শনিবার ৭ বৈশাখ, ১৪৩১ ২০ এপ্রিল, ২০২৪ শনিবার

আজকের তারাবি

বিশেরবাঁশী ডেস্ক: আমাদের দেশে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের নির্দেশ অনুযায়ী অধিকাংশ মসজিদে ২৭ রমজানে কোরআন খতম করা হয়। প্রথম ছয় তারাবিতে দেড় পারা করে মোট ৯ পারা পড়া হয়। পরবর্তী ২১ তারাবিতে এক পারা করে বাকি ২১ পারা পড়া হয়। এভাবে ২৭ দিনে ৩০ পারা তথা এক খতম কোরআন পড়া হয়। আলোকিত বাংলাদেশের পাঠকদের জন্য প্রতিদিন প্রকাশিত হবে পঠিতব্য অংশের বিষয়বস্তু।
১. সূরা ফাতেহা : (১-৭)
এই সূরা পাঠ ছাড়া কোনো নামাজ শুদ্ধ হয় না। সে হিসেবে এর অপর নাম সূরাতুস সালাহ। এটি মক্কা ও মদিনায় দুইবার নাজিল হয়েছে। এ সূরার প্রথমে আল্লাহর প্রশংসা ও তার মাহাত্ম্য বর্ণনা করা হয়েছে। তারপর বান্দার জন্য সহজ-সরল পথ ‘সিরাত-আল-মুসতাকিম’ চাওয়া হয়েছে। সিরাতাল মুস্তাকিমের ব্যাখ্যা করা হয়েছে। সব শেষে পথভ্রষ্টদের পরিচয় এবং সে পথে না যাওয়ার প্রার্থনা করা হয়েছে।
২. সূরা বাকারা : (১-২০৩)
আজকের তারাবিতে পবিত্র কোরআনের প্রথম দেড় পারা পঠিত হবে। এখানে সূরা বাকারার ১ থেকে ২০৩ নম্বর আয়াত তথা প্রথম থেকে ২৫তম রুকুর মাঝামাঝি পর্যন্ত পড়া হবে। সূরা বাকারা মদিনায় অবতীর্ণ সূরা। ক্রমিক নম্বরে এটি পবিত্র কোরআনের দ্বিতীয় সূরা।
প্রথম রুকু ১ থেকে ৭ আয়াত পর্যন্ত পবিত্র কোরআন সন্দেহাতীতভাবে যে নির্ভুল একটি গ্রন্থ, সে কথা বলা হয়েছে। তারপর বলা হয়েছে, এ কিতাব মুত্তাকিদের জন্য হেদায়েত। মুত্তাকি কারা? কী তাদের বৈশিষ্ট্য? তাদের পরিণাম কী এবং যারা খোদাভীরু নয়, তাদেরই বা পরিণাম ও বৈশিষ্ট্য কেমন হবেÑ এসব বলা হয়েছে।
দ্বিতীয় রুকু, ৮ থেকে ২০ নম্বর আয়াতে মোনাফেকদের সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। মোনাফেকদের বৈশিষ্ট্য কী? তারা কীভাবে সাধারণ মানুষকে ঠকাতে গিয়ে নিজেরাই নিজেদের ঠকায়, এর বিস্তারিত আলোচনা উদাহরণ দিয়ে করেছেন আল্লাহ তায়ালা।
২১ থেকে ২৯ নম্বর আয়াত, তৃতীয় রুকুতে মানুষের উদ্দেশে উদাত্ত আহ্বান করা হয়েছে তার প্রতিপালকের ইবাদত করার জন্য। কেন ইবাদত করতে হবে, এর যুক্তিও তুলে ধরা হয়েছে। কোরআনের মহিমা বর্ণনা করে বলা হয়েছেÑ তোমরা যদি এ কোরআন আল্লাহর বাণী হওয়ার ব্যাপারে সন্দেহ পোষণ করো, তাহলে অন্তত কোরআনের ছোট্ট একটি সূরার অনুরূপ সূরা রচনা করে আন। তবে তা তোমরা পারবে না।
৩০ থেকে ৩৯ নম্বর আয়াতে, চতুর্থ রুকুতে আদম (আ.) এর সৃষ্টি, ফেরেশতাদের সেজদাহ, ইবলিসের অহংকার এবং আদম ও মা হাওয়ার জান্নাত থেকে অবতরণের ঘটনা বলা হয়েছে। বলা হয়েছে, রিসালাতের নির্দেশ অনুসরণের মাধ্যমেই মানবজাতি আবার জান্নাতের আবাস ফিরে পাবে। ৪০ থেকে ১০৩ নম্বর আয়াত, পঞ্চম থেকে ১২তম রুকু পর্যন্ত বনি ইসরাইলদের বিভিন্ন বিষয় বলে তাদের বারবার বলা হয়েছে, তোমাদের কিতাবের নির্দেশনা অনুযায়ী এ কিতাব ও এ নবীর ওপর ঈমান আন। বনি ইসরাইলের ওপর আল্লাহ তায়ালা কী কী অনুগ্রহ করেছেন, বিনিময়ে তারা কত জঘন্য নাফরমানি করেছে, এসব ঘটনাও বলা হয়েছে। বিশেষ করে মুসা (আ.) এর অনুপস্থিতিতে গো-পূজা, তাদের ক্ষমার শর্ত দেওয়ার পরও সে শর্ত ভঙ্গ করা, জান্নাতি খাবার ‘মান্না ও সালওয়া’ খেতে অনীহা প্রকাশ করা, সম্পত্তির জন্য একজন আরেকজনকে হত্যা করলে তা জানানোর জন্য আল্লাহ তায়ালা হত্যাকৃত ব্যক্তির গায়ে গোমাংস স্পর্শের নির্দেশ দেন, ওই নির্দেশের বিপরীতে বনি ইসরাইল কেমন গোঁড়ামি ও প্যাঁচের পথ বেছে নেয়Ñ এসব আলোচনা করা হয়েছে।
১০৪ থেকে ১১৯ নম্বর আয়াত, ১৩ থেকে ১৪তম রুকুতে উম্মতে মুহাম্মদিকে উদ্দেশ করে বলা হচ্ছে, তোমরা বনি ইসরাইলের মতো অকৃতজ্ঞ হয়ো না। তোমাদের রাসুলের সহযোগী হও। পূর্ববর্তী উম্মতরা যেমন ধর্মীয় কোন্দলে নিজেরা শতধাবিভক্ত হয়ে ধ্বংস হয়ে গেছে, তোমরা তা হয়ো না।
এরপর হজরত ইবরাহিম (আ.) এর দৃষ্টান্ত পেশ করা হয়েছে। কাবাঘর নির্মাণের আলোচনা করা হয়েছে। বলা হয়েছে, ইবরাহিমি ধর্ম ও মুহাম্মদি ধর্ম একই ধর্ম। এর মাঝে কোনো পার্থক্য নেই। ১২২ থেকে ১৪১ নম্বর আয়াত তথা ১৫ ও ১৬তম রুকুতে এসব বলা হয়েছে। ১২২ থেকে ১৫১ নম্বর আয়াত, ১৭ ও ১৮তম রুকুতে কেবলা পরিবর্তনের নির্দেশনা, কারণ ও যৌক্তিকতা তুলে ধরা হয়েছে। ১৯তম রুকুতে, ১৫২ থেকে ১৬৬নং আয়াতে বিশ্বাসীদের গুণাবলি, তাদের জীবনে আসা পরীক্ষার ধরন সম্পর্কে আলোচনা এসেছে। সত্য গোপনকারীদের প্রতি কঠোর ভাষায় নিন্দা করা হয়েছে। ২০ ও ২১তম রুকুতে, ১৭৪ নম্বর আয়াতে মানুষের জন্য সাধারণ হেদায়েত করা হয়েছে। যেমনÑ হালাল খাওয়া, হারাম বর্জন করা, সত্য গোপন না করা ইত্যাদি।
২২তম রুকু, ১৭৭ থেক ১৮২ নম্বর আয়াতে ঈমানের তাৎপর্য ও সৎকাজের গুরুত্ব সম্পর্কে আলোচনা হয়েছে। কিসাসের বিধান এবং কিসাসের মাঝেই যে জীবন নিহিত রয়েছে, সে যৌক্তিকতা তুলে ধরা হয়েছে। আরও আলোচনা হয়েছে মৃত্যুপথযাত্রীর অসিয়তের বিধান সম্পর্কে। ২৩ ও ২৪তম রুকু, ১৮৩ থেকে ১৯৬ নম্বর আয়াতে রোজার বিধান, সফর ও মুসাফিরের রোজা, অসুস্থ ব্যক্তির রোজা, চাঁদ দেখা ও রমজান মাসেই কোরআন নাজিল হওয়ার বিষয় আলোচনা হয়েছে। ১৯০ থেকে ১৯৬ নম্বর আয়াতে যুদ্ধের নির্দেশ ও জুলুমের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে মুসলিম বাহিনীকে। ১৯৭ থেকে ২০৩ নম্বর আয়াত তথা ২৫তম রুকুর মাঝামাঝি পর্যন্ত হজের বিধিবিধান আলোচনা করা হয়েছে।

বিশেরবাঁশী ডেস্ক/সংবাদদাতা/ইলিয়াছ

Categories: লাইফস্টাইল,সারাদেশ

Leave A Reply

Your email address will not be published.