শুক্রবার ১৫ চৈত্র, ১৪৩০ ২৯ মার্চ, ২০২৪ শুক্রবার

ঋণ নিয়ে পরিশোধ করেন না বেসিক ব্যাংকের গ্রাহকরা

বিষেরবাঁশী ডেস্ক: ঋণ নেওয়ার পর পরিশোধ করার নজির নেই রাষ্ট্রায়ত্ত বেসিক ব্যাংকের গ্রাহকদের। এ কারণে এ ব্যাংকের ঋণের পাশাপাশি খেলাপির তালিকাও তালগাছের মতো লম্বা হয়েছে। ধুরন্ধর ব্যবসায়ীরা ব্যাংকের ওই দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়ে হাতিয়ে নিয়েছেন কোটি কোটি টাকা। এ সুযোগ বুঝে নামসর্বস্ব এবং অস্তিত্বহীন প্রতিষ্ঠানও নাম লিখিয়েছে ব্যাংকটির ঋণের তালিকায়। এখন ঋণখেলাপি অনেককে খুঁজে পাচ্ছে না প্রতিষ্ঠানটি। তাদের বেশির ভাগ লাপাত্তা। তবে নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশ ব্যাংক এবং ব্যাংক ও আর্থিক বিভাগের নিয়ন্ত্রণ ব্যাংকগুলোর ওপর না থাকায় এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

এ ছাড়া ব্যাংকটির ঋণখেলাপিজনিত ঘাটতির চাপ এসে পড়েছে সরকারের ওপরে। চলতি বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত ব্যাংকের মূলধন ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৬২৪ কোটি টাকা। সরকার থেকে ৩ হাজার ৩৯০ কোটি টাকা মূলধন বাবদ দেওয়ার পরও ব্যাংকটির ঘাটতি রয়েছে ২ হাজার ২১০ কোটি ২৪ লাখ টাকা। এই মূলধন ঘাটতির সৃষ্টি হয়েছে ব্যাংকের শ্রেণিকৃত ঋণের বিপরীতে রক্ষীতব্য প্রভিশন ঘাটতির কারণে। এর আগে ২০১৪-১৫ অর্থবছরে সরকার থেকে ১ হাজার ১৯০ কোটি, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ১ হাজার ২০০ কোটি এবং ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ১ হাজার কোটিসহ মোট ৩ হাজার ৩৯০ কোটি টাকা সরবরাহ করা হয়। এদিকে ব্যাংক পরিচালনা ব্যয় কমাতে তৎপর হলেও আশানুরূপ কোনো অগ্রগতি নেই। তথ্যমতে, ২০১৪ সালে ব্যাংকটির পরিচালনা ব্যয় ছিল যেখানে ২৭৭ কোটি ১৭ লাখ টাকা। গত দুই বছরে কমেছে মাত্র ৮ শতাংশের মতো অর্থাৎ ব্যয় হয়েছে ২৬৮ কোটি ৭২ লাখ টাকা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, যে হারে ব্যয় কমার কথা যা কমেছে তার অনুপাতে সামান্য।

ব্যাংকটির পরিসংখ্যান বলছে, গত ৩০ জুন পর্যন্ত ঋণ নিয়ে পরিশোধ করেনি-এমন প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৬২৮টি। খেলাপি প্রতিষ্ঠানের বিপরীতে ব্যাংকের প্রদেয় মুনাফার পরিমাণ ৬ হাজার ৫৩৮ কোটি ৪২ লাখ টাকা। তবে সর্বোচ্চ ১২৯ কোটি এবং সর্বনিম্ন ১ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ দেওয়া হয়েছে ব্যাংকটির গ্রাহকদের।

যার মধ্যে ১০০ কোটির ওপরে ঋণ নিয়েছে ১১টি প্রতিষ্ঠান; যার পরিমাণ ১ হাজার ২৫৬ কোটি ৩২ লাখ টাকা; ৫০ থেকে ১০০ কোটি পর্যন্ত ৩০টি, টাকার পরিমাণ ২ হাজার ১০৪ কোটি ৬৭ লাখ টাকা; ১০ থেকে ৫০ কোটি পর্যন্ত ৯৫টি, যার টাকার অঙ্কে ২ হাজার ৪০৩ কোটি ৮২ লাখ টাকা; ৫ থেকে ১০ কোটি টাকা পর্যন্ত ৫০টির বিপরীতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৩৬০ কোটি ৮২ লাখ; ১ থেকে ৫ কোটি পর্যন্ত ১৩৭টি প্রতিষ্ঠানের কাছে ব্যাংকের বকেয়ার পরিমাণ ৩২৫ কোটি ৮১ লাখ এবং কোটি টাকার নিচে ৩০৫টি প্রতিষ্ঠানের কাছে বকেয়ার পরিমাণ ৮৭ কোটি ৭১ লাখ টাকা।

নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে আবদুল হাই বাচ্চুর নেতৃত্বাধীন পর্ষদ (২০০৯ থেকে ২০১৪ সাল) কমিশনের মতো পরবর্তী কমিশনও একই পথ অনুসরণ করেছে, যা সম্প্রতি অনুমতি হিসাব সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটিতে উত্থাপিত তালিকায় ওঠে এসেছে। ব্যাংকটির বিভিন্ন শাখার মাধ্যমে এসব ঋণ দেওয়া হয়। সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, বেসিক ব্যাংকে ২০০৯-১৭ পর্যন্ত গত ৯ বছরে ঋণ বিতরণ করা হয় ৩০ হাজার ৮০১ কোটি ১৫ লাখ টাকা এবং আদায়ের পরিমাণ ২৩ হাজার ৮২৮ কোটি ৫৮ লাখ টাকা। বাংকটির ঋণ বিতরণ এবং আদায়ের মধ্যে এখনো ঘাটতি ৬ হাজার ৫৩৮ কোটি ৪২ লাখ টাকা। এর মধ্যে চলতি বছরের জুন পর্যন্ত ব্যাংকটির বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ ছিল ২ হাজার ৬৭৫ কোটি ৮৬ লাখ টাকার বিপরীতে আদায় ২ হাজার ৩৮২ কোটি ৩৫ লাখ টাকা। এই অর্থবছরেও ব্যাংকটির ঘাটতি ঋণের হার ৩০৭ কোটি টাকা।

নিয়মবহির্ভূতভাবে বেসিক ব্যাংক ১ হাজার ২৫০ কোটি টাকা ঋণ দিয়েছে ১১টি প্রতিষ্ঠানকে অর্থাৎ প্রতিটি প্রতিষ্ঠানই ঋণ পেয়েছে ১০০ কোটি টাকার ওপরে। এসব ঋণখেলাপি ঋণের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঋণ দেওয়া হয়েছে মাজেদুল হক চিশতি শামীম নামে এক ব্যক্তিকে। দি ওয়েল টেক্স লিমিটেডের স্বত্বাধিকারী তিনি। এই প্রতিষ্ঠানের ঋণের পরিমাণ ১২৮ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। দ্বিতীয় শীর্ষ ঋণখেলাপি ফজলুল হক সিকদার নামে এক ব্যক্তি। তার প্রতিষ্ঠানের নাম ডেল্টা সিস্টেম লিমিটেড; যার ঋণের পরিমাণ ১২৮ কোটি ৪২ লাখ টাকা। একইভাবে মাহজাবিন মোর্শেদের আইজি নেভিগেশন লিমিটেডের নামে ১১৯ কোটি ৯৫ লাখ, ফয়সাল মুরাদ ইব্রাহিমের বে-নেভিগেশন লিমিটেডের নামে ১১৬ কোটি ৩৮ লাখ, গুলশান আরা বেগমের ক্রিস্টাল স্ট্রিল এবং শিপব্রেকিং লিমিটেডের নামে ১১৩ কোটি ৮৩ লাখ, ম্যাপ পেপার বোর্ড মিলস লিমিটেডের স্বত্বাধিকারী মোশাররফ হোসেনের প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে ১১৩ কোটি ৪২ লাখ, শেখ শাহিজাদ ইসলামের প্রোফিউশন টেক্সটাইলস লিমিটেডের অনুকূলে ১১১ কোটি ৫৫ লাখ, আনারুজ্জামানের মা টেক্সের অনুকূলে ১১১ কোটি ২২ লাখ, আমজাদ হোসেন চৌধুরীর প্রতিষ্ঠান কনফিডেন্স সু লিমিটেডের নামে ১০৮ কোটি ২৯ লাখ, সাব্বির হুসাইনের এআরএসএস এন্টারপ্রাইজের নামে ১০২ কোটি ৪০ কোটি এবং আসমা খাতুনের প্রতিষ্ঠান নিউ অটো ডিফাইনের নামে ১০১ কোটি ৮৭ লাখ টাকা।

৫০ থেকে ১০০ কোটি টাকা পর্যন্ত ৩০ জন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান বেসিক ব্যাংকের ঋণখেলাপি। তাদের মোট ঋণের পরিমাণ ২ হাজার ১০৪ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। এ তালিকায় সর্বোচ্চ ঋণখেলাপি আবদুল কুদ্দুস নামে এক ব্যক্তি। তার প্রতিষ্ঠান আর কে ফুড লিমিটেড। এই প্রতিষ্ঠানটির ঋণের পরিমাণ ৯৮ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ঋণখেলাপি কামাল হোসেন সেলিম নামে এক ব্যক্তি। তার প্রতিষ্ঠান টেকনো ডিজাইন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটির ঋণের পরিমাণ ৯৬ কোটি ৮২ লাখ টাকা। একইভাবে ফিয়াজ এন্টারপ্রাইজের ওয়াহিদুর রহমানের নামে ৯৩ কোটি ৭২ লাখ টাকা, ইনজামুল হকের প্রতিষ্ঠান সাইফান শিপিং লাইন লিমিটেডের নামে ৮৮ কোটি ৪৩ লাখ এবং ইমারেল অটো ব্রিকস লিমিটেডের রেজাউল গনির নামে ৮৫ কোটি ৫ লাখ টাকা।

আর ১০ থেকে ৫০ কোটি টাকা ঋণ নেওয়া গ্রাহকের সংখ্যা ৯৫ জন। এসব প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে ঋণের পরিমাণ ২ হাজার ৪০৩ কোটি টাকা। এ ক্যাটাগরিতে সর্বোচ্চ ঋণখেলাপি হচ্ছে কামাল জামান মোল্লার ভাসাবি ফ্যাশন লিমিটেড; যার ঋণের পরিমাণ ৪৯ কোটি ৯৩ লাখ এবং দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ঋণখেলাপি ইফতেফার আলম ভূঁইয়ার ওয়েস্টকোস্ট ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড। যার ঋণের পরিমাণ ৪৭ কোটি ৩৭ লাখ ও তৃতীয় সর্বোচ্চ আকতারুজ্জামানের অনলাইন প্রোপাটিস লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটির ঋণের পরিমাণ ৪৭ কোটি ১৬ লাখ টাকা।

মামলায় আটকে আছে ৫ হাজার ২৬২ কোটি টাকা : অর্থ আত্মসাৎ, ঋণ জালিয়াতি, খেলাপি ঋণের বিপরীতে অর্থঋণ আদালতে করা ৩২৬টি মামলার বিপরীতে ব্যাংকের আটকে আছে ৫ হাজার ২৬২ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৩ হাজার কোটি টাকার খেলাপি ঋণের বিপরীতে অর্থঋণ আদালতে ২০৯টি মামলা করেছে ব্যাংক। জালিয়াতি করে দেওয়া ৪৫০ কোটি টাকা ঋণের বিপরীতে মামলা হয়েছে ২৯টি। অন্য বিভিন্ন মামলায় আটকে আছে বাকি অর্থ।

জানতে চাইলে বেসিক ব্যাংকের চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন এ মজিদ বলেন, ‘খেলাপি গ্রাহকদের বিষয়ে কোনো ছাড় দিচ্ছে না প্রতিষ্ঠানটি। সম্ভাব্য সব ধরনের পন্থা অবলম্বন করা হচ্ছে। যার মধ্যে খেলাপি গ্রাহকদের কাছ থেকে অর্থ আদায়ের বিষয়টি ওই প্রক্রিয়ার মধ্যে আনতে সচেষ্ট রয়েছি।’ তিনি বলেন, পুনঃতফসিল করা ঋণ আবার খেলাপি হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে দুদকের মামলার পর থেকে অধিকাংশই পালিয়ে বেড়াচ্ছে।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক অর্থ-উপদেষ্টা এবি মীর্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে পরিশোধ না করা রেওয়াজে পরিণত হয়েছে। শুধু যে গ্রাহকরা এর জন্য দায়ী তা নয়, কর্তৃপক্ষের গাফলতি অনেকটা দায়ী। শুধু বেসিক ব্যাংক নয়, সোনালী ব্যাংকের হলমার্ক কেলেঙ্কারি সবাইর জানা। তাই ব্যাংকগুলোকে প্রতিযোগিতায় টিকিয়ে রাখতে ঋণগ্রহীতাদের কাছ থেকে অর্থ আদায়ে কর্তৃপক্ষের তৎপরতা চালাতে হবে। আইনি পদক্ষেপও নিতে হবে।

ঋণখেলাপি প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে কি পদক্ষেপ নেওয়া উচিত জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, কেবলমাত্র বেসিক ব্যাংক নয়, সোনালী, জনতা ও রূপালী ব্যাংক সবাইর অবস্থা একই। আর সরকার যে মূলধনি সরবরাহ করছে ব্যাংকে সেগুলো জনগণের টাকা; এর ফলে সামষ্টিক অর্থনীতিতে বড় ধরনের প্রভাব পড়ছে। কারণ জনগণ যে জন্য কর দিচ্ছে সেটার যথার্থ ব্যবহার হচ্ছে না; পুরো টাকাই পাচার হয়ে যাচ্ছে।

এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের উপায় কী জানতে চাইলে অর্থনীতির এই অধ্যাপক বলেন, এসবকে শেয়ারবাজারের মাধ্যমে বিক্রি করে দেওয়া। ঘটনা ঘটার পর সরকার এসব অপকর্মের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দিলেও পরক্ষণেই তা ভুলে যায়; এটাই আমাদের জন্য দুর্ভাগ্য। তিনি আরো বলেন, খেলাপি ঋণ কিংবা ব্যাংকে লাভজনক পর্যায়ে উন্নীত করতে ব্যর্থ হলে সরকারি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদকে অপসারণের ক্ষমতা অর্থ মন্ত্রণালয় কিংবা বাংলাদেশ ব্যাংকের থাকতে হবে, যা বেসরকারি ব্যাংকগুলোর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য আছে, তা হলে অনিয়মের মাধ্যমে কোনো কিছু করার আগে নিজের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার কথা চিন্তা করে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারবে ব্যাংক পরিচালনা পর্ষদ, যোগ করেন ঢাবির অধ্যাপক আবু আহমেদ। এ ছাড়া সরকার রাষ্ট্রায়ত্ত এক-দুটি ব্যাংক রেখে বাকিগুলো বন্ধ করে দিতে পারলে সমাধানে পৌঁছানো সম্ভব। এমনকি ব্যাংকিং অ্যাক্ট আইনে পরিবর্তন এনেও স্বচ্ছতা ফেরানো যায়, বলেন তিনি।

মুনাফায় ফিরতে কমানো হচ্ছে বেশি সুদের আমানত : খরচ কমিয়ে মুনাফায় ফিরতে আগে নেওয়া বেশি সুদের আমানত কমাচ্ছে ব্যাংকটি। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত শাখা ব্যবস্থাপক সম্মেলনে বেশি সুদের আমানত কমানোর তাগাদা দেওয়া হয়েছে। গত জুনের হিসাবে দেখা যাচ্ছে, ব্যাংকটি ১৪ হাজার ৮৫৪ কোটি টাকা আমানতের মধ্যে তুলনামূলক বেশি সুদের মেয়াদি আমানত রয়েছে ১০ হাজার ৬৮ কোটি টাকা। গত এক বছরে মোট আমানত ৩৩৫ কোটি টাকা বেড়েছে। অথচ মেয়াদি আমানত কমানো হয়েছে ৭০৪ কোটি টাকা। এর পরও চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে মাত্র ২০ কোটি টাকার পরিচালন মুনাফা করেছে ব্যাংকটি। আগের বছরের প্রথম ছয় মাসে অবশ্য ৪৬ কোটি টাকা লোকসান হয়েছিল। চলতি বছরের এই মুনাফার বড় অংশই এসেছে নতুন বিতরণ করা ২ হাজার ৬৪১ কোটি টাকা ঋণের বিপরীতে।

বিষেরবাঁশী ডেস্ক/সংবাদদাতা/হৃদয়

Categories: অর্থনীতি

Leave A Reply

Your email address will not be published.