শুক্রবার ১৫ চৈত্র, ১৪৩০ ২৯ মার্চ, ২০২৪ শুক্রবার

ডিএনডির জলাবদ্ধতা নিয়ে মন্ত্রীকে আইভীর ফোন

বিষেরবাঁশী ডেস্ক: ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-ডেমরা তথা ডিএনডি বাধের ভিতরে অল্প বৃষ্টিতেই সৃষ্ট জলাবদ্ধতা নিরসনে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য পানি সম্পদ মন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদের সঙ্গে কথা বলেছেন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী যার নির্বাচনী এলাকার ২ ও ৩ নং ওয়ার্ডে পানিতে তলিয়ে গেছে।
২৮ আগস্ট সোমবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের নগর ভবনের মেয়র কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান মেয়র আইভী।
মেয়র আইভী বলেন, ডিএনডি বাঁধের জলাবদ্ধতায় দীর্ঘদিন ধরে মানুষ দুর্ভোগে রয়েছে। তাই এ সমস্যা সমাধানের জন্যই মন্ত্রী মহোদয়ের ব্যক্তিগত মোবাইল নাম্বারে কথা হয়।
ওই সময়ে মন্ত্রী আইভীকে জানান, নতুন তিনটি পাম্প বাসানোর কাজ চলছে। তাছাড়াও খালগুলো ময়লা জমে থাকায় পাম্পের সামনে ঠিকভাবে পানি আসছে না। যার ফলে একটি অস্থায়ী (বহনকারী) পাম্প দিয়ে বিভিন্ন এলাকার ছোট বড় জায়গায় আটকে থাকা পানি নিষ্কাশন করা হবে। এতে আশা করা যাচ্ছে ঈদের সময় মানুষ দুর্ভোগ কিছুটা কমবে।

মন্ত্রীর বরাত দিয়ে আইভী আরো জানান, ডিএনডি বাধের অভ্যন্তরে জলাবদ্ধতা নিরসনে ৫৫৮ কোটি টাকার একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার যেটা বাস্তবায়ন করবে সেনাবাহিনী। নভেম্বর থেকে কাজ শুরু হবে যা শেষ হতে ২ থেকে ৩ বছর লাগবে। তবে আগামী ঈদের পর যাতে দ্রুত ডিএনডি পাম্প প্রকল্পের কাজ শুরু হয় এজন্য চেষ্টা করা হবে।

সরেজমিনে ডিএনডির বাঁধের ফতুল্লা এলাকায় দেখা গেছে, বৃষ্টিতে বিভিন্ন এলাকা বিশেষ করে ফতুুল্লার রামারবাগ, সস্তাপুর, গাবতলা, কায়েমপুর, চাঁদমারী, ইসলাম বাগ, শহীদ নগর, গাবতলী, এনায়েত নগর, তল্লা, সবুজবাগ, কুতুবপুর, পাগলা, দেলপাড়া, আলীগঞ্জ, দাপা, পিলকুনি, ভূইগড়, রঘুনাথপুর, কুতুবআইল, নয়াআটি, লামাপাড়া এলাকাতে দেখা দিয়েছে স্থায়ী জলাবদ্ধতা। জলাবদ্ধতার পানি পচে গেছে। বিবর্ণ আকার ধারণ করা ওই পচা পানি থেকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। এতে ডিএনডিবাসীর দুর্ভোগ আরেক ধাপ বেড়েছে। শিল্প-কারখানা, ডাইং, পয়নিষ্কাশনের পানি জলাবদ্ধতার সঙ্গে মিশে একাকার হয়ে গেছে। নিরুপায় হয়ে ছোট বড় সকল বয়সের মানুষ এই পানির মধ্যে দিয়ে যাতায়ত করছে। এছাড়াও কোন কোন এলাকায় চলাচলের জন্য নৌকা ব্যবহার করা হচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ইরি ধান চাষাবাদের জন্য ১৯৬৫ সালে ৮ হাজার ৩৪০ হেক্টর জমি নিয়ে তৈরি করা হয় ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-ডেমরা (ডিএনডি) বাঁধ। ৩২ দশমিক ৮ কিলোমিটার ডিএনডি বাধের ভেতর ৫৬ বর্গ কিলোমিটার এলাকায় অন্তত ২০ লাখ লোকের বসবাস। তখন ডিএনডির ভেতর সেচ প্রকল্প ছিল পাঁচ হাজার ৬৪ হেক্টর। ডিএনডি বাঁধের ভেতর কংস নদ এবং নলখালী খালের মতো ৯টি খাল ছিল। যা ডিএনডির ইরিগেশন প্রজেক্টে সেচখাল হিসেবে ব্যবহার করা হতো। এসব খালের ছিল আরও ৯টি শাখা খাল। এছাড়াও ছিল ২১০টি আউটলেট, ১০টি নিষ্কাশন খাল। এসব খালের সর্বমোট দৈর্ঘ্য ১৮৬ কিলোমিটার। আশির দশকের পর থেকে লোকজন ডিএনডি বাঁধের ভেতর জমি কিনে অপরিকল্পিতভাবে বাড়িঘর, ইটের ভাটা, ছোট-বড় শিল্প-কারখানা নির্মাণ করে। কংস নদ বিলুপ্ত হয়ে গেছে অনেক আগেই। আর খাল দখল ও ভরাট করে দোকানপাট, ঘরবাড়ি, কলকারখানাসহ বিভিন্ন স্থাপনা নির্মান করায় নিম্নাঞ্চলের রাস্তাঘাট, বাড়িঘর, দোকানপাট, স্কুল-কলেজ, মসজিদ-মাদ্রাসা, শিল্প প্রতিষ্ঠানসহ অন্যান্য স্থাপনা অল্প বৃষ্টিতে হাটু পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে।

বিষেরবাঁশী ডেস্ক/সংবাদদাতা/হৃদয়

Categories: নারায়ণগঞ্জের খবর

Leave A Reply

Your email address will not be published.