শুক্রবার ৬ বৈশাখ, ১৪৩১ ১৯ এপ্রিল, ২০২৪ শুক্রবার

তিন ছাত্রী হলে ফিরেছেন: প্রভোস্ট

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কবি সুফিয়া কামাল হলের যে তিন ছাত্রীকে রাতের আঁধারে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল তারা শুক্রবার (২০ এপ্রিল) বিকালে হলে ফিরেছেন বলে জানিয়েছেন হলের প্রভোস্ট ড. সাবিতা রেজওয়ানা রহমান। শুক্রবার রাতে বাংলা ট্রিবিউনকে তিনি এ কথা জানান।
তবে সেই তিন ছাত্রী রাতে হলে অবস্থান করছেন কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ আমিতো বলেছি মেয়েরা ফিরেছে। তারপর নির্দিষ্ট এক-দু’জন মেয়ে রাতে হলে আছে কি না এমন প্রশ্নে আমরা মেয়েদের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত হবো। মেয়েদেরকে কাউন্সিলিং করার জন্য অভিভাবকরা নিয়ে গিয়েছিল, আবার দিয়ে গেছে।’

হল প্রভোস্ট বলেন, ‘তিন জন ছাত্রীর মধ্যে শুক্রবার দুপুরে দুই জন এবং বিকাল ৪টার দিকে আরেকজন হলে ফিরে এসেছে। এদের মধ্যে দুইজনের সঙ্গে আমার দেখা হয়েছে। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তঃফুটবল খেলায় অংশগ্রহণ করেছে।’

তিনজনের মধ্যে কে কখন ফিরেছে জানতে চাইলে সাবিতা রেজওয়ানা রহমান বলেন, ‘আমি কোনও ছাত্রীর নাম বলতে চাই না।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. একেএম গোলাম রব্বানি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন,’ তিনজন ছাত্রী হলে আসছে ৷ তারা এখন হলে আছে।’
ওই হলের আবাসিক ছাত্রী তোহুুরা তাবাসুম তরী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ তিন জনের মধ্যে শারমীন শুভ রাতে হলে অবস্থান করছে। বাকি দু’জন আছে কি না জানি না। তবে শুনেছি ওরা ফিরেছে।’

প্রসঙ্গত, কবি সুফিয়া কামাল হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইফফাত জাহান এশাকে কেন্দ্র করে গুজব ছড়ানো অভিযোগে বৃহস্পতিবার রাতে সুফিয়া কামাল হল থেকে তিন ছাত্রীকে অভিভাবকদের সঙ্গে বের করে দেওয়া হয়। ওই তিন ছাত্রী হলেন—গণিত বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শারমীন শুভ, থিয়েটার অ্যান্ড পারফরমেন্স স্টাডিজ বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী কামরুন্নাহার লিজা ও গণিত বিভাগের পারভীন। রাত ১০টার দিকে পারভীন ও লিজা এবং রাত ১২টার দিকে শুভকে হল ছাড়তে হয়। অভিভাবকরা এসে তাদের নিয়ে যান। এছাড়া পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী রিমির বাবা ধামরাই থেকে সুফিয়া কামাল হলে উপস্থিত হন রাত সাড়ে ১২টার দিকে। পরে তিনি একাই হল অফিস থেকে বেরিয়ে আসেন।

ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর মধ্যরাতেই সুফিয়া কামাল হলের সামনে বিক্ষোভ করেন কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতাকর্মীরা। কোটা সংস্কার আন্দোলনে গঠিত বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুন ঘটনাস্থলে সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেন, ‘কোনও তদন্ত ছাড়াই হলের ছাত্রীদের বের করে দেওয়া হয়েছে। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে আন্দোলনকারীদের নিরাপত্তার দাবি জানিয়েছিলাম। প্রশাসন আশ্বাসও দিয়েছিল। কিন্তু প্রশাসন সেই ওয়াদা ভঙ্গ করেছে। এর প্রতিবাদে আমরা শুক্রবার (২০ এপ্রিল) সকালে আমাদের কর্মসূচি ঘোষণা করবো। একইসঙ্গে আমরা হল প্রভোস্ট অধ্যাপক সবিতা রেজওয়ানা রহমানের পদত্যাগের দাবি জানাচ্ছি।’

এ বিষয়ে সুফিয়া কামাল হলের প্রভোস্ট ড. সাবিতা রেজওয়ানা রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এশা একজন শিক্ষার্থীর রগ কেটে দিয়েছিল বলে যে গুজব ১০ এপ্রিল ছড়ানো হয়েছিল, মোবাইল ফোন চেক করে ওই ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত করেছি। যারা ওই ঘটনায় জড়িত ছিল, তাদের অভিভাবকদের হলে ডেকেছি। তাদের (অভিভাবকদের) ওই ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ভিডিওগুলো দেখানো হয়েছে। তখন অভিভাবকরা নিজেরাও লজ্জা পেয়েছেন এবং তারা স্বেচ্ছায় তাদের মেয়েদের নিয়ে গেছেন।’

একই দাবি করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান। তিনি বলেন, ‘মেয়েদের বের করে দেওয়া হয়নি। তিন ছাত্রীকে অভিভাবকের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। বের করে দেওয়ার কথাটা গুজব। এর মাধ্যমে বিভ্রান্তি ছড়ানোর পাঁয়তারা চলছে। হল থেকে কাউকেই বের করে দেওয়া হয়নি।’

বিষেরবাঁশী ডেস্ক/সংবাদদাতা/মিতু

Categories: সারাদেশ

Leave A Reply

Your email address will not be published.