্রাজিল চ্যাম্পিয়ন হলেও ২০০৬ বিশ্বকাপে কোয়ার্টার ফাইনালে ফ্রান্সের কাছে হেরে বিদায় নেয় সেলেসাওরা। আর ২০১০ সালে আয়োজক দেশ দক্ষিণ আফ্রিকার কোচ হিসেবে শেষবার বিশ্বকাপের আসরে হাজির ছিলেন পেরেইরা। এবার রাশিয়ায় অন্য ভূমিকায় দেখা যাবে তাকে। টুর্নামেন্ট চলাকালীন খেলার বিভিন্ন দিক নিয়ে বিশ্লেষণ করবেন ফিফার টেকনিক্যাল স্টাডি গ্রুপের সদস্যরা। সেই দলের প্রধান হিসেবে মস্কোর বিমানে ওঠার আগে ফিফার ওয়েবসাইটে বিশেষ সাক্ষাৎকার দিয়েছেন কার্লোস আলবার্তো পেরেইরা।

প্রশ্ন : জীবনে বহু বিশ্বকাপে আপনি বিভিন্ন দলকে পথ দেখিয়েছেন। তার মধ্যে সবচেয়ে স্মরণীয় বিশ্বকাপ কোনটি?

পেরেইরা : একটি নয়, দুটি বিশ্বকাপের কথা আমি উল্লেখ করতে চাই। সবচেয়ে স্মরণীয় বললে তো স্বাভাবিকভাবে ১৯৯৪ সালে ব্রাজিলকে চ্যাম্পিয়ন করার কথাই আসবে। দীর্ঘ ২৪ বছর বিশ্বকাপ জিততে না পারার প্রবল চাপ নিয়ে সেবার আমরা টুর্নামেন্টে যাত্রা শুরু করেছিলাম। ছেলেরা অসাধারণ দৃঢ়তা দেখিয়ে চতুর্থবার ব্রাজিলকে বিশ্বকাপ এনে দিয়েছিল। তার বাইরেও একটা বিশ্বকাপের কথা আমি কোনোদিন ভুলব না। সেটা ১৯৭০ সালের। সেবার ব্রাজিল দলের একজন সহকারী কোচিং স্টাফ হিসেবে আমি মেক্সিকোয় গিয়েছিলাম। যেহেতু সেটা ছিল আমার ক্যারিয়ারের অভিষেক মঞ্চ, তাই ওই আসরের প্রতিটি মুহূর্ত ছিল আমার কাছে স্পেশাল। তার ওপর দলে ছিলেন পেলে। দুরন্ত খেলে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ব্রাজিল। তাই ১৯৭০ সালের বিশ্বকাপও আমার কাছে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।

প্রশ্ন : কিন্তু ওই দুটি আসরের মধ্যে যদি কোনো একটিকে বেছে নিতে হয়, তবে কোনটিকে আগে রাখবেন?

পেরেইরা : দুটি আসর সম্পর্কেই আমার মনে আলাদা অনুভূতি রয়েছে। ১৯৭০ সালে বেঞ্চ থেকে পেলের খেলা দেখা যেমন মধুর ছিল, তেমনি কোচিং ক্যারিয়ারের হাতেখড়িও ছিল দারুণ রোমাঞ্চকর। আর ১৯৯৪ সালের বিশ্বকাপ জয় আমাকে কোচ হিসেবে প্রতিষ্ঠা ও সম্মান এনে দিয়েছে। তাই দুটি আসরের গুরুত্ব সমান হলেও দ্বিতীয়টাই আমার মনে অধিক দাগ কেটেছে।

প্রশ্ন : রাশিয়ায় কী ধরনের ফুটবল দেখার আশা নিয়ে আপনি বিমানে উঠছেন?

পেরেইরা : আমি সবসময়ই জমাট ফুটবল পছন্দ করি। যেখানে ফুটবলাররা প্রকৃত টিমগেম উপহার দেবে। একসঙ্গে অনেকে মিলে যেমন ডিফেন্স করবে, তেমনি আক্রমণেও উঠবে দলবেঁধে। একটা বলের পেছনে সবসময় একাধিক ফুটবলার দৌড়াবে। প্রেসিং ফুটবলে প্রতিপক্ষকে কাঁপিয়ে দেবে। এমন ফুটবল দেখার আশা নিয়েই আমি রাশিয়া যাব।

প্রশ্ন : ২০১৪ ব্রাজিল বিশ্বকাপে প্রচুর গোল হয়েছিল। এবারও কি তেমনটা আশা করছেন?

পেরেইরা : এটা এখনই বলা সম্ভব নয়। তবে গত কয়েকটি বিশ্বকাপের আসরে যেভাবে গোলের গড় বেড়েছে, তা এবারও বজায় থাকবে বলেই আমার বিশ্বাস। তবে রেকর্ড ভাঙা কিংবা না ভাঙাটা নির্ভর করবে দলগুলোর ডিফেন্সিভ কোয়ালিটির ওপর। তবে কতগুলো গোল হলো, সেই হিসাব কষতে বসার চেয়ে, আমি বেশি আগ্রহী বেশকিছু দৃষ্টিনন্দন গোল দেখার জন্য।

প্রশ্ন : এবারের বিশ্বকাপে ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারি (ভার) প্রযুক্তির সাহায্য নেওয়া হবে। এ সম্পর্কে আপনার মতামত?

পেরেইরা : ভিএআর প্রযুক্তি প্রচলনের ফলে রেফারিরা এখন চাপমুক্তভাবে খেলা পরিচালনা করতে পারবেন। আশা করি, এর ফলে ফুটবল মাঠে অনেক বেশি স্বচ্ছতা আসবে। রেফারির মারাত্মক ভুলে কোনো দলকে চোখের জলে মাঠ ছাড়তে হবে না। তাই বিশ্বকাপে প্রথমবার ফিফার এ প্রযুক্তি চালু করার সিদ্ধান্তকে আমি স্বাগত জানাচ্ছি।

প্রশ্ন : গত তিনটি বিশ্বকাপেই চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ইউরোপের তিন দেশ। এবার কি ইউরোপ মহাদেশের বাইরে ট্রফি যাবে বলে আপনার বিশ্বাস?

পেরেইরা : অবশ্যই আমি সে ব্যাপারে আশাবাদী। আর এটাও ঠিক যে ইউরোপের বাইরে যদি বিশ্বকাপ যায়, তবে ব্রাজিল কিংবা আর্জেন্টিনাতেই যাবে।

বিশেরবাঁশী ডেস্ক/সংবাদদাতা/ইলিয়াছ

Categories: খেলাধূলা,সারাদেশ

Leave A Reply

Your email address will not be published.