বৃহস্পতিবার ৫ বৈশাখ, ১৪৩১ ১৮ এপ্রিল, ২০২৪ বৃহস্পতিবার

খাদ্যের দাম চলে যাচ্ছে মানুষের নাগালের বাইরে

বিষেরবাঁশী ডেস্ক: সাম্প্রতিক সময়ে চালের বাড়তি দাম এখনো সামলে উঠতে পারছেন না মধ্য ও নিম্ন আয়ের পরিবারগুলো। এর সঙ্গে সপ্তাহ সপ্তাহ বাড়ছে অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম। চালের পর আটা, সবজি, এরপর কাঁচামরিচ, পেয়াজ সব কিছুর দাম বাড়তির দিকে। সম্প্রতি ২২ দিন ইলিশ ধরা নিষিদ্ধের প্রভাবে অন্য মাছের দামও বেড়ে গেছে। এমন পরিস্থিতিতে সাধারণের নাগালের মধ্যে নেই বিভিন্ন খাদ্যপণ্যের দাম।

এ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সরকারকে আরো কঠোর হতে আহ্বান জানিয়েছেন সাধারণ ক্রেতারা। বাজার সংশ্লিষ্টরা বলেন, সিন্ডিকেট চক্রের স্বল্প সময়ের ব্যবসায় অধিক মুনাফা লাভের মনোভাব, পরিকল্পিতভাবে দাম বাড়াতে ব্যবসায়ীদের নানা অপপ্রচার, সরকারি মজুদ নিরাপত্তাবলয়ের নিচে নেমে যাওয়া, বাজারে টিসিবির শক্তিশালী প্রভাব না থাকার ফলেই সপ্তাহ সপ্তাহ দাম বাড়ছে প্রায় পণ্যের।

এদিকে বিভিন্ন খাদ্যপণ্যের খুচরা ব্যবসায়ীরাও পাইকারি বিক্রেতাদের উপর নজরদারি ও অভিযান পরিচালনার পক্ষে মত দিয়েছেন। তারা বলেন, পাইকারিরা সব সময় সংকটের দোহাই দিয়ে দাম বাড়ায়। এ ব্যাপারে খুচরা বিক্রেতাদের করার কিছু থাকে না। আড়তে দাম বাড়লে আমাদের কাছেও দাম বাড়বে। বরং দাম বাড়লে আমাদেরই লোকসান। কারণ, দাম বাড়লে বিক্রি কম হয়।

চলতি সপ্তাহে রাজধানীর বাজারগুলোতে কাঁচামরিচের দাম বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। ২০০ টাকা কেজি দরের নিচে কোথাও কাঁচামরিচ মিলছে না। অথচ এক সপ্তাহ আগেও কাঁচামরিচের কেজি বিক্রি হয়েছে ১২০ টাকা থেকে ১৩০ টাকায়। গতকাল সোমবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দাম বাড়ার এ তথ্য পাওয়া গেছে।

জানা গেছে, ঈদের পর থেকেই কাঁচামরিচের দাম বাড়তি। ঈদের আগে কাঁচামরিচ ৬০ থেকে ৮০ টাকা কেজি দরেও বিক্রি হয়েছে। কিন্তু ঈদের পরেই হঠাৎ করে কাঁচামরিচের দাম ২০০ টাকায় ওঠে যায়। এরপর দাম কিছুটা কমলেও তা ১০০ টাকার ওপরেই থাকে।

খুচরা বিক্রেতা রবিউল জানান, একদিনের ব্যবধানেই কেজিতে ৬০ টাকা বেশি দিয়ে মরিচ কিনতে হয়েছে। দাম বেশি হওয়ার কারণে মরিচ কম এনেছি। অন্য সময় ৫ কেজির উপর মরিচ কিনি, এবার ৪ কেজির বেশি কেনার সাহস করিনি। দাম বাড়লে মানুষ একটু কম কম কিনেন।

সাধারণের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে পেঁয়াজের দাম। রাজধানীর বাজারগুলোতে গত দুই মাসের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। দুমাস আগের ২৫-৩০ টাকার পেয়াজ এখন বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকায়। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে আকার ভেদে প্রতি কেজিতে বেড়েছে ১০ থেকে ১৫ টাকা। বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, দেশি ছোট পেঁয়াজ ৫০-৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দেশি বড় পেয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬০-৬৬ টাকায়। ভারতীয় পেঁয়াজের দাম কিছুটা কম। ভারতীয় পেঁয়াজ কেজিপ্রতি ৪০-৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

প্রায় সব সবজির দামও আগের মতই বাড়তি দাম। কেজি ৫০ টাকাতেও সবজি পাওয়া যাচ্ছে না। প্রতিকেজি শিম বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা থেকে ১২০ টাকায়। ধেড়স বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে। আগের সপ্তাহের মতই প্রতিকেজি পটল বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকা এবং ঝিঙা বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৬৫ টাকা কেজি দরে।

চালের দামের অস্থিরতার মাঝে আটাতেও গুণতে হচ্ছে বাড়তি টাকা। প্যাকেটজাত আটা কেজিতে ৫-৬ টাকা দাম বেড়েছে। এ দাম বৃদ্ধির কারণ হিসেবে খুচরা বিক্রেতারা দুষছেন ডিলারদের। তারা বলছেন, সপ্তাহের শুরু থেকেই ডিলারদের কাছ থেকে বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। দুই কেজি ওজনের প্যাকেটজাত আটা বিক্রি হচ্ছে ৬৫ টাকা ধরে। যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে ৬০ টাকায়। বাজারে এসিআই, তীর, স্বাদসহ বিভিন্ন ব্রান্ডের প্যাকেটজাত আটা গত সপ্তাহের চেয়ে কেজিতে ৬ টাকা পর্যন্ত বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া তেল, ডাল, চিনি, মশলাসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় প্রায় সব কিছুই কিনতে হিমশিম খাচ্ছেন সাধারণ আয়ের মানুষ।

বিষেরবাঁশী ডেস্ক/সংবাদদাতা/হৃদয়

Categories: অর্থনীতি

Leave A Reply

Your email address will not be published.